জার্মানিতে সিরিয়ার শরণার্থী ও ইউক্রেনিয়ানদের জন্য অভ্যর্থনা আলাদা

- আপডেট : ১ এপ্রিল ২০২২, শুক্রবার
- / 6
পুবের কলম প্রতিবেদক: দা রাশিয়ার আগ্রাসনের পর জার্মানি ইউক্রেনের শরণার্থীদের জন্য তাদের সীমান্ত খুলে দিয়েছে। প্রায় ৪০ লক্ষ ইউক্রেনিয়ান এই মুহূর্তে দেশ ছাড়া হয়েছেন তাদের মধ্যে ১ লক্ষ ৫০ হাজার জার্মানির রাজধানী বার্লিনে এসে পৌঁছেছেন, আরও মানুষ আসছেন ইউক্রেন থেকে। জার্মান সরকার মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে যুদ্ধের সময়। সিরিয়ার শরণার্থীদেরও আশ্রয় দিয়েছিল অনেক বাধা বিপত্তি ও বিতর্কের পর। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে সিরিয়ার গৃহহারা সর্বহারা মানুষ প্রাণ বাঁচতে জার্মানিতে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু তারা এখন দেখছে ইউক্রেন থেকে আসা ইউরোপীয় শরণার্থীদের জন্য অভ্যর্থনার আলাদা ব্যবস্থা এই দেশে। অথচ সিরিয়ানদের প্রথম থেকেই ক্রিমিনাল ভাবা হয়েছিল। মনে হবে আন্তরিকভাবে নয়, বাধ্য হয়ে সিরিয়ানদের যেন আশ্রয় দিয়েছিল আর এখন ইউক্রেনের মানুষদের জন্য আন্তরিকতা ও সহানুভূতির বন্যা বইছে।
৩৪ বছরের জাওয়াদ আলজো সংবাদ মাধ্যমকে জানান, আমি সিরিয়া থেকে ২০১৬তে জার্মানিতে এসেছি। আমাদেরকে মিডিয়া এবং সরকারি প্রশাসন ক্রিমিনাল হিসেবে আচরণ করেছে। কিন্তু ইউক্রেনিয়ানদের জন্য সব রাজনৈতিক দল ও সরকার অভ্যর্থনার আয়োজন করেছে। শরণার্থীদের জন্য একই নীতি নেওয়া হয়নি। ইউরোপীয়ানদের জন্য আলাদা আর আরব মুসলিমদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা।
৩৫ বছরের আহমদ কালাজি নিজে একজন সাংবাদিক দামাস্কাস থেকে মাস্টার ডিগ্রি করেছিল। বর্তমানে বার্লিনে থাকছেন। তিনি বলেন, আমাদের উপর রাশিয়ার বিমান হামলা হয়েছিল ইউক্রেনের উপর যেমন হচ্ছে। আমাদের দুশমন এক, আমরা শরণার্থী, অন্য দেশে আশ্রয় নিতে এসেছি কিন্তু শরণার্থীদের মধ্যেও বাদ বিচার হচ্ছে এই দেশে, এটা খুবই খারাপ।
৩১ বছরের আমিনা সিরিয়ান ক্যাম্পেইন গ্রুপের সদস্যা বার্লিনে থাকেন। আমিনা বললেন, সরকার ইউক্রেনবাসীর জন্য অবশ্য মদদ করবে কেন না ইউক্রেনের মানুষ রিফিউজিদের অভিজ্ঞতা লাভ করেনি ইতিপূর্বে। জার্মানের রাজনৈতিক দল এই সব নবাগতদের সাদরে অর্ভ্যত্থনা জানাচ্ছে তবে এই ধরনের অর্ভ্যত্থনা আমরা পাইনি। মানবিকতার দাবী ছিল সব অসহায়দের সঙ্গে সমান ব্যবহার করা তারা যে যেকোনও দেশ থেকেই আসুক না কেন, মাথার চুলের রঙ ও চোখের রঙ যাই হোক না কেন সবারই পরিচয় রিফিউজি। ইউক্রেনিয়ানদের জন্য প্রতিটি স্তরে প্রতিটি পদক্ষেপে অভূতপূর্ব অভ্যর্থনা দেখছি, নিশ্চই ভাল উদ্যোগ তবে আমরা আশা করবো ইউক্রেনে যুদ্ধ থেমে যাবে আর এই অসহায় মানুষরা ঘরে ফিরবে। আমাদের তো ফেরার ব্যবস্থা নেই। ইউরোপীয়ানদের ভয়াবহ যুদ্ধের অভিজ্ঞতা হল। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে আমরা একই শ্রেণির। আমাদের দুশমন ছিল রাশিয়া, আর এদেরও রাশিয়া। আমরা আগে এসেছি। আর এরা এখন আসছে। ক্যাম্প আর খাদ্য দিয়ে কি এই সমস্যার সমাধান হবে। মানবিকতার মূল উৎপাটন