‘ঘরে হিজাব পরুন, ‘হিন্দু সমাজে’ পরার প্রয়োজন নেই’, ফের বিতর্কিত মন্তব্য বিজেপি নেত্রী প্রজ্ঞা ঠাকুরের

- আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২, বৃহস্পতিবার
- / 5
পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ হিজাব নিয়ে বিজেপি নেত্রী প্রজ্ঞা ঠাকুরের করা মন্তব্যকে ঘিরে নতুন করে বিতর্কে জন্ম দিল। রাজ্যের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে প্রজ্ঞার মন্তব্য’, ঘরে হিজাব পরুন, বাইরে ‘হিন্দু সমাজে’ পরার প্রয়োজন নেই। বরাবরই প্রজ্ঞার মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। এবারেও পিছিয়ে থাকলেন না তিনি। হিজা বিতর্কে উত্তাল কর্নাটক সহ গোটা দেশ। বিতর্কে আঁচ ছড়িয়েছে বিদেশেও। কর্নাটকের কলেজে হিজাব পরে আসা নিষিদ্ধ করাকে সমালোচনে করেছেন বহু বিদেশের ব্যক্তিত্ব। একাধিক মুসলিম সংগঠন থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা সোচ্চার হয়েছেন। হিজাব নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। ভারতীয় জনতা পার্টি নেত্রী প্রজ্ঞা ঠাকুর মন্তব্য নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিল।
ভোপালের বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা ঠাকুর নিজের মন্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তিও দিয়ে বলেছেন যে, ‘গুরুকুলের’ শিষ্যরা ‘ভাগ্য’ (গেরুয়া) বস্ত্র পরতেন। কিন্তু এই শিষ্যরা যখন অন্য কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যায় তারা স্কুল ইউনিফর্ম পরে যায় এবং সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলে। ভোপালের বারখেরা পাঠানি এলাকার একটি মন্দিরের একটি অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেছেন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, প্রজ্ঞা বলেন ‘কিন্তু আপনি যদি দেশের স্কুল এবং কলেজের নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেন এবং হিজাব পরা শুরু করেন তাহলে তা মেনে নেওয়া হবে না।” বিজেপি নেত্রী আরও বলেন, ‘হিজাব হল একটি পর্দা। যারা আপনাকে খারাপ নজরে দেখছেন তাঁদের থেকে আড়াল করার জন্য পর্দার ব্যবহার প্রয়োজন। কিন্তু এটি নিশ্চিত যে হিন্দুরা তাঁদের খারাপ নজরে দেখেন না কারণ হিন্দুরা মহিলাদের পুজো করেন।’
প্রজ্ঞা ঠাকুর একটি ‘শ্লোক’ উচ্চারণ করার সময় বলেছেন যে, ‘সনাতন ধর্মে’ যেখানে নারীদের শ্রদ্ধা করা হয় না সেটি একটি শ্মশানের মতো। মুসলিমদের মধ্যে বিয়ের প্রথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘কোনও জায়গায় হিজাব পরার দরকার নেই। যাঁরা নিজেদের বাড়িতে নিরাপদ নন তাঁদের হিজাব পরতে হবে। বাইরে যেখানে ‘হিন্দু সমাজ’ রয়েছে সেখানে হিজাব পরার প্রয়োজন নেই। বিশেষত সেইসব জায়গায় যেখানে তাঁরা পড়াশোনা করতে যান।’
উল্লেখ্য, গত ২৮ ডিসেম্বর কর্নাটকের উদুপি জেলায় হিজাব পরিহিতাদের কলেজে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তার পরেই বিতর্কের সূত্রপাত হয়। তার পর থেকেই সেই উত্তাপের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে কর্নাটকে হাইকোর্টে এই মামলাটি বিচারাধীন। মামলার নিষ্পত্তি হওয়া অবধি কর্নাটক হাইকোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে ধর্মীয় পোশাক পরে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া যাবে না।
অন্যদিকে কয়েকটি ছাত্র গোষ্ঠী উদুপি জেলার ডেপুটি কমিশনারের কাছে একটি পিটিশন জমা দিয়ে তারা জানিয়েছেন, যে হাইকোর্ট শুধুমাত্র সেই কলেজগুলিতে হিজাব পরা নিষেধ করেছে যেখানে উন্নয়ন কমিটিগুলি ছাত্রদের জন্য ইউনিফর্ম নির্ধারণ করেছে। বেশ কয়েকটি কলেজ আদালতের অন্তর্বর্তী আদেশের অপব্যবহার বা ভুল ব্যাখ্যা করছে।
এদিকে বেশ কয়েকদিন ধরে চলা এই বিতর্কের মধ্যে প্রাক বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে হিজাব পরা নিয়ে কলেজে প্রবেশে বাধার দৃশ্য সামনে এসেছে। গত কয়েকদিনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জোর করে হিজাব অপসারণের নিন্দা জানিয়েছেন বুধবার বেশ কয়েকটি মুসলিম সংগঠন এবং ধর্মীয় নেতারা।