১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চুক্তি মেনেই জল ছাড়ছে ভারত, বাংলাদেশের আধিকারিক

সুস্মিতা
  • আপডেট : ৪ মার্চ ২০২৫, মঙ্গলবার
  • / 46

ফরাক্কা পরিদর্শন করে মেনে নিলেন বাংলাদেশের আধিকারিক

ঢাকা: গঙ্গার জলবণ্টন চুক্তি সঠিকভাবে মেনে চলছে ভারত। খারিফ মরশুমে বাংলাদেশে পদ্মা নদীতে যে জলের অপ্রতুলতা দেখা যায় তার জন্য ভারত দায়ী নয়। প্রাকৃতিক কারণেই নদীতে কমে জলের প্রবাহ। ফরাক্কা ব্যারাজের ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন করে এমনই জানালেন বাংলাদেশের ইউনূস প্রশাসনের আধিকারিকরা। যার ফলে ভারতের বিরুদ্ধে গঙ্গার জল আটকে রাখার যে অভিযোগ বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের একাংশ করেন, তা খারিজ হয়ে গেল।
ফরাক্কা ব্যারাজের ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ থেকে কলকাতা এসে পৌঁছয় ইন্দো-বাংলা জয়েন্ট রিভার কমিশনের ওপার বাংলার প্রতিনিধিরা। সোমবার রাতে তাঁরা ফরাক্কা পৌঁছন। তাঁদের স্বাগত জানান ফরাক্কা ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজার আর ডি দেশপাণ্ডে। মঙ্গলবার সকালে ব্যারাজে জলের প্রবাহ খতিয়ে দেখেন তাঁরা। ফরাক্কা ব্যারাজে কী পরিমাণে জল আসছে আর কত জল পদ্মায় প্রবাহিত হচ্ছে, তার হিসাব নেন নদী বিশেষজ্ঞরা। গঙ্গা থেকে জল কী প্রক্রিয়ায় পদ্মায় প্রবাহিত হচ্ছে, তা-ও সরজমিনে পর্যবেক্ষণ করে দলটি।

বাঁধ পরিদর্শনের পর বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলটির প্রধান মুহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে আমাদের জলপ্রবাহ ভালো ছিল। ফেব্রুয়ারিতে কমেছে। জল কমা একটি প্রাকৃতিক বিষয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘যাবতীয় কাজ জলবণ্টন চুক্তি অনুযায়ী বাস্তবায়িত হচ্ছে। চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করবে বিশেষ কমিটি। কলকাতায় রুটিন বৈঠক হবে।’
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের এই সফর ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। মঙ্গলবারের পরিদর্শনের পর আগামী ৬ মার্চ ইন্দো-বাংলাদেশ জয়েন্ট রিভার কমিশনের ৮৬তম বৈঠকে দুই দেশের প্রতিনিধিরা গঙ্গা-পদ্মার জলবণ্টন ছাড়াও তিস্তা-সহ ৫৪টি আন্তঃসীমান্ত নদীর বিষয়ে আলোচনা করবেন। পরের দিন, অর্থাৎ ৭ মার্চ কলকাতায় একটি কারিগরি পর্যায়ের বৈঠক হবে বলেও জানা গিয়েছে। ৮ মার্চ কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নির্দিষ্ট উড়ানে ঢাকা রওনা দেবেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা।
১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গা-পদ্মা জলবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এর ফলে দুই দেশ গঙ্গার জল ভাগ করে নেওয়ার একটি নির্দিষ্ট কাঠামো তৈরি করে। চুক্তির মেয়াদ ছিল ৩০ বছর, অর্থাৎ ২০২৬ সালে এটি শেষ হবে। আগামী বছর চুক্তির ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নতুন করে কিছু পর্যালোচনা ও সংশোধন আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

চুক্তি মেনেই জল ছাড়ছে ভারত, বাংলাদেশের আধিকারিক

আপডেট : ৪ মার্চ ২০২৫, মঙ্গলবার

ফরাক্কা পরিদর্শন করে মেনে নিলেন বাংলাদেশের আধিকারিক

ঢাকা: গঙ্গার জলবণ্টন চুক্তি সঠিকভাবে মেনে চলছে ভারত। খারিফ মরশুমে বাংলাদেশে পদ্মা নদীতে যে জলের অপ্রতুলতা দেখা যায় তার জন্য ভারত দায়ী নয়। প্রাকৃতিক কারণেই নদীতে কমে জলের প্রবাহ। ফরাক্কা ব্যারাজের ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন করে এমনই জানালেন বাংলাদেশের ইউনূস প্রশাসনের আধিকারিকরা। যার ফলে ভারতের বিরুদ্ধে গঙ্গার জল আটকে রাখার যে অভিযোগ বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের একাংশ করেন, তা খারিজ হয়ে গেল।
ফরাক্কা ব্যারাজের ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ থেকে কলকাতা এসে পৌঁছয় ইন্দো-বাংলা জয়েন্ট রিভার কমিশনের ওপার বাংলার প্রতিনিধিরা। সোমবার রাতে তাঁরা ফরাক্কা পৌঁছন। তাঁদের স্বাগত জানান ফরাক্কা ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজার আর ডি দেশপাণ্ডে। মঙ্গলবার সকালে ব্যারাজে জলের প্রবাহ খতিয়ে দেখেন তাঁরা। ফরাক্কা ব্যারাজে কী পরিমাণে জল আসছে আর কত জল পদ্মায় প্রবাহিত হচ্ছে, তার হিসাব নেন নদী বিশেষজ্ঞরা। গঙ্গা থেকে জল কী প্রক্রিয়ায় পদ্মায় প্রবাহিত হচ্ছে, তা-ও সরজমিনে পর্যবেক্ষণ করে দলটি।

বাঁধ পরিদর্শনের পর বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলটির প্রধান মুহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে আমাদের জলপ্রবাহ ভালো ছিল। ফেব্রুয়ারিতে কমেছে। জল কমা একটি প্রাকৃতিক বিষয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘যাবতীয় কাজ জলবণ্টন চুক্তি অনুযায়ী বাস্তবায়িত হচ্ছে। চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করবে বিশেষ কমিটি। কলকাতায় রুটিন বৈঠক হবে।’
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের এই সফর ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। মঙ্গলবারের পরিদর্শনের পর আগামী ৬ মার্চ ইন্দো-বাংলাদেশ জয়েন্ট রিভার কমিশনের ৮৬তম বৈঠকে দুই দেশের প্রতিনিধিরা গঙ্গা-পদ্মার জলবণ্টন ছাড়াও তিস্তা-সহ ৫৪টি আন্তঃসীমান্ত নদীর বিষয়ে আলোচনা করবেন। পরের দিন, অর্থাৎ ৭ মার্চ কলকাতায় একটি কারিগরি পর্যায়ের বৈঠক হবে বলেও জানা গিয়েছে। ৮ মার্চ কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নির্দিষ্ট উড়ানে ঢাকা রওনা দেবেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা।
১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গা-পদ্মা জলবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এর ফলে দুই দেশ গঙ্গার জল ভাগ করে নেওয়ার একটি নির্দিষ্ট কাঠামো তৈরি করে। চুক্তির মেয়াদ ছিল ৩০ বছর, অর্থাৎ ২০২৬ সালে এটি শেষ হবে। আগামী বছর চুক্তির ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নতুন করে কিছু পর্যালোচনা ও সংশোধন আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।