পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে উপত্যকাটি দখলে নেওয়ার যে পরিকল্পনা ফাঁদছেন, তা বড় সড় প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। তার ওই বিতর্কিত পরিকল্পনা ঠেকিয়ে দিতে এবারে একাট্টা হয়েছে আরব ও মুসলিম বিশ্বের ৫৭টি দেশ। এরই মাঝে ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরোধিতা জানিয়ে পালটা একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে তারা।
অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন-ওআইসির উদ্যোগে শুক্রবার সউদি আরবের জেদ্দায় জরুরি এক বৈঠকে মিলিত হন ৫৭ মুসলিম দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। ওই বৈঠকেই সর্বসম্মতভাবে গাজা পুনর্গঠনে একটি পরিকল্পনা গৃহীত হয়। একই সাথে গাজাবাসীকে অন্যত্র সরানোর যেকোনও পদক্ষেপের জোরালো বিরোধিতা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
ওআইসির সেক্রেটারি জেনারেল হুসেইন ইব্রাহিম জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনবাসী নিজ ভূমিতেই অবস্থান করবে, কোনওভাবেই তাদের সরানো যাবে না, এ ব্যাপারে ওআইসি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। গৃহীত পরিকল্পনায় সমন্বিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোর ভিত্তিতে বাস্তবসম্মতভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে তুলে ধরা হয়েছে বলা জানান তিনি। এ ব্যাপারে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ওআইসি।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মূলত গাজা পুনর্গঠন ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা বিষয়ে সিরিয়ার প্রস্তাবিত একটি পরিকল্পনার ভিত্তিতে ওআইসির পরিকল্পনাটি সাজানো হয়েছে। এর আগে ৪ মার্চ কায়রোতে আরব লিগের সম্মেলনেও সিরিয়ার ওই প্রস্তাবটি গৃহীত হয়।
সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাতি বলেন, ওআইসির ৫৭টি দেশ গাজা পুনর্গঠন ও ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে একটি পরিকল্পনার ব্যাপারে একমত হয়েছে, এটি খুবই ইতিবাচক একটি পদক্ষেপ। সিরিয়ার প্রস্তাবিত পরিকল্পনাটিই শুরুতে আরব-ইসলামিক পরিকল্পনায় রূপান্তরিত হয়েছে। পরের পদক্ষেপ হল এটিকে আন্তর্জাতিক পরিকল্পনায় রূপ দেওয়া।
আবদেলাতি আরও বলেন, গাজা ও ফিলিস্তিনের একটি ক্রান্তিকাল চলছে। এই বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা ঠেকাতে মুসলিম বিশ্বের যতোটা সম্ভব একজোট হওয়া জরুরি। ওআইসির পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, যুদ্ধ পরবর্তী গাজা পুনর্গঠনকালেও উপত্যকার বাসিন্দারা সেখানেই অবস্থান করবেন। যুদ্ধের পর একটি ন্যাশনাল প্যালেস্টিনিয়ান কমিটি ছয় মাসের জন্য গাজার শাসনভার গ্রহণ করবে। এছাড়া গাজার নিরাপত্তা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের কথাও বলা হয়েছে।তবে পরিকল্পনায় হামাসের বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি। সশস্ত্রগোষ্ঠীকেগুলোর সাথে রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের কথা বলা হয়েছে।