গাজা: শান্তিচুক্তির নিয়ম ভেঙে ফের গাজা আক্রমণের ছক নেতানিয়াহুর। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ছয় ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। বিনিময়ে যেসব ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল, তাদের ছাড়েনি ইসরায়েল। এর কারণ হিসেবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যতক্ষণ না হামাস ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার সময় ‘অপমানজনক অনুষ্ঠান’ বন্ধ না করবে, ততক্ষণ ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি বিলম্বিত হবে।
গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে হামাস সুপরিকল্পিতভাবে ২৫ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। প্রতিটি হস্তান্তর অনুষ্ঠান ছিল অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত। এসব অনুষ্ঠানে মুখোশধারী হামাস সদস্যরা মঞ্চে জিম্মিদের নিয়ে আসে এবং গাজায় জড়ো হওয়া জনতার সামনে তাদের হাত নাড়াতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ তুলেছে ইসরায়েল।
শনিবার বন্দিবিনিময়ের সপ্তম ধাপে হামাস ছয়জন ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তি দেয়। কিন্তু ইসরায়েল ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি বিলম্বিত করে। হামাস এই পদক্ষেপকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ‘সরাসরি লঙ্ঘন’ বলে আখ্যা দেয়। ইসরায়েলের তরফ থেকে ৬ শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। এই বিলম্বের কারণ হিসেবে নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে রোববার বলেছে, ‘হামাসের একের পর এক শর্ত লঙ্ঘন করে চলেছে। এর মধ্যে আমাদের জিম্মিদের মুক্তির সময় অসম্মানজনক অনুষ্ঠান এবং সেই অনুষ্ঠানের ভিডিও ফুটেজ প্রচারের জন্য ব্যবহার অন্যতম। এসব কারণে গতকাল শনিবার যাদের মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল, তা পরবর্তী জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।’
এদিকে ওয়াশিংটন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সতর্ক করে বলেছেন, হামাস যদি বাকি জিম্মিদের মুক্তি না দেয়, তাহলে তাদের ‘ধ্বংস’ করা হবে। অপরদিকে ফিলিস্তিনি বন্দীদের অধিকার রক্ষা সংগঠন প্যালেস্টাইনিয়ান প্রিজনার্স ক্লাব জানিয়েছে, শনিবার ইসরায়েলের ৬২০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল, যাদের বেশির ভাগই গাজার বাসিন্দা এবং যুদ্ধ চলাকালে গ্রেপ্তার হয়েছিল।
নেতানিয়াহুর ঘোষণার আগেই হামাসের মুখপাত্র আধেল লতিফ আল-কানু বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বন্দীদের মুক্তি না দেওয়া চুক্তির খোলাখুলি লঙ্ঘন।’ তিনি মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানান, যাতে কোনো ‘বিলম্ব বা বাধা ছাড়াই চুক্তির শর্ত বাস্তবায়ন করা হয়।’