BREAKING:
রাজ্যসভায় পেশ ওয়াকফ বিল সংক্রান্ত জেপিসি রিপোর্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জমি, চাষিদের পাশে দাঁড়াতে বড় সিদ্ধান্ত রাজ্যের আরও দুটি নয়া কোর্স চালু করছে আলিয়া সিটু-র অ্যাপ ক্যাব ধর্মঘট আজ বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি, জারি কমলা সতর্কতা রমজানে মসজিদে ক্যামেরার ব্যবহার নিষিদ্ধ করল সউদি আরব হাইটেক টুকলি! মাধ্যমিকের অঙ্ক পরীক্ষায় এআইয়ের ব্যবহার, হাতেনাতে ধরা পড়ল পরীক্ষার্থী ভাষার জন্য তামিলরা প্রাণ দিয়েছে, ভাষার সঙ্গে খেললে ফল ভালো হবে না, হুঙ্কার কমল হাসানের সলমন রুশদির হামলাকারী দোষী সাব্যস্ত, ন্যূনতম ৩০ বছর কারাদণ্ডের সম্ভাবনা ৬ ইসরাইলি জিম্মিকে ছাড়ল হামাস, জেলমুক্তির অপেক্ষায় ৬০০ ফিলিস্তিনি কুম্ভমেলায় যাওয়ার পথে দূর্ঘটনায় মৃত পশ্চিমবঙ্গের ৬, শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর 

কিভাবে বুঝবেন শিশু অবসাদে ভুগছে

রিপোর্টার:
  • শেষ আপডেট: মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

শিশুদের মধ্যেও বাড়ছে অবসাদ প্রবণতা। কেন এই অবসাদ, এর প্রতিকারই কী? শিশুদের প্রতি বাবা-মায়ের কর্তব্য সম্পর্কে জানাচ্ছেন এসএসকেএম-এর সাইক্রিয়াট্রি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. অনির্বান রায়। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ওসিউর রহমান

কিভাবে বুঝবো

যে কোন মানসিক ও ব্যবহারিক সমস্যার প্রকাশ বিশেষতঃ শিশুদের ক্ষেত্রে হবে তাদের ব্যবহারের পরিবর্তন। শিশুরা সবসময়  তাদের মনের ভাব বড়দের মত পরিষ্কার করে বলতে পারে না, তাই ব্যবহার থেকে ইঙ্গিত পাওয়া সম্ভব। বিশেষত যদি তাদের ব্যবহার, কোন ক্ষেত্রে তার স্বাভাবিক ব্যবহারের থেকে আলাদা হয় এবং এই পরিবর্তন বেশ কিছুদিন স্থায়ী হয় তাহলে ভাবতে হবে কোন মানসিক সমস্যা হল কিনা বা অবসাদের কথা।

সাধারণত কি কি লক্ষণ দেখা দেয়

সাধারণ ভাবে শিশুরা যদি চুপচাপ হয়ে যায়, কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলে, ক্ষিদে বা ঘুম কমে বা বেড়ে যায়- তাহলে তা অবসাদের লক্ষণ হতে পারে।

মজার ব্যাপার হল, অনেকক্ষেত্রে রেগে যাওয়া, ছটফটানি, বিরক্তি ইত্যাদি অবসাদের ইঙ্গিত হতে পারে। বিশেষ করে শিশুর ক্ষেত্রে। তবে শিশুরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের খারাপ লাগার কারণটা বুঝতে পারে না। তাদের আবেগ বা হতাশাকে পরিষ্কার চিনতে পারে না, তাই খারাপ লাগা অনেক ক্ষেত্রেই রাগ বা ছটফটানি হিসাবে প্রকাশিত হয়। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যদি তার সঙ্গে যথেষ্ট সময় কাটানো যায়, তাহলে তাদের খারাপ লাগাটা তারা পরিষ্কার ভাবেই বলতে পারে।

কিভাবে বোঝা যাবে

প্রথমতঃ শিশুর ব্যবহারকে তার দোষ হিসেবে না দেখে তাকে বোঝার চেষ্টা করা উচিত। আমাদের প্রতিটি আবেগের একটা কারণ যেমন থাকে, শিশুদেরও প্রতিটি আবেগের একটা কারণ থাকে। সেটা আমাদের কাছে যতই প্রয়োজনীয় বা অপ্রয়োজনীয় বা অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা বলে মনে হোক না কেন।

