২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বীরভূমের লোবা প্রস্তাবিত শিল্পাঞ্চল নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ডিভিসির বৈঠক

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১ ডিসেম্বর ২০২১, বুধবার
  • / 6

কৌশিক সালুই, বীরভূমঃ প্যাকেজ ও পুনর্বাসন জটে থমকে লোবা খাগড়াঘাট প্রস্তাবিত কোল মাইনস প্রকল্প। এবার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প নিয়ে ফের আলোচনায় বসল সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের বরাত পাওয়া এজেন্সি কেন্দ্রীয় সংস্থা দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনএর আধিকারিকরা।

 

বুধবার সিউড়ির জেলা প্রশাসন ভবনে ওই বৈঠকে উপস্থিত জেলাশাসক বিধান রায়, অনুব্রত মণ্ডল, বিধায়ক অভিজিৎ সিনহা, জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক শুভজ্যোতি ঘোষ, জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্র নাথ ত্রিপাঠী সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা। পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে  লোবা কৃষিজমি রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তারা বরাবর শিল্পের পক্ষে তবে জমি দাতাদের সঙ্গে কথা বলে আর্থিক পুনর্বাসন ও প্যাকেজ এর বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

 

ডেউচা পাচামি কয়লা শিল্পাঞ্চলের বিপুল পরিমাণে আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের ঘোষণার পর জেলার আরেক প্রস্তাবিত লোবার জয়দেব খাগড়াঘাট কয়লা শিল্প এলাকার মানুষজন আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন। এদিন সিউড়িতে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পকে কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়ে বৈঠক করেন। প্রায় বছর দুয়েক আগে ডিভিসির পূনর্বাসনের প্যাকেজ পছন্দ না হওয়াই কাজ থমকে যায়।

 

ডেউচা পাচামি কয়লা শিল্পাঞ্চলের জন্য গত মাসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় পুনর্বাসন এবং আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেন। সেই ঘোষণার পর আশাবাদী হতে শুরু করে থমকে যাওয়া জেলার অন্য কোল ব্লক লোবার মানুষজন। দীর্ঘ বিবাদ এবং বহু টালবাহানার পর ২০১৯  সালের শেষের দিকে দুবরাজপুরের লোবার খোলামুখ কয়লাখনির জট কাটতে শুরু করেছিল। কিন্তু তখন ডিভিসির ঘোষিত প্যাকেজে পুনরায় জটিলতা সৃষ্টি হয়।

 

ওই সময়ই রাজ্য সরকারের ডিভিসি এবং লোবা কৃষি জমি রক্ষা কমিটির ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে, লোবার জমির মালিকদের জন্য একটি প্রস্তাবিত প্যাকেজ ঘোষণা করে ডিভিসি। সেখানে বলা হয় প্রতি একর জমি পিছু ১৪  লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। অর্থাৎ বিঘা প্রতি ৫  লক্ষ টাকার কম জমির দাম। তাছাড়া জমি অধিগ্রহণের পর ডিভিসির পক্ষে সঙ্গে সঙ্গে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয় তাই যতদিন না চাকরি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে ততদিন গ্রামবাসীরা দুই হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে। তাছাড়া এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়ন করে স্কুল-হাসপাতাল সহ অন্যান্য সবরকম ব্যবস্থা রাখা হবে। কিন্তু জমির দাম এবং ভাতার পরিমাণ শুনে পিছু হটেন  কৃষিজমি রক্ষা কমিটির সদস্যরা। তারপর থেকেই সংশ্লিষ্ট কয়লা শিল্পাঞ্চল এলাকায় কাজ থমকে।

 

অন্যদিকে ডেউচা পাচামি কয়লা শিল্পাঞ্চলের জন্য জমির দাম বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা এবং জমি হারাদের জন্য একটি জুনিয়র কনস্টেবল পদে চাকরি,  এলাকার পাথর ব্যবসায়ী থেকে শ্রমিক,  কৃষিজীবী,  অন্যান্য ব্যবসায়ী সকলের জন্য বিপুল পরিমাণে আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসন ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।  লোবা কয়লা ব্লক কেন্দ্র সরকারের সংস্থা ডিভিসির প্রকল্প তাই সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষজন আশাবাদী রাজ্য সরকারের ঘোষিত প্যাকেজের থেকে বেশি থাকবে এবং প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়িত হবে।

লোবা কৃষি রক্ষা কমিটির সম্পাদক জয়দীপ মজুমদার বলেন, “আমাদের প্যাকেজ পছন্দ হয়নি তখন সেই প্যাকেজ শুনে আমাদের মনে হয়েছিল ডিভিসি চাইছে না আদৌ চায় কয়লা খনি হোক। আমরা চাই স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলে প্যাকেজ ও আর্থিক পূনর্বাসনের বিষয়টি নিশ্চিত করুক ডিভিসি।

 

বীরভূম জেলা শাসক বিধান রায় বলেন, ‘ডিভিসি কর্তৃপক্ষ লোবা এবং গঙ্গারামপুর চক কয়লা শিল্পাঞ্চল নিয়ে আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তারা নিজেদের মধ্যে পুনরায় আলোচনা করে প্রস্তাবিত লোবা কয়লার শিল্পাঞ্চল প্রকল্প নিয়ে ফের আমাদের সঙ্গে বসবে বলে জানিয়েছেন। তবে এই বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত হবে প্রশাসনের উচ্চ স্তরে’।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বীরভূমের লোবা প্রস্তাবিত শিল্পাঞ্চল নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ডিভিসির বৈঠক

আপডেট : ১ ডিসেম্বর ২০২১, বুধবার

কৌশিক সালুই, বীরভূমঃ প্যাকেজ ও পুনর্বাসন জটে থমকে লোবা খাগড়াঘাট প্রস্তাবিত কোল মাইনস প্রকল্প। এবার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প নিয়ে ফের আলোচনায় বসল সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের বরাত পাওয়া এজেন্সি কেন্দ্রীয় সংস্থা দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনএর আধিকারিকরা।

 

বুধবার সিউড়ির জেলা প্রশাসন ভবনে ওই বৈঠকে উপস্থিত জেলাশাসক বিধান রায়, অনুব্রত মণ্ডল, বিধায়ক অভিজিৎ সিনহা, জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক শুভজ্যোতি ঘোষ, জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্র নাথ ত্রিপাঠী সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা। পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে  লোবা কৃষিজমি রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তারা বরাবর শিল্পের পক্ষে তবে জমি দাতাদের সঙ্গে কথা বলে আর্থিক পুনর্বাসন ও প্যাকেজ এর বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

 

ডেউচা পাচামি কয়লা শিল্পাঞ্চলের বিপুল পরিমাণে আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের ঘোষণার পর জেলার আরেক প্রস্তাবিত লোবার জয়দেব খাগড়াঘাট কয়লা শিল্প এলাকার মানুষজন আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন। এদিন সিউড়িতে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পকে কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়ে বৈঠক করেন। প্রায় বছর দুয়েক আগে ডিভিসির পূনর্বাসনের প্যাকেজ পছন্দ না হওয়াই কাজ থমকে যায়।

 

ডেউচা পাচামি কয়লা শিল্পাঞ্চলের জন্য গত মাসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় পুনর্বাসন এবং আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেন। সেই ঘোষণার পর আশাবাদী হতে শুরু করে থমকে যাওয়া জেলার অন্য কোল ব্লক লোবার মানুষজন। দীর্ঘ বিবাদ এবং বহু টালবাহানার পর ২০১৯  সালের শেষের দিকে দুবরাজপুরের লোবার খোলামুখ কয়লাখনির জট কাটতে শুরু করেছিল। কিন্তু তখন ডিভিসির ঘোষিত প্যাকেজে পুনরায় জটিলতা সৃষ্টি হয়।

 

ওই সময়ই রাজ্য সরকারের ডিভিসি এবং লোবা কৃষি জমি রক্ষা কমিটির ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে, লোবার জমির মালিকদের জন্য একটি প্রস্তাবিত প্যাকেজ ঘোষণা করে ডিভিসি। সেখানে বলা হয় প্রতি একর জমি পিছু ১৪  লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। অর্থাৎ বিঘা প্রতি ৫  লক্ষ টাকার কম জমির দাম। তাছাড়া জমি অধিগ্রহণের পর ডিভিসির পক্ষে সঙ্গে সঙ্গে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয় তাই যতদিন না চাকরি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে ততদিন গ্রামবাসীরা দুই হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে। তাছাড়া এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়ন করে স্কুল-হাসপাতাল সহ অন্যান্য সবরকম ব্যবস্থা রাখা হবে। কিন্তু জমির দাম এবং ভাতার পরিমাণ শুনে পিছু হটেন  কৃষিজমি রক্ষা কমিটির সদস্যরা। তারপর থেকেই সংশ্লিষ্ট কয়লা শিল্পাঞ্চল এলাকায় কাজ থমকে।

 

অন্যদিকে ডেউচা পাচামি কয়লা শিল্পাঞ্চলের জন্য জমির দাম বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা এবং জমি হারাদের জন্য একটি জুনিয়র কনস্টেবল পদে চাকরি,  এলাকার পাথর ব্যবসায়ী থেকে শ্রমিক,  কৃষিজীবী,  অন্যান্য ব্যবসায়ী সকলের জন্য বিপুল পরিমাণে আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসন ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।  লোবা কয়লা ব্লক কেন্দ্র সরকারের সংস্থা ডিভিসির প্রকল্প তাই সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষজন আশাবাদী রাজ্য সরকারের ঘোষিত প্যাকেজের থেকে বেশি থাকবে এবং প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়িত হবে।

লোবা কৃষি রক্ষা কমিটির সম্পাদক জয়দীপ মজুমদার বলেন, “আমাদের প্যাকেজ পছন্দ হয়নি তখন সেই প্যাকেজ শুনে আমাদের মনে হয়েছিল ডিভিসি চাইছে না আদৌ চায় কয়লা খনি হোক। আমরা চাই স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলে প্যাকেজ ও আর্থিক পূনর্বাসনের বিষয়টি নিশ্চিত করুক ডিভিসি।

 

বীরভূম জেলা শাসক বিধান রায় বলেন, ‘ডিভিসি কর্তৃপক্ষ লোবা এবং গঙ্গারামপুর চক কয়লা শিল্পাঞ্চল নিয়ে আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তারা নিজেদের মধ্যে পুনরায় আলোচনা করে প্রস্তাবিত লোবা কয়লার শিল্পাঞ্চল প্রকল্প নিয়ে ফের আমাদের সঙ্গে বসবে বলে জানিয়েছেন। তবে এই বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত হবে প্রশাসনের উচ্চ স্তরে’।