মুম্বাই, ৩১ অক্টোবর: ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিতে অস্বীকার করায় হিজাব পরিহিত মহিলাকে বিনামূল্যের খাবার দিতে অস্বীকার বেসরকারি সংস্থার। ঘটনাটি ঘটেছে মুম্বাইয়ের টাটা হাসপাতালের বাইরে। এটি ভিডিয়োতে ধারণ করা হয়েছিল। তারপর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। বিনামূল্যের খাবার বন্টনকারীদের প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন নেটিজেনেরা।
টাটা হাসপাতালের কাছে জেরবাই ওয়াদিয়া রোডে একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) পরিচালিত খাবার বিতরণের লক্ষ্য ছিল রোগী এবং তাদের পরিবারকে খাবার সরবরাহ করা। হিজাব পরিহিতা মহিলা যখন লাইনে অপেক্ষা করছিলেন, বিতরণকারীরা দাবি করেন যে তাকে খাবার নিতে গেলে জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিতে হবে। ওই হিজাব পরিহিতা মহিলা ‘জয় শ্রী রাম’ উচ্চারণ করতে অস্বীকার করেন। তখন আয়োজকরা তাকে লাইন ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তারা জোর দিয়ে বলেন যে তিনি স্লোগানটি না বললে তাকে বিনামূল্যের ওই খাবার দেওয়া হবে না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন নেটিজেন লিখেছেন, মুম্বাইতে, একজন মুসলিম মহিলা, যিনি খাবারের জন্য লাইনে ছিলেন, তিনি খাবার চাইলে খাদ্য বিতরণকারীরা তাকে ‘জয়শ্রীরাম’ বলতে বলেছিল। যখন তিনি এটি বলেননি, তাকে লাইন থেকে দূরে যেতে বলা হয়। খাবারটি টাটা হাসপাতালের কাছে এনজিও দ্বারা বিতরণ করা হচ্ছিল৷ একজন পরিবেশক তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘লাত মারুঙ্গা’ (আমি তোমাকে লাথি মারব)। নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া এই ঘটনাটি অনলাইনে উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা বিতরণকারীদের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই এনজিও-এর এই কাজকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়েছেন। জোর দিয়ে বলেছেন যে এই ধরনের আচরণ দাতব্য এবং সহানুভূতির নীতির বিরোধী৷
একজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘শিখ, মুসলমান এবং খ্রিস্টানরা খাবার দেওয়ার জন্য ধর্মীয় স্লোগানের শর্ত রাখে না৷ এই ধরনের শর্ত সহ দান করা কোন দাতব্য নয়।’ অপর এক নেটিজেন মন্তব্য করেছেন, জয় শ্রী রাম বোলেগা তো খানা মিলেগা। এ কেমন কথা। তারা দরিদ্র ও ক্ষুধার্তদের খাওয়ায় না। তারা ঘৃণা, ধর্মান্ধতা এবং সাম্প্রদায়িকতা খাওয়ায়। এরকম কিছু কখনও শুনিনি। এটি সস্তা, কদর্য, নিকৃষ্ট, নির্দয়, নোংরা, অভদ্র এবং ভয়ঙ্কর আচরণ। জনগণকে বাধ্য করা ভুল। অনেক নেটিজেন জবাবদিহিতা চেয়েছেন। জানিয়েছেন, এই এনজিওকে চিহ্নিত করতে হবে। এই বিতরণকারীদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত, কোনও আনুষ্ঠানিক পুলিশি অভিযোগ নেই। মামলা করাও হয়নি। পরিবেশকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা।