লখনউ, ৯ ফেব্রুয়ারিঃ উত্তরপ্রদেশের কুশিনগর জেলায় প্রসিদ্ধ মাদানি মসজিদের একটি অংশ বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হল। এখানেও অভিযোগ জবর দখল করা জমিতে মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। একশো বছর, দু’শো বছর আগে তৈরি মসজিদ নিয়েও জবর দখল করে তৈরির অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আর এই ধরনের অভিযোগ দিয়েই একের পর এক ঐতিহাসিক বিখ্যাত মসজিদ টার্গেট করে চলেছে ইউপির গেরুয়া প্রশাসন। তবে কুশিনগরের এই মাদানি মসজিদ নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের বক্তব্য বিগত ১০ বছর ধরে এখানে মুসলিমরা নামায আদায় করে আসছিলেন।
রবিবার এই মসজিদ ভাঙতে ৬টি বুলডোজার নিয়ে আসা হয়। ভোর থেকেই বিশাল নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয় মসজিদ ভাঙার জন্য। হাতা শহরের উপর তৈরি এই মসজিদ ভাঙার দৃশ্য দেখে স্থানীয় মুসলিমরা চোখের পানি ফেলতে থাকেন। মসজিদের কেয়ার টেকার জানালেন, ১৫ বছর আগে আমরা মসজিদ নির্মাণ করার জন্য ৩২ শতক জমি কিনেছিলাম, সব রেকর্ড রয়েছে। তার মধ্যে ৩০ শতক জায়গাজুড়ে মসজিদ রয়েছে। এখন মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে জমি দখল করার, অপরের জমি দখল করে মসজিদ নির্মিত হয়নি কোথাও।
কোনও মুসলিম এই কাজ করে না তবুও সব জায়গার মতো এখানেও মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় গেরুয়া নেতা রামবচন সিং মুখ্যমন্ত্রীর পোর্টালে লিখেছিলেন এই মসজিদ বেআইনিভাবে নির্মিত। তাই প্রশাসন তাড়াতাড়ি সুযোগ নষ্ট না করে সার্ভে করার নির্দেশ দেয়। মসজিদ কমিটি হাইকোর্টে যায়। হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল বুলডোজার চালানো যাবে না। স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল গতকাল ৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার পর্যন্ত।
এরপর মসজিদ কমিটি আইনি প্রক্রিয়ায় মনে হয় যাওয়া পছন্দ করেনি তাই শনিবার রাত পেরোতেই রবিবার ছয়টি বুলডোজার চলে আসে। মসজিদের একটি অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্ট বুলডোজার বন্ধের রায়ে বলেছিল সরকারি জমি রাস্তা জল নিকাসি ব্যবস্থা ইত্যাদি থেকে জবর দখল হঠাবার জন্য বুলডোজার চালনো যেতে পারে তবে সেটা যদি অত্যন্ত জরুরী ধরনের হয়।
এখানে ১০ বছর ধরে নামায চলতে থাকা মসজিদের একটি অংশ ভেঙে দিয়ে যোগী সরকার তাদের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হতে চাইল না। মুসলিমদের ধর্মীয় স্থানে বুলডোজার দাপট দেখানোর জন্য যেটা প্রথমে প্রয়োজন কাউকে অভিযোগ জানাতে হবে হয় জবর দখল করে তৈরি মসজিদ, নয়তো সরকারি অনুমোদন না নিয়ে তৈরি হয়েছে।
এই ধরনের অভিযোগ দেওয়ার জন্য মুসলিম এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন কট্টরবাদী টিম। অভিযোগ এলেই চলে আসছে বুলডোজার। নিম্ন আদালত এমনকি হাইকোর্টেও সুরাহা পাচ্ছে না মুসলিম পক্ষ। নোটিশ দিয়ে মসজিদ ভাঙাকে বেআইনিও বলা যাচ্ছে না আইনের চোখে। তাই বড়ই করুণ অবস্থা এখন ইউপির মুসলিম ধর্মীয় স্থানগুলির।