২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বুলডোজার, উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে হঠাৎ বাঙালি মুসলিমদের প্রতি ভিন্নসুর হিমন্তর

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৪, রবিবার
  • / 6

গুয়াহাটি, ২৪ মার্চ: বাঙালি মুসলিমদের ‘মিত্র’ আখ্যা দিয়েছেন। সিএএ, এনআরসি’র নাম করে এই বাঙালি মুসলিমদের ‘অনুপ্রবেশকারী’, ‘বহিরাগত’ তকমা দিয়ে রাজ্য থেকে বিতাড়ন করার হুমকি দিয়ে গেরুয়া শিবিরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। যদিও এই বাঙালি মুসলিমদের বেশিরভাগই ৮০-৯০ বছর বা তারও আগে থেকে বাংলাদেশ থেকে অসমে চলে এসেছিলেন। তারপরও তাদের বাড়িতে, দোকানে বুলডোজার চলেছে। সরকারি জমি ‘দখল’ করে রখার অভিযোগে তাদের উৎখাত করা হয়ছে। এমনকী মিত্রদের ভোটের তাঁর প্রয়োজন নেই বলে জোরালো গলায় দাবি করেছিলেন। লোকসভা ভোটের মুখে সেই বাঙালি মুসলিমদের প্রতিই এবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার মুখে একটু ‘অন্য সুর’। অসমের মুখ্যমন্ত্রী এই বাঙালি মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলছেন, রাজ্যে থাকার কথাও বলছেন। তিনি বলেছেন, বাঙালি মুসলিমরা যদি রাজ্যে ‘আদিবাসী’ মর্যাদা নিয়ে থাকতে চায় তাহলে তাঁর সরকারের কোনও আপত্তি নেই।

 

যদিও এজন্য কিছু শর্তও চাপিয়েছেন তিনি। তাহলেও অনেকে বলছেন, যে বাঙালি মুসলিমদের প্রতি এতদিন বিষদগার করতেন হিমন্ত, কথায় কথায় বিতাড়নের হুমকি দিতেন, হটাৎ করে শর্তসাপেক্ষে তাঁদের অসমে থাকার কথা কেন বলছেন হিন্দুত্বের এই ‘পোস্টার বয়’ (হিমন্ত)? অনেকেই বলছেন, এনআরসি করে ল্যাজেগোবরে হতে হয়েছে অসমের গেরুয়া সরকারকে। তারপর সিএএ নিয়েও নতুন করে আন্দোলন দানা বাঁধতে শুরু করেছে অসমে।

 

বাংলাদেশি মুসলিমদের সম্পর্কে ঠিক কি বলেছেন হিমন্ত? কি কি শর্ত চাপিয়েছেন তিনি? হিমন্ত বলেছেন, ‘অসমিয়া সমাজের কিছু সাংস্কৃতিক নিয়ম এবং ঐতিহ্য রয়েছে। পরম্পরা রয়েছে। এখন মিত্রদের যদি অসমের অধিবাসী হতে হয় তবে তাদের এইসব মেনে চলতে হবে।’ হিমন্তর এই মন্তব্য শুনে অনেকেই অবাক হয়েছেন। ক’দিন আগেও যে হিমন্ত দাবি করেছিলেন, এনআরসি’তে যাদের নাম ওঠেনি সেই হিন্দুরাই সিএএ-তে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করবে। এর বাইরে কেউ আবেদন করলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীত্ব ছেড়ে দেবেন। সেই হিমন্তই কিনা এখন বাঙালি মুসলিমদের রাজ্যে থাকার ব্যাপারে সুর নরম করছেন? হিমন্তর দেওয়া শর্তগুলো ঠিক কি কি? হিমন্ত জানান, কোনও বাঙালি মুসলিম পরিবারে যদি দুইয়ের বেশি সন্তান থাকে, তবে তারা অসমের বাসিন্দা হতে পারবে না। এছাড়াও, বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ করা যাবে না। সেসব বন্ধ করতে হবে।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বুলডোজার, উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে হঠাৎ বাঙালি মুসলিমদের প্রতি ভিন্নসুর হিমন্তর

আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৪, রবিবার

গুয়াহাটি, ২৪ মার্চ: বাঙালি মুসলিমদের ‘মিত্র’ আখ্যা দিয়েছেন। সিএএ, এনআরসি’র নাম করে এই বাঙালি মুসলিমদের ‘অনুপ্রবেশকারী’, ‘বহিরাগত’ তকমা দিয়ে রাজ্য থেকে বিতাড়ন করার হুমকি দিয়ে গেরুয়া শিবিরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। যদিও এই বাঙালি মুসলিমদের বেশিরভাগই ৮০-৯০ বছর বা তারও আগে থেকে বাংলাদেশ থেকে অসমে চলে এসেছিলেন। তারপরও তাদের বাড়িতে, দোকানে বুলডোজার চলেছে। সরকারি জমি ‘দখল’ করে রখার অভিযোগে তাদের উৎখাত করা হয়ছে। এমনকী মিত্রদের ভোটের তাঁর প্রয়োজন নেই বলে জোরালো গলায় দাবি করেছিলেন। লোকসভা ভোটের মুখে সেই বাঙালি মুসলিমদের প্রতিই এবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার মুখে একটু ‘অন্য সুর’। অসমের মুখ্যমন্ত্রী এই বাঙালি মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলছেন, রাজ্যে থাকার কথাও বলছেন। তিনি বলেছেন, বাঙালি মুসলিমরা যদি রাজ্যে ‘আদিবাসী’ মর্যাদা নিয়ে থাকতে চায় তাহলে তাঁর সরকারের কোনও আপত্তি নেই।

 

যদিও এজন্য কিছু শর্তও চাপিয়েছেন তিনি। তাহলেও অনেকে বলছেন, যে বাঙালি মুসলিমদের প্রতি এতদিন বিষদগার করতেন হিমন্ত, কথায় কথায় বিতাড়নের হুমকি দিতেন, হটাৎ করে শর্তসাপেক্ষে তাঁদের অসমে থাকার কথা কেন বলছেন হিন্দুত্বের এই ‘পোস্টার বয়’ (হিমন্ত)? অনেকেই বলছেন, এনআরসি করে ল্যাজেগোবরে হতে হয়েছে অসমের গেরুয়া সরকারকে। তারপর সিএএ নিয়েও নতুন করে আন্দোলন দানা বাঁধতে শুরু করেছে অসমে।

 

বাংলাদেশি মুসলিমদের সম্পর্কে ঠিক কি বলেছেন হিমন্ত? কি কি শর্ত চাপিয়েছেন তিনি? হিমন্ত বলেছেন, ‘অসমিয়া সমাজের কিছু সাংস্কৃতিক নিয়ম এবং ঐতিহ্য রয়েছে। পরম্পরা রয়েছে। এখন মিত্রদের যদি অসমের অধিবাসী হতে হয় তবে তাদের এইসব মেনে চলতে হবে।’ হিমন্তর এই মন্তব্য শুনে অনেকেই অবাক হয়েছেন। ক’দিন আগেও যে হিমন্ত দাবি করেছিলেন, এনআরসি’তে যাদের নাম ওঠেনি সেই হিন্দুরাই সিএএ-তে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করবে। এর বাইরে কেউ আবেদন করলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীত্ব ছেড়ে দেবেন। সেই হিমন্তই কিনা এখন বাঙালি মুসলিমদের রাজ্যে থাকার ব্যাপারে সুর নরম করছেন? হিমন্তর দেওয়া শর্তগুলো ঠিক কি কি? হিমন্ত জানান, কোনও বাঙালি মুসলিম পরিবারে যদি দুইয়ের বেশি সন্তান থাকে, তবে তারা অসমের বাসিন্দা হতে পারবে না। এছাড়াও, বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ করা যাবে না। সেসব বন্ধ করতে হবে।