পুবের কলম ওয়েবডেসস্ক: হুগলি-সহ রাজ্যের অন্যান্য জেলাতেও নতুন আলু উঠতে শুরু করেছে। প্রথমদিকে বেশ ভালো দামে নতুন কাঁচা আলু বিক্রি হওয়ায় চাষিরা লাভবান হচ্ছিলেন, কিন্তু যত সময় যাচ্ছে আলুর উৎপাদন উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাজারে জোগান বাড়ছে। উৎপাদন বাড়ায় আলুর দাম হু হু করে কমতে শুরু করেছে। যে কাঁচা আলু প্রথমদিকে জমি থেকে চাষিরা ৭০০-৭৫০ টাকা দরে প্রতি ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি করছিলেন। গত রবিবার পর্যন্ত সেই আলুর দাম কমে অর্ধেক হয়ে গেছে। লাভের আলু এখন লোকসানে বিক্রি হচ্ছে বলে কৃষকদের দাবি। হাইব্রিড জাতীয় পোখরাজ, হিমালিনি, সুপার সিক্স ও কলম্ব আলুর ফলন অত্যাধিক ভালো হচ্ছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। ওইসব আলু বিঘা প্রতি ৮০-১০০ বস্তার মধ্যে উৎপাদন হচ্ছে। তবে আলু চাষে খরচ অনেক বেড়েছে। কৃষকদের দাবি, বিঘা প্রতি প্রায় ৩০-৩২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এক বিঘা জমিতে ৮০ বস্তা আলু হলে তার বর্তমান দাম ৩০-৩২ হাজার টাকার মধ্যে হচ্ছে। ফলে আলু চাষে দু-মুখ সমান হচ্ছে নয়তো কিছু লোকসান হচ্ছে। উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় হাইব্রিড জাতীয় পোখরাজ, সুপার সিক্স, কলম্ব,হিমালিনি জাতের কাঁচা আলু রবিবার হুগলির কৃষকরা বিক্রি করেছেন ৩৬০-৪৭০ প্রতি ৫০ কেজির বস্তা হিসাবে। ওই দামে আলু বিক্রি করে কৃষকদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে কৃষকরা দাবি করেছেন।
আলু চাষে রাজ্যে কিছুটা দেরিতে শুরু হলেও গত বছরের তুলনায় সারা রাজ্যে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ আলু চাষ বেশি হয়েছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে জানা গেছে। ইতিমধ্যে আদালতের নির্দেশে ভিন রাজ্যে আলু যাওয়া শুরু হয়েছে। অপরদিকে, অত্যাধিক আলু উৎপাদনের আশঙ্কায় রয়েছেন ব্যবসায়ী মহল। গত শুক্রবার উত্তরবঙ্গ আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্মেলন হয়। উত্তরবঙ্গ আলু ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবলু চৌধুরী সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তার ব্যক্তিগত মতামত জানিয়ে বলেন, ‘চলতি বছরে অধিক উৎপাদনের জন্য আলুর তেমন দাম থাকবে না। আলুতে লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই সকল ব্যবসায়ীকে সতর্কতার সঙ্গে ব্যবসা করতে হবে।’
রাজ্য প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির কর্ণধার লালু মুখোপাধ্যায় জানিয়ছেন, ‘সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদনকারী রাজ্য উত্তরপ্রদেশে আলুর ভালো ফলন হওয়ায় দাম কম। ইতিমধ্যে উত্তরপ্রদেশে হিমঘরগুলিতে ৪০০-৪৫০ টাকা প্রতি ৫০ কেজি বস্তা হিসাবে আলু সংরক্ষণ শুরু হয়েছে।’