Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the login-customizer domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u419551674/domains/puberkalom.in/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
ইব্রাহিমি মসজিদ বন্ধ করে দিল ইসরাইল | Puber Kalom
১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ফিলিস্তিনি ধর্মীয় নেতাদের কণ্ঠে প্রতিবাদ

ইব্রাহিমি মসজিদ বন্ধ করে দিল ইসরাইল

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 55

হেবরন, ১০ এপ্রিল: ঐতিহাসিক ইব্রাহিমি মসজিদে ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর নিষেধাজ্ঞা ও ধর্মীয় অধিকারে হস্তক্ষেপের ঘটনায় ফিলিস্তিনজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বাস করা হয়, এ মসজিদের সঙ্গেই হযরত ইব্রাহিম, হযরত ইসহাক, হযরত ইয়াকুব ও হযরত ইউসুফের কবর রয়েছে। ফিলিস্তিনের শীর্ষ ধর্মীয় নেতারা একে ইসলামি পবিত্র স্থানসমূহের ওপর ‘বিপজ্জনক নতুন ধাপের আগ্রাসন’ বলে উল্লেখ করেছেন।
মঙ্গলবার রামাল্লাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের উপদেষ্টা ও প্রধান শরিয়াহ বিচারক মাহমুদ আল-হাব্বাশ, ধর্মমন্ত্রী মুহাম্মদ মুস্তাফা নাজেম ও জেরুসালেমের গ্র্যান্ড মুফতি মুহাম্মদ হুসেইন একযোগে ইসরাইলের কঠোর সমালোচনা করেন। নেতারা অভিযোগ করেন, ইসরাইল মসজিদের অভ্যন্তরীণ কক্ষগুলো বন্ধ করে দিয়েছে, শুক্রবার, ঈদ ও রমজানের শেষ দশকে মুসলিমদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে বাধা দিচ্ছে এবং ইসলামিক ওয়াকফের নিয়ন্ত্রণাধীন অংশগুলোতে সামরিক হস্তক্ষেপ করছে। বিশেষ করে মসজিদের পরিচালক শায়েখ মুয়াতাজ আবু স্নিনেহ-কে ১৫ দিনের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং তাঁকে আটক করার ঘটনা ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ফিলিস্তিনের ধর্মীয় নেতৃত্বের মতে, এই পরিস্থিতি এখন শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং ধর্মীয় অধিকার, ইতিহাস ও পরিচয়ের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই হয়ে উঠেছে।

ধর্মমন্ত্রী নাজেম জানান, পরিস্থিতির মোকাবিলায় সরকার বাস্তব ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে হেবরনের ছোট মসজিদগুলো শুক্রবার বন্ধ রাখা, যাতে মুসল্লিরা ইব্রাহিমি মসজিদে একত্রিত হন এবং ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়। এছাড়া আন্তর্জাতিক আইনি প্রক্রিয়ায় মামলা চালাতে একজন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে। আল-হাব্বাশ বলেন, ‘আমরা ইসরাইলি আদালতের ওপর আর নির্ভর করবো না। যুদ্ধাপরাধীদের মতোই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ও অন্যান্য ফোরামের মাধ্যমে আমরা ইসরাইলের কাছে জবাব চাইব।’

গ্র্যান্ড মুফতি মুহাম্মদ হুসেইন বলেন, ‘ইব্রাহিমি ও আল-আকসা মসজিদ মুসলমানদের জন্য নির্দিষ্ট ওয়াকফ সম্পত্তি। ইসরাইলের সব পদক্ষেপ, এমনকি শামগার কমিশনের সুপারিশও, ফিলিস্তিনি ও ইসলামি বিশ্ব প্রত্যাখ্যান করে।’ উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালে এক ইসরাইলি সন্ত্রাসীর হামলায় ২৯ মুসল্লি নিহত হওয়ার পর মসজিদটি দখল করে নেয় ইসরাইল। এরপর মসজিদের ৬৩ শতাংশ অংশ, যার মধ্যে আজানের ঘরও রয়েছে, ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়। বাকি অংশ ব্যবহারের সীমিত অধিকার রাখা হয় মুসলমানদের জন্য। বর্তমানে হেবরনের পুরোনো শহরে প্রায় ৪০০ ইহুদি বসবাস করছে, যাদের সুরক্ষায় মোতায়েন রয়েছে ১,৫০০-এরও বেশি ইসরাইলি সেনা।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ফিলিস্তিনি ধর্মীয় নেতাদের কণ্ঠে প্রতিবাদ

ইব্রাহিমি মসজিদ বন্ধ করে দিল ইসরাইল

আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার

হেবরন, ১০ এপ্রিল: ঐতিহাসিক ইব্রাহিমি মসজিদে ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর নিষেধাজ্ঞা ও ধর্মীয় অধিকারে হস্তক্ষেপের ঘটনায় ফিলিস্তিনজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বাস করা হয়, এ মসজিদের সঙ্গেই হযরত ইব্রাহিম, হযরত ইসহাক, হযরত ইয়াকুব ও হযরত ইউসুফের কবর রয়েছে। ফিলিস্তিনের শীর্ষ ধর্মীয় নেতারা একে ইসলামি পবিত্র স্থানসমূহের ওপর ‘বিপজ্জনক নতুন ধাপের আগ্রাসন’ বলে উল্লেখ করেছেন।
মঙ্গলবার রামাল্লাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের উপদেষ্টা ও প্রধান শরিয়াহ বিচারক মাহমুদ আল-হাব্বাশ, ধর্মমন্ত্রী মুহাম্মদ মুস্তাফা নাজেম ও জেরুসালেমের গ্র্যান্ড মুফতি মুহাম্মদ হুসেইন একযোগে ইসরাইলের কঠোর সমালোচনা করেন। নেতারা অভিযোগ করেন, ইসরাইল মসজিদের অভ্যন্তরীণ কক্ষগুলো বন্ধ করে দিয়েছে, শুক্রবার, ঈদ ও রমজানের শেষ দশকে মুসলিমদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে বাধা দিচ্ছে এবং ইসলামিক ওয়াকফের নিয়ন্ত্রণাধীন অংশগুলোতে সামরিক হস্তক্ষেপ করছে। বিশেষ করে মসজিদের পরিচালক শায়েখ মুয়াতাজ আবু স্নিনেহ-কে ১৫ দিনের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং তাঁকে আটক করার ঘটনা ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ফিলিস্তিনের ধর্মীয় নেতৃত্বের মতে, এই পরিস্থিতি এখন শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং ধর্মীয় অধিকার, ইতিহাস ও পরিচয়ের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই হয়ে উঠেছে।

ধর্মমন্ত্রী নাজেম জানান, পরিস্থিতির মোকাবিলায় সরকার বাস্তব ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে হেবরনের ছোট মসজিদগুলো শুক্রবার বন্ধ রাখা, যাতে মুসল্লিরা ইব্রাহিমি মসজিদে একত্রিত হন এবং ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়। এছাড়া আন্তর্জাতিক আইনি প্রক্রিয়ায় মামলা চালাতে একজন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে। আল-হাব্বাশ বলেন, ‘আমরা ইসরাইলি আদালতের ওপর আর নির্ভর করবো না। যুদ্ধাপরাধীদের মতোই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ও অন্যান্য ফোরামের মাধ্যমে আমরা ইসরাইলের কাছে জবাব চাইব।’

গ্র্যান্ড মুফতি মুহাম্মদ হুসেইন বলেন, ‘ইব্রাহিমি ও আল-আকসা মসজিদ মুসলমানদের জন্য নির্দিষ্ট ওয়াকফ সম্পত্তি। ইসরাইলের সব পদক্ষেপ, এমনকি শামগার কমিশনের সুপারিশও, ফিলিস্তিনি ও ইসলামি বিশ্ব প্রত্যাখ্যান করে।’ উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালে এক ইসরাইলি সন্ত্রাসীর হামলায় ২৯ মুসল্লি নিহত হওয়ার পর মসজিদটি দখল করে নেয় ইসরাইল। এরপর মসজিদের ৬৩ শতাংশ অংশ, যার মধ্যে আজানের ঘরও রয়েছে, ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়। বাকি অংশ ব্যবহারের সীমিত অধিকার রাখা হয় মুসলমানদের জন্য। বর্তমানে হেবরনের পুরোনো শহরে প্রায় ৪০০ ইহুদি বসবাস করছে, যাদের সুরক্ষায় মোতায়েন রয়েছে ১,৫০০-এরও বেশি ইসরাইলি সেনা।