১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২০২১ সালে বাস্তুচ্যুত ৩ কোটি ৬৫ লক্ষ শিশু

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৮ জুন ২০২২, শনিবার
  • / 12

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ সহিংসতা ও অন্যান্য সংকটে ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী ৩ কোটি ৬৫ লক্ষ শিশু বাস্তুচ্যুত হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানায়, ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এক বছরে এত বেশি শিশুর বাস্তুচ্যুতি আগে ঘটেনি। এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতি ছ’টি পদক্ষেপ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। ২০ জুন আন্তর্জাতিক শরণার্থী দিবসকে সামনে রেখে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে ইউনিসেফ জানায়, ২০২১ সালে ১ কোটি ৩৭ লক্ষ শিশুকে উদ্বাস্তু হতে হয়েছে কিংবা অন্য দেশে আশ্রয় নিতে হয়েছে। অন্যদিকে, ২ কোটি ২৮ লক্ষ শিশু অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

 

এক বছরের এই হিসাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে বাস্তুচ্যুত শিশুদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বিপুলসংখ্যক এই শিশুদের বাস্তুচ্যুতিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে বেশ কয়েকটি দেশের যুদ্ধ ও সহিংসতা। দেশগুলির মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, রিপাবলিক অব কঙ্গো ও ইয়েমেন। জলবায়ু পরিবর্তনের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবের কারণেও অনেক দেশে শিশুদের বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে। ইউনিসেফ বলছে, বিশ্বব্যাপী প্রতিদিন বাড়ছে শিশু বাস্তুচ্যুতির ঘটনা। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, ‘সংঘাত ও সংকটের কারণে শিশু বাস্তুচ্যুতির ঘটনা প্রমাণিত। একে অগ্রাহ্য করার সুযোগ নেই।

 

আমাদের দায়িত্ব বেড়ে গেছে। আশা করব, বিভিন্ন দেশের সরকার শিশু বাস্তুচ্যুতির ঘটনা প্রতিরোধে কাজ করবে। শিশুরা যেন শিক্ষা ও সুরক্ষা-সহ মৌলিক সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় এবং তাদের কল্যাণ ও বিকাশের সুযোগ যেন নিশ্চিত হয়, সে-বিষয়েও তাদের সজাগ থাকতে হবে।’ ইউনিসেফ জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত ২০ লক্ষেরও বেশি শিশুকে শরণার্থী হতে হয়েছে। চলতি বছরে আরও প্রায় ৩০ লক্ষ শিশু অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির শিকার হয়েছে।

 

আফ্রিকার দেশগুলোতে তীব্র খরা এবং বাংলাদেশ, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকায় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে অনেক শিশুকে তাদের পরিবারের সঙ্গে ঘর ছাড়তে হয়েছে। কেবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ২০২১ সালে নতুন করে বাস্তুচু্যত হতে হয়েছে ৭৩ লক্ষ শিশুকে। রাষ্ট্রসংঘের তথ্য বলছে, গত এক দশকে শরণার্থীর সংখ্যা আগের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। এর অর্ধেকই শিশু। বাস্তুচ্যুত এই শিশুদের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি বসবাস করছে সাব-সাহারান আফ্রিকা এলাকায়। এই অঞ্চলে বাস্তুচ্যুত শিশুর সংখ্যা ৩৯ লক্ষ, যা মোট বাস্তুচু্যত শিশুর ৩৬ শতাংশ। এ ছাড়া এশিয়ার দেশগুলোতে বাস্তুচু্যত শিশুর সংখ্যা ২৬ লক্ষ, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় রয়েছে আরও ১৪ লক্ষ বাস্তুচ্যুত শিশু। এ পরিস্থিতিতে সদস্য দেশগুলোর প্রতি শিশুদের অধিকার রক্ষায় দেওয়া প্রতিশ্রুতি সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

২০২১ সালে বাস্তুচ্যুত ৩ কোটি ৬৫ লক্ষ শিশু

আপডেট : ১৮ জুন ২০২২, শনিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ সহিংসতা ও অন্যান্য সংকটে ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী ৩ কোটি ৬৫ লক্ষ শিশু বাস্তুচ্যুত হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানায়, ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এক বছরে এত বেশি শিশুর বাস্তুচ্যুতি আগে ঘটেনি। এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতি ছ’টি পদক্ষেপ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। ২০ জুন আন্তর্জাতিক শরণার্থী দিবসকে সামনে রেখে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে ইউনিসেফ জানায়, ২০২১ সালে ১ কোটি ৩৭ লক্ষ শিশুকে উদ্বাস্তু হতে হয়েছে কিংবা অন্য দেশে আশ্রয় নিতে হয়েছে। অন্যদিকে, ২ কোটি ২৮ লক্ষ শিশু অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

 

এক বছরের এই হিসাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে বাস্তুচ্যুত শিশুদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বিপুলসংখ্যক এই শিশুদের বাস্তুচ্যুতিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে বেশ কয়েকটি দেশের যুদ্ধ ও সহিংসতা। দেশগুলির মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, রিপাবলিক অব কঙ্গো ও ইয়েমেন। জলবায়ু পরিবর্তনের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবের কারণেও অনেক দেশে শিশুদের বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে। ইউনিসেফ বলছে, বিশ্বব্যাপী প্রতিদিন বাড়ছে শিশু বাস্তুচ্যুতির ঘটনা। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, ‘সংঘাত ও সংকটের কারণে শিশু বাস্তুচ্যুতির ঘটনা প্রমাণিত। একে অগ্রাহ্য করার সুযোগ নেই।

 

আমাদের দায়িত্ব বেড়ে গেছে। আশা করব, বিভিন্ন দেশের সরকার শিশু বাস্তুচ্যুতির ঘটনা প্রতিরোধে কাজ করবে। শিশুরা যেন শিক্ষা ও সুরক্ষা-সহ মৌলিক সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় এবং তাদের কল্যাণ ও বিকাশের সুযোগ যেন নিশ্চিত হয়, সে-বিষয়েও তাদের সজাগ থাকতে হবে।’ ইউনিসেফ জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত ২০ লক্ষেরও বেশি শিশুকে শরণার্থী হতে হয়েছে। চলতি বছরে আরও প্রায় ৩০ লক্ষ শিশু অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির শিকার হয়েছে।

 

আফ্রিকার দেশগুলোতে তীব্র খরা এবং বাংলাদেশ, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকায় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে অনেক শিশুকে তাদের পরিবারের সঙ্গে ঘর ছাড়তে হয়েছে। কেবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ২০২১ সালে নতুন করে বাস্তুচু্যত হতে হয়েছে ৭৩ লক্ষ শিশুকে। রাষ্ট্রসংঘের তথ্য বলছে, গত এক দশকে শরণার্থীর সংখ্যা আগের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। এর অর্ধেকই শিশু। বাস্তুচ্যুত এই শিশুদের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি বসবাস করছে সাব-সাহারান আফ্রিকা এলাকায়। এই অঞ্চলে বাস্তুচ্যুত শিশুর সংখ্যা ৩৯ লক্ষ, যা মোট বাস্তুচু্যত শিশুর ৩৬ শতাংশ। এ ছাড়া এশিয়ার দেশগুলোতে বাস্তুচু্যত শিশুর সংখ্যা ২৬ লক্ষ, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় রয়েছে আরও ১৪ লক্ষ বাস্তুচ্যুত শিশু। এ পরিস্থিতিতে সদস্য দেশগুলোর প্রতি শিশুদের অধিকার রক্ষায় দেওয়া প্রতিশ্রুতি সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।