আমরা শিশুদের যে কোন সমস্যাকে তার দায় বলে চাপিয়ে দিলে তার সমস্যা সমাধানে সাহায্য করতে পারব না বরং তাদের বোঝার চেষ্টা করা উচিত ও তাদের সমস্যাগুলো সমাধানে তাদের সাহায্য করলে তারাও তাদের আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ করতে শিখবে। আমাদের নিজেদের আবেগ প্রথমে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। বাচ্চাকে বকাবকি বা মারধর না করে আমরা তাকে বুঝতে চেষ্টা করলে তার ব্যবহারে পরিবর্তনের সম্ভাবনা অনেক বেশি। যখন কোন নির্দেশ দেওয়া হয় তখন তা পরিষ্কার বা দ্বর্থহীন হওয়া প্রয়োজন। কি করবে না, তার সঙ্গে সে কি করবে সেটাও বলা উচিত। আর এরই সঙ্গে মোটামুটি ভাবে একটা নিয়মিত রুটিন রাখা প্রয়োজন।

কি উপায়ে একঘেয়েমি কাটানো যেতে পারে

সামাজিক, আর্থিক, রোগ সংক্রান্ত, ভবিষ্যত সংক্রান্ত নানা চিন্তা আমাদের জীবনকে চাপে রেখেছে। তবুও আমাদের চেষ্টা করা দরকার তাদের সঙ্গে যথেষ্ট সময় কাটানো। শুধু তাই নয় বাবা-মা সবাই মিলে সামাজিক অবস্থানের একটা জায়গা করে সেখানে ছেলে মেয়েদের বিভিন্ন সৃজনশীল কাজ শেয়ার করা উচিত। বিভিন্ন সৃজনশীলতার মাধ্যমে শিশুদের সময়টা ভালো কাটতে পারে, মাঝে মাঝে সামাজিক একঘেয়েমি কাটানোর ছোট ডাইভে বেরিয়ে পড়াটাও যেতে পারে।

ব্যবহার যখন দুশ্চিন্তার কারণ

যখন উপরোক্ত রাস্তাগুলো অবলম্বন করেও বাচ্চার ব্যবহারের পরিবর্তন হচ্ছে না, যা ব্যবহারের পরিবর্তনটা এতটাই বেশি যে আপনি খুবই দুঃশ্চিন্তাই আছেন, বিশেষতঃ যদি মানসিক সমস্যার ইতিহাস থাকে বা বাচ্চার আগের ব্যবহারিক সমস্যার ইতিহাস থাকে এবং এরকম হয় যে বাচ্চাকে আগেই আপনি খুব একটা ভালো ভাবে সামলাতে পারতেন না। এখন সেটা আরও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে তবে অতি অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যান।

ভবিষ্যতে কি কি জটিলতা দেখা দিতে পারে

অনেক ক্ষেত্রেই যে শিশুর মধ্যে সমস্যার সম্ভাবনা আছে, এমন মানসিক ও সমাজিক চাপের অবস্থাতেই প্রকাশিত হয়। তাই তাকে অবহেলা করা উচিত নয়। তাহলে তা ভবিষ্যতে বড় আকার ধারণ করতে পারে। আমরা সকলেই জানি অবসাদ বিশেষত শিশু কিশোরদের অবসাদ এবং আত্মহত্যা এখন একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে সারা পৃথিবী জুড়েই। তাই ব্যবহারের পরিষ্কার পরিবর্তনকে অবহেলা নয়। এটা একটা মানসিক স্বাস্থ্য কর্তৃক জরুরি সমস্যার রূপ নিতে পারে।

বাবা মা-র প্রতি আপনার পরামর্শ

বাবা মায়েদের দায়িত্ব তাদের সঙ্গে সময় কাটানোর, এবং সমস্যাগুলো সমনীয় করে তোলা। যদিও শিশুর বয়স ভেবে সমস্যা এবং তার সমাধানের চেহারাগুলো আলাদা কিন্তু আমাদের দুঃশ্চিন্তা ব্যবস্থা চাপিয়ে না দিয়ে, তাদের কাছে বোঝা এবং তাদের মত করে বোঝানোর চেষ্টাটা বোধ হয় সব বয়সের ক্ষেত্রেই সমান। বাবা মা যদি সচেতন হোন, তাহলে তারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন কারণ তাদের বাচ্চাদের তাদের মতো করে আর কেউই চেনে না। আমরা সবাই যদি একে ওপরের প্রতি সহমর্মিত থাকি তাহলে অবশ্যই ভবিষ্যতে আমরা এই দুশ্চিতা কাটিয়ে উঠতে পারবো।ও.র.

এই সংক্রান্ত আরও খবর
Copyright © 2025 Puber Kalom All rights reserved.
Developed By eTech Builder