১৬ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্রবণশক্তি হারানোর ঝুঁকিতে ১৩৫ কোটি মানুষ

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২২, শুক্রবার
  • / 15

পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ রাতে ঘুমাতে যাওয়া থেকে শুরু করে সকালে ক্লাসে কিংবা অফিসে যাওয়ার পথেও অনেকের কানে বাজতে থাকে পছন্দের গান। রাস্তার কোলাহল, ট্রেন-বাসের হর্ন-এর আওয়াজ এড়াতে নিয়মিত তাঁরা হেডফোনের ব্যবহার করেন! কাজের ফাঁকে, মন খারাপ কাটাতে কিংবা একা সময়ে এই গানই যেন সবচেয়ে ভালো সঙ্গী হয়ে দাঁড়ায়। গান শোনায় কোন সমস্যা নেই, নেই কোন বাধাও। তবে সমস্যাটা অন্য জায়গায়। সেটা হল গান শোনার  মাধ্যম।

 

আরও পড়ুন: Closed Pak airspace বন্ধ পাক আকাশসীমা, বিপুল ক্ষতির মুখে এয়ার ইন্ডিয়া।

বর্তমান সময়ে সাধারণত হেডফোন কিংবা ইয়ারফোনের সাহায্যেই গান শুনি আমরা । অথচ এই যন্ত্রটি  ব্যবহারের ফলে প্রতিনিয়ত আমাদের শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সেটা কি আমরা জানি? ইয়ারফোন বা হেডফোনে অতিরিক্ত শব্দে গান শোনা বর্তমান সময়ের তরুণদের এক ধরনের নিত্যদিনের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।  এতে মন যতই ভালো হোক না কেন, মারাত্মক ক্ষতি হয় কানের। সবচেয়ে ভয়ানক ব্যাপার হলো, কানের ক্ষতি হলে প্রথমেই তা ধরা যায়না। সেই সমস্যা যতক্ষণ পর্যন্ত না চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়। দীর্ঘ সময় হেডফোন ব্যবহারের ফলে হতে পারে মারাত্মক সমস্যা এমনটাই জানাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(হু )।

আরও পড়ুন: টেট মামলায় মতপার্থক্য ডিভিশন বেঞ্চের,  শুনানি বিচারপতি ভট্টাচার্যের এজলাসে

 

আরও পড়ুন: উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি নিয়ে মামলা দাখিল কলকাতা হাইকোর্টে, শুনানি ১২ জুন!

স্মার্টফোনসহ নানান মোবাইল ডিভাইস ব্যবহারের কারণে বিশ্বব্যাপী ১০০ কোটিরও বেশি তরুণ -তরুণী শ্রবণশক্তি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। মূলত হেডফোনে মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার তো আছেই, তার সঙ্গে  মিউজিক কনসার্টগুলোর উচ্চআওয়াজ উপস্থিত শ্রোতাদের কানের জন্য বিপদ ডেকে আনছে।  সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বাধীন পরিচালিত একটি গবেষণার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

 

এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বেব্যাপী ১২-৩৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ২৪ শতাংশের বেশি ইয়ারফোন ব্যবহারের ফলে শ্রবণশক্তি সমস্যায় ভুগছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবমতে, বিশ্বজুড়ে বর্তমানে ৪৩ কোটি মানুষ ভালো শুনতে পান না। উচ্চ শব্দ প্রতিরোধে কোনো পদক্ষেপ না নিলে এ সংখ্যাটি অচিরেই এই সংখ্যাটি দ্বিগুণ হতে পারে।  এছাড়াও ৪৮ শতাংশ কনসার্ট বা নাইট ক্লাবের মতো বিনোদন স্থানগুলিতে শব্দের মাত্রা সর্বদায় অতিরিক্ত থাকায় এর প্রভাব পরে শ্রবণ ক্ষমতায়।

 

এই ফলাফলগুলোকে সামনে রেখে মনে করা হচ্ছে এখনই সাবধান না হলে আগামী দিনে বিশ্বব্যাপী ১৩৫ কোটি মানুষ শ্রবনশক্তি হারাতে পারেন। যার মধ্যে তরুণ-তরুণীদের সংখ্যা বেশি।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু)এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, পোর্টেবল অডিও ডিভাইসে ১০০ ডেসিবেলে  ১৫ মিনিট ধরে কোনো কিছু শোনার মানে হল কানের মারাত্মক ক্ষতি করা। একটি কারখানায় যেমন প্রচন্ড শব্দ হয় এবং তার জন্য কানের যতটা ক্ষতি হয়, হেডফোন ১০০ ডেসিবেলে বাজালে তাতে তার থেকেও ক্ষতি হয়। কারখানায়  আটঘন্টা ধরে সাধারণত ৮০ ডেসিবেলে আওয়াজ হয়। একজন শ্রোতা হেডফোনে সাধারণত ৭৫ থেকে ১০৫ ডেসিবল মাত্রায় অডিও শোনেন- যা হু-এর মতে ‘উদ্বেগের বিষয়।’

 

গবেষক লরেন ডিলার্ড বলেন, ‘উচ্চশব্দের ফলে কানের সেন্সরি কোষ অকেজো হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এছাড়াও সাময়িক শ্রবণশক্তি হারানোসহ টিনিটাস (কানে ঝিঁঝিঁ পোকার বা স্টিমারের মতো আওয়াজ শোনা) এর মতো সমস্যা হতে পারে।’হেডফোন থেকে মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি কমানোর সর্বোত্তম উপায় হলো ভলিউম কমিয়ে দেওয়া এবং অল্প সময়ের জন্য শোনা। তবে দুর্ভাগ্যবশত, তরুণরা মূলত খুব উচ্চ শব্দে গান শুনতে স্বচ্ছন্দ্য বোধ করেন’।

Copyright © 2025 Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

শ্রবণশক্তি হারানোর ঝুঁকিতে ১৩৫ কোটি মানুষ

আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২২, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ রাতে ঘুমাতে যাওয়া থেকে শুরু করে সকালে ক্লাসে কিংবা অফিসে যাওয়ার পথেও অনেকের কানে বাজতে থাকে পছন্দের গান। রাস্তার কোলাহল, ট্রেন-বাসের হর্ন-এর আওয়াজ এড়াতে নিয়মিত তাঁরা হেডফোনের ব্যবহার করেন! কাজের ফাঁকে, মন খারাপ কাটাতে কিংবা একা সময়ে এই গানই যেন সবচেয়ে ভালো সঙ্গী হয়ে দাঁড়ায়। গান শোনায় কোন সমস্যা নেই, নেই কোন বাধাও। তবে সমস্যাটা অন্য জায়গায়। সেটা হল গান শোনার  মাধ্যম।

 

আরও পড়ুন: Closed Pak airspace বন্ধ পাক আকাশসীমা, বিপুল ক্ষতির মুখে এয়ার ইন্ডিয়া।

বর্তমান সময়ে সাধারণত হেডফোন কিংবা ইয়ারফোনের সাহায্যেই গান শুনি আমরা । অথচ এই যন্ত্রটি  ব্যবহারের ফলে প্রতিনিয়ত আমাদের শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সেটা কি আমরা জানি? ইয়ারফোন বা হেডফোনে অতিরিক্ত শব্দে গান শোনা বর্তমান সময়ের তরুণদের এক ধরনের নিত্যদিনের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।  এতে মন যতই ভালো হোক না কেন, মারাত্মক ক্ষতি হয় কানের। সবচেয়ে ভয়ানক ব্যাপার হলো, কানের ক্ষতি হলে প্রথমেই তা ধরা যায়না। সেই সমস্যা যতক্ষণ পর্যন্ত না চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়। দীর্ঘ সময় হেডফোন ব্যবহারের ফলে হতে পারে মারাত্মক সমস্যা এমনটাই জানাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(হু )।

আরও পড়ুন: টেট মামলায় মতপার্থক্য ডিভিশন বেঞ্চের,  শুনানি বিচারপতি ভট্টাচার্যের এজলাসে

 

আরও পড়ুন: উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি নিয়ে মামলা দাখিল কলকাতা হাইকোর্টে, শুনানি ১২ জুন!

স্মার্টফোনসহ নানান মোবাইল ডিভাইস ব্যবহারের কারণে বিশ্বব্যাপী ১০০ কোটিরও বেশি তরুণ -তরুণী শ্রবণশক্তি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। মূলত হেডফোনে মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার তো আছেই, তার সঙ্গে  মিউজিক কনসার্টগুলোর উচ্চআওয়াজ উপস্থিত শ্রোতাদের কানের জন্য বিপদ ডেকে আনছে।  সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বাধীন পরিচালিত একটি গবেষণার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

 

এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বেব্যাপী ১২-৩৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ২৪ শতাংশের বেশি ইয়ারফোন ব্যবহারের ফলে শ্রবণশক্তি সমস্যায় ভুগছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবমতে, বিশ্বজুড়ে বর্তমানে ৪৩ কোটি মানুষ ভালো শুনতে পান না। উচ্চ শব্দ প্রতিরোধে কোনো পদক্ষেপ না নিলে এ সংখ্যাটি অচিরেই এই সংখ্যাটি দ্বিগুণ হতে পারে।  এছাড়াও ৪৮ শতাংশ কনসার্ট বা নাইট ক্লাবের মতো বিনোদন স্থানগুলিতে শব্দের মাত্রা সর্বদায় অতিরিক্ত থাকায় এর প্রভাব পরে শ্রবণ ক্ষমতায়।

 

এই ফলাফলগুলোকে সামনে রেখে মনে করা হচ্ছে এখনই সাবধান না হলে আগামী দিনে বিশ্বব্যাপী ১৩৫ কোটি মানুষ শ্রবনশক্তি হারাতে পারেন। যার মধ্যে তরুণ-তরুণীদের সংখ্যা বেশি।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু)এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, পোর্টেবল অডিও ডিভাইসে ১০০ ডেসিবেলে  ১৫ মিনিট ধরে কোনো কিছু শোনার মানে হল কানের মারাত্মক ক্ষতি করা। একটি কারখানায় যেমন প্রচন্ড শব্দ হয় এবং তার জন্য কানের যতটা ক্ষতি হয়, হেডফোন ১০০ ডেসিবেলে বাজালে তাতে তার থেকেও ক্ষতি হয়। কারখানায়  আটঘন্টা ধরে সাধারণত ৮০ ডেসিবেলে আওয়াজ হয়। একজন শ্রোতা হেডফোনে সাধারণত ৭৫ থেকে ১০৫ ডেসিবল মাত্রায় অডিও শোনেন- যা হু-এর মতে ‘উদ্বেগের বিষয়।’

 

গবেষক লরেন ডিলার্ড বলেন, ‘উচ্চশব্দের ফলে কানের সেন্সরি কোষ অকেজো হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এছাড়াও সাময়িক শ্রবণশক্তি হারানোসহ টিনিটাস (কানে ঝিঁঝিঁ পোকার বা স্টিমারের মতো আওয়াজ শোনা) এর মতো সমস্যা হতে পারে।’হেডফোন থেকে মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি কমানোর সর্বোত্তম উপায় হলো ভলিউম কমিয়ে দেওয়া এবং অল্প সময়ের জন্য শোনা। তবে দুর্ভাগ্যবশত, তরুণরা মূলত খুব উচ্চ শব্দে গান শুনতে স্বচ্ছন্দ্য বোধ করেন’।