ভূমিকম্পের পরও অক্ষত তুর্কি বিল্ডার দুরসুনের ৫০টি ভবন
ইমামা খাতুন
- আপডেট :
১৪ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবার
- / 3
বিশেষ প্রতিবেদন: ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্কের ১০ টি শহরের ৯ লক্ষেরও বেশি ভবন ধ্বংস হয়েছে। জোরালো কাঁপুনিতে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়া ভবনগুলি দেশের স্বনামধন্য ও ধনী বিল্ডারদের হাতেই তৈরি হয়েছিল। তুর্কি সরকারের ধারণা, ভবন নির্মাণের সময় সঠিক মাণদণ্ড মেনে চলা হয়নি। তাই ভূমিকম্পে সহজেই লক্ষ লক্ষ ঘর ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু তুরস্কে এমন এক বিল্ডার রয়েছেন যাঁর তৈরি ভবনগুলি ভেঙে পড়া তো অনেক দুরের কথা, সেগুলির কোনও ক্ষতি পর্যন্ত হয়নি।
আয়দিন দুরসুনের তৈরি করা ৫০টিরও বেশি ভবন ভূমিকম্পের আগে ও পরে একই অবস্থায় রয়েছে। অর্থাৎ ভবনগুলিকে টলাতে পারেনি শক্তিশালী কাঁপুনি। দুরসুনের কথা জানাজানি হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। নেটিজেনরা তাঁর ইমানদারির প্রশংসায় ভাসছেন।
অনেকেই তাঁকে বিশেষ সহায়তা পাঠাচ্ছেন। এক সাক্ষাৎকারে দুরসুন সর্বপ্রথম আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন। বলেন, আল্লাহর জন্যই তাঁর তৈরি ভবনগুলি অক্ষত রয়েছে। তিনি আরও জানান, অন্যান্য বিল্ডারদের মতো তিনি লোভের ফাঁদে পা দেননি। রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখেননি দুরসুন। তিনি বলেন, হালাল উপায়ে উপার্জন করাটাই তাঁর কাছে সবচেয়ে প্রিয় ছিল। তাই ইসলামি বিধান মেনেই তিনি বিল্ডিংয়ের কাজ শুরু করেন। এক্ষেত্রে কোনও চটজলদি সিদ্ধান্ত নেননি দুরসুন।
জানান, শ্রমিকদের ওপর ভরসা না থাকায় প্রতিটি বিল্ডিংয়ের কাজ নিজে দাঁড়িয়ে থেকে করিয়েছেন। ফলে প্রতিটি ভবনই হয়েছে দারুন মজবুত। আয়দিন দুরসুন এটাও জানতেন যে, তুরস্ক বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। তাই প্রথম থেকেই ভবন নির্মাণের প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যেকোনও ভূমিকম্প প্রতিরোধের কথা তাঁর মাথায় থাকত। দুরসুনের এক প্রতিবেশীর কথায়, ‘হারাম অর্থ উপার্জনকারীরা আজ সাজা পাচ্ছে, আর যিনি হালাল উপায়ে অর্থ উপার্জন করেছেন তিনি আজ আমাদের নায়ক বনে গিয়েছেন।’
তুরস্কের এই ঘটনা থেকে যেকোনও মুসলিমের যে শিক্ষা নেওয়া উচিত তা হল, হালাল পথে উপার্জন করা একটি টাকাও লক্ষ লক্ষ হারাম টাকার চেয়ে ঢের ভালো ও লাভজনক। উল্লেখ্য, হালাল উপার্জন মানে বৈধ উপার্জন। আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশিত-প্রদর্শিত ও অনুমোদিত পন্থায় যে অর্থ উপার্জন করা হয়, সেটাই হালাল।