পিঠের যন্ত্রণায় এক লাখের টেস্ট, হাসপাতালকে টাকা ফেরতের নির্দেশ

- আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার
- / 11
পুবের কলম প্রতিবেদক: পিঠে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন এক রোগী। এর পর সেখানকার ইমারজেন্সিতে বিভিন্ন টেস্ট বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই রোগীকে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়। তিন দিন পর হাসপাতাল থেকে যখন ছুটি পান এই রোগী তখন দেখা যায় তাঁর চিকিৎসার জন্য বিল হয়েছে এক লাখ কুড়ি হাজার টাকা।
এর মধ্যে শুধুমাত্র বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্যই খরচ হয়েছে এক লাখ টাকা। এ দিকে, এই বিলের টাকা দেয়নি সংশ্লিষ্ট বিমা কোম্পানি। ফলে, এই বিলের পুরো টাকা রোগীকেই দিতে হয়। এই ঘটনায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ওই এক লাখ টাকা রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ হাসপাতালকে দিল রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন।
এই ঘটনা কলকাতায় অবস্থিত বেসরকারি এক হাসপাতালের। ওই রোগীই অভিযোগ জানান রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন তথা, ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন-এ।
এই অভিযোগের শুনানি শেষে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান, বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় এমনই জানিয়েছেন, এই রোগীর ডিসচার্জ সামারিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে রোগীর স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়টি মূল্যায়ন করা হয়েছে এবং বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অর্থাৎ, এই রোগীকে ভর্তি করানো হয়েছে মূল্যায়ন এবং পরামর্শ দেওয়ার জন্য। কোনও চিকিৎসার কথা এখানে বলা হয়নি। এই কারণে বিলের টাকা দিতে সংশ্লিষ্ট বিমা কোম্পানি দিতে আপত্তি করেছে বলে মনে করছে স্বাস্থ্য কমিশন। রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান জানান, মূল্যায়নের জন্য রোগীকে ভর্তির দরকার হয় না। এর জন্য বিমার পলিসি দায়বদ্ধ নয়।
শুনানিতে ওই হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, বিমা কোম্পানির অ্যাপ্রুভাল পাওয়া যায়নি, বিমার ক্লেইম রিজেক্ট হয়ে গিয়েছে, এই জন্য রোগীর কাছ থেকে বিলের টাকা নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, এই রোগীকে যখন ইমারজেন্সি অ্যাডমিশন করা হয়েছে, তখন ইমারজেন্সির চার্জ নেওয়া যেতে পারে। এখানে এক লাখ টাকার যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে তার সঙ্গে যে কারণে রোগীকে ভর্তি করানো হয়েছে তার কোনও লিংক নেই। এই এক লাখ টাকার যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে, এটা বিমা সংক্রান্ত বিষয়।
স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই ক্ষেত্রে রোগীকে যথাযথভাবে কাউন্সেলিং করা উচিত ছিল হাসপাতালের। এটা করা হয়নি। এই এক লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে ২০ হাজার টাকা ইমার্জেন্সি ট্রিটমেন্টের জন্য রেখে বাকি এক লাখ টাকা যেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার খরচ হিসাবে নেওয়া হয়েছে, সেই টাকা অভিযোগকারীকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য হাসপাতালকে বলা হয়েছে।’
একই সঙ্গে হাসপাতাল এবং রোগীর তরফে ফের বিমা কোম্পানির কাছে ক্লেইম করতেও পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য কমিশন। যদি দেখা যায় বিমা কোম্পানির কাছ থেকে টাকা পেয়ে গিয়েছেন রোগী, তা হলে তখন তাঁকে এই এক লাখ টাকা হাসপাতালকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
আর বিমা কোম্পানির কাছ থেকে কোনও টাকা পাওয়া না গেলে এই লাখ টাকা ফেরতের প্রশ্ন উঠবে না বলে জানিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন।