একশো দিনের কাজে টাকা বন্ধ কেন, হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র
- আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 43

The Calcutta High Court is the oldest High Court in India. It was built in 1862 during British Colonial in India . It is located at Kolkata , India
মোল্লা জসিমউদ্দিনঃ বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ‘একশো দিনের কাজ’ বিষয়ক কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিল। একশো দিনের কাজে দুর্নীতি, আর তাতে বাংলার চার জেলা থেকে ২ কোটি ২০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। কেন্দ্র কেন মনরেগা প্রকল্প (একশো দিনের কাজ) বন্ধ রেখেছে? কলকাতা হাইকোর্টের এই প্রশ্নের উত্তরে জানাল কেন্দ্র। তিন সপ্তাহ অর্থাৎ ১৫ মে-র মধ্যে কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।’আর্থিক তছরুপ বা দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও কোনও প্রকল্প অনন্তকাল আটকে রাখা যায় না।’ ১০০ দিনের প্রকল্প সংক্রান্ত মামলায় তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। ১০০ দিনের প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে শুভেন্দু অধিকারীর মামলায় এই মন্তব্য প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। একশো দিনের কাজের (মনরেগা) প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে উত্তাল রাজ্য। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানিতে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে,’রাজ্যের চার জেলা-পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, মালদা এবং দার্জিলিং (জিটিএ)-তে প্রকল্পের অর্থ বন্টনে ব্যাপক দুর্নীতি ধরা পড়েছে। ইতিমধ্যেই ওই চার জেলা থেকে মোট ২ কোটি ২০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে’। এই দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে টানাপোড়েন বহুদিনের। রাজ্যের অভিযোগ, ‘দীর্ঘদিন ধরে একশো দিনের কাজের অর্থ আটকে রেখেছে কেন্দ্র’। অন্যদিকে, কেন্দ্র জানাচ্ছে-‘দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে বলেই ২০২২ সাল থেকে অর্থ দেওয়া বন্ধ রয়েছে’। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে। নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ১৫ মে-র মধ্যে এই রিপোর্ট জমা দিতে হবে। কেন্দ্রের অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী আদালতে জানান,’হাইকোর্ট নিযুক্ত চার সদস্যের কমিটি বিভিন্ন সময়ে রাজ্যের চারটি জেলা পরিদর্শন করে প্রকল্পের অর্থ বন্টনে দুর্নীতির প্রমাণ পায়’। মোট ৫ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকার অনিয়ম চিহ্নিত হয়েছে বলে জানানো হয়। এর মধ্যে ২.২০ কোটি টাকা ইতিমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির স্পষ্ট মন্তব্য, “যদি দুর্নীতি হয়ে থাকে, তবে কেন্দ্র পদক্ষেপ নিতে পারে। কেউ কেন্দ্রকে আটকে রাখতে পারে না।” সেইসঙ্গে প্রকৃত প্রাপকদের হাতে দ্রুত টাকা পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন রাজ্যের উচ্চ আদালত।রাজ্যের পক্ষে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “কেন্দ্রের সরকার উদ্ধত। তারা কোনও প্রস্তাব গ্রহণ করছে না। অনেক স্কিমে দীর্ঘদিন ধরে টাকা আসেনি।” মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “রাজ্য-কেন্দ্রের এই দ্বন্দ্বে ভুক্তভোগী হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।”কেন্দ্র জানিয়েছে , ‘১২ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই রাজ্যকে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য দুর্নীতির টাকা উদ্ধার করেছে, কিন্তু তা ফেরত দেয়নি।” আদালত প্রশ্ন তোলে, “এই উদ্ধার হওয়া অর্থ কি কেন্দ্রে ফেরত পাঠানো হয়েছে, না কি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাপকদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে?”উত্তরে কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা জানান, “আমরা যা করতে বলবে, সেটাই করব। সরাসরি মানুষের অ্যাকাউন্টে দিতে পারব না।”আদালত পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে আগামী ১৫ মে। তার আগে কেন্দ্রকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ। পাশাপাশি রাজ্যকেও ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে, কেন জব কার্ডধারীদের বেকার ভাতা দেওয়া হবে না?