নয়াদিল্লি, ১৩ ফেব্রুয়ারিঃ কোনও রাজ্যে বিজেপি জেতার পর বরাবরই মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করতে দেরি করে। নানান অঙ্ক কষা হয়। সর্বোপরি মোদিজি নিজের লোক নিয়োগ করতে পছন্দ করেন। তাতে থাকে নানা চমকও। এবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর কুরসিতে কে বসবে তা নিয়েও চলছে নানা জল্পনা। কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal) দলকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফুটছে বিজেপি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণায় তারা কোনও তাড়াহুড়ো করছে না। রবিবার পর্যন্ত তারা সময় নেবে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছে একাধিক নাম। এর মধ্যে এ পদে এক মহিলার নামও হাওয়ায় ভাসছে।
অনেকে মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra modi) বিদেশ সফরে থাকাতেই নাম ঘোষণায় দেরি হচ্ছে। তাই দিল্লির সরকার গঠনের প্রক্রিয়াও আপাতত বন্ধ। ফ্রান্সের পর এবার আমেরিকা সফর শেষে নরেন্দ্র মোদি দিল্লি ফেরার পরই মুখ্যমন্ত্রী কে হবে, বিজেপি তা ঠিক করবে। বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা এই অবসরে দিল্লির নেতাদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করছেন। কিন্তু কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী, তা এখনো কোটি টাকার প্রশ্ন। অথচ ফল ঘোষণার পর এক সপ্তাহ কাটতে চলেছে। এই অবসরে আম আদমি পার্টি (Aam Aadmi Party) সরব হয়েছে। তাদের অভিযোগ, সরকার না থাকায় রাজ্যের সব পরিষেবা ও জরুরি কাজ থমকে রয়েছে। ভোগান্তি হচ্ছে সাধারণ মানুষের।
আম আদমির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে হারিয়েছেন বিজেপির প্রবেশ শর্মা। তিনি প্রধান দাবিদার। প্রবেশের বাবা সাহেব সিং বর্মা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তবে তার বিরুদ্ধে ঘৃণাভাষণের বেশ কিছু অভিযোগ আছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঊর্ধ্বেও তিনি নন। গত বছর লোকসভা ভোটে বিজেপি নেতৃত্ব দিল্লির সাত সাংসদের মধ্যে ছয়জনকেই বাদ দিয়ে নতুন মুখের ওপর ভরসা রেখেছিলেন। বাদ দেওয়া হয়নি শুধু উত্তর-পূর্ব দিল্লির সংসদ সদস্য ভোজপুরি সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক মনোজ তিওয়ারিকে। পূর্ব উত্তর প্রদেশ ও বিহারের যেসব মানুষ দিল্লিতে পাকাপাকিভাবে বাস করছেন, পূর্বাঞ্চলি বলে যাদের পরিচয়, তাদের সমর্থন পেতে বিজেপি মনোজ তিওয়ারিকে ব্যবহার করেছে। এই প্রথম পূর্বাঞ্চলীয় ভোটারদের সমর্থন বিজেপি ভালো রকম আদায় করেছে। সে কারণে মনোজও মুখ্যমন্ত্রিত্বের অন্যতম দাবিদার।
বিজেপির (BJP) দিক থেকে দিল্লির শেষ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সুষমা স্বরাজ। তার অকালপ্রয়াণের পর মেয়ে বাশুরি আইন পেশা ছেড়ে রাজনীতিতে এসেছেন। নয়াদিল্লি কেন্দ্র থেকে গত ভোটে জিতে লোকসভার সাংসদও হয়েছেন। নারী মুখ্যমন্ত্রী করতে হলে তার নামই প্রথম পছন্দ বলে মনে করা হচ্ছে। নারী দাবিদারদের মধ্যে আরও রয়েছেন শালিমারবাগ কেন্দ্র থেকে জয়ী রেখা গুপ্ত ও গ্রেটার কৈলাস কেন্দ্র থেকে জয়ী শিখা রায়। মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অবশ্য ইদানীং বেশ চমক সৃষ্টি করছেন। আগে উত্তরাখন্ড, পরে রাজস্থান, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশের পরিচিতদের দাবি উপেক্ষা করে বেছে নিয়েছেন আনকোরা নতুন বিশ্বস্ত মুখ। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে যারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মতামত নেবেন। দিল্লিতেও যে তেমন হবে না, জোর দিয়ে বলা যায় না। সাসপেন্স আপাতত এটুকুই।