গাজার একাধিক স্কুলে ইসরাইলের হামলা, ১৮ শিশুসহ নিহত আরও ১১২ ফিলিস্তিনি

- আপডেট : ৪ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার
- / 37
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি হামলায় নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ১১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার গাজার তুহফা এলাকায় তিনটি স্কুলে ইসরাইলি হামলায় ১৮ শিশুসহ অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন।
গাজা সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয় থেকে জানানো হয়, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে শুধু দার আল-আরকাম স্কুলে হামলায় ১৮ শিশুসহ ২৯ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা স্কুলটিতে কমপক্ষে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। সূত্র জানিয়েছে, অন্য চার ব্যক্তি নিহত হয়েছেন ফাহাদ স্কুলে হামলার ঘটনায়। তুহফা এলাকায় অবস্থিত এই স্কুলটিও বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছিল।
তুহফা এলাকায় হামলার শিকার অন্য একটি স্কুলের নাম শাবান আলরাইয়েস স্কুল। তবে সেখানে কতজন লোক হতাহত হয়েছেন তাৎক্ষণিক তা জানা যায়নি। বরাবরের মতো এবারও ইসরাইলি বাহিনী দাবি করেছে, তারা গাজার সিটিতে হামাসের একটি ‘কমান্ড সেন্টারে’ হামলা চালিয়েছে। তাছাড়া আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত এসব স্কুলের সঙ্গে তাদের হামলার সম্পর্ক কী, সেটাও স্পষ্ট করেনি তারা।
জাতিসংঘ বলছে, গাজার উপত্যকার অন্তত দুই–তৃতীয়াংশ জায়গায় এখন আর কোনো ‘নিরাপদ’ অঞ্চল নেই। রয়টার্সের খবরে বলা হয়, নতুন করে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ ঘোষণা করা রাফাহ শহরের দিকে ইসরাইলি বাহিনী অগ্রসর হচ্ছে। তারা এই শহর দখল করতে চায়। প্রাণভয়ে ওই এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানকার বাসিন্দা উম্ম আয়েদ বারদা বলেন, ‘আমি মরতে চাই। তাদের আমাদের মেরে ফেলতে এবং এই জীবন থেকে মুক্তি দিতে দিন। আমরা এমনিতে বেঁচে নেই। আমরা মৃত।’
রাফাহর পাশের শহর খান ইউনিসে আশ্রয় নেওয়া এক ফিলিস্তিনি একটি চ্যাট অ্যাপের মাধ্যমে রয়টার্সকে বলেন, ‘রাফাহ শেষ। সেখানকার সবকিছু নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।’
গাজার জরুরি উদ্ধারকারী সংস্থার এক মুখপাত্র সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে বলেছেন, ‘ইসরাইলের এই গণহত্যা বন্ধে এখনই বিশ্বকে এগিয়ে আসতে হবে। যেন তারা আর কোনো নারী, শিশু এবং বৃদ্ধকে হত্যা করতে না পারে। তিনি বলেন, এটি শুধুমাত্রই একটি গণহত্যা নয়। এটি ইসরাইলের উন্মত্ততা। তারা আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা নারী ও শিশুদের হত্যার জন্য পাগল।‘ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলের ‘গণহত্যামূলক আগ্রাসনে’ অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ হাজার ৫২৩ জনে পৌঁছেছে। এই আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরাইল। তবুও থেমে নেই তাদের বর্বরতা।