ডাক্তারদের খারাপ লেখা ও বানান ভুলে দেশে বছরে ৭০০০ মৃত্যু!

- আপডেট : ৭ নভেম্বর ২০২২, সোমবার
- / 7
পুবের কলম প্রতিবেদকঃ ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন নিয়ে ওষুধের দোকানে গেলে অনেক সময় দোকানদার চশমা পরিবর্তন করে ওষুধের নাম সঠিকভাবে পড়ার চেষ্টা করেন। এমনকি, অনেকে মিলে নাম উদ্ধারের চেষ্টা করেন। এমনও দেখা যায়, চিকিৎসকের লেখা ওষুধটি বুঝতে না পেরে অনুমানের ভিত্তিতে দোকানদার ওষুধ দিয়ে দেন। এমন ঘটনা হাসপাতালের মুমূর্ষু রোগীর ক্ষেত্রেও ঘটে থাকে।
গবেষণা বলছে, প্রতি বছর শুধু ভারতেই ডাক্তারের খারাপ হাতের লেখার জন্য ভুল ওষুধ খেয়ে কমপক্ষে ৭০০০ রোগী মারা যান। ব্রিটেনে একই কারণে বছরে ৩০ হাজার রোগীর মৃত্যু ঘটে। আমেরিকায় সেই সংখ্যাটা বছরে প্রায় ১ লক্ষ। পরিস্থিতি বিশ্বজুড়ে যথেষ্ট উদ্বেগের।
ন্যাশনাল মেডিক্যাল জার্নাল অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুসারে, ভারতে ৭০০০ রোগী ডাক্তারের খারাপ হাতের লেখা ও বানান ভুলের জন্য মারা যান। এই নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হলেও এখনও পর্যন্ত কোনওভাবেই এই অভিযোগের সুরাহা হয়নি।
এমনও জানা গেছে, কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট’রা বেশিরভাগ ডাক্তারের খারাপ হাতের লেখা ও বানান ভুলের জন্য প্রেসক্রিপশন ফিরিয়ে দেন। অনেকে আবার অনুমানের উপর নির্ভর করে ওষুধ দেন। সেখানেই বিপত্তি ঘটে। আরও ভয়ঙ্কর অভিযোগ, এই ধরনের সমস্যা হাসপাতালের আইসিইউতেও ঘটে। সেখানে দায় চাপানো হয় নার্সদের উপর।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন ডাক্তার অতিরিক্ত রোগী দেখতে গিয়ে তাড়াহুড়োতে অনেক সময় এই ধরনের প্রেসক্রিপশন করে ফেলে। গবেষণা বলছে, ১০০ প্রেসক্রিপশনের মধ্যে চল্লিশটি পুরুষ এবং ২০টি মহিলা চিকিৎসকের হাতের লেখা খারাপ। যা পরে সেই চিকিৎসকরা নিজেই পড়তে পারেন না। অর্থাৎ মাত্র ৪০ শতাংশ চিকিৎসক সঠিকভাবে প্রেসক্রিপশন লেখেন।
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কিছু বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিক কম্পিউটারাইজড প্রেসক্রিপশন দিচ্ছে। কিন্তু ৯০ শতাংশ ডাক্তার এখনও হাতেই প্রেসক্রিপশন লেখেন।
রোগীদের জীবনের ঝুঁকি থাকলেও এখনও সচেতন নয় চিকিৎসক মহল। খারাপ হাতের লেখা ও বানান ভুলের জন্য কী সরকার কোনও পদক্ষেপ নিতে পারে না? সেদিকে তাকিয়ে ভুক্তভোগী রোগীরা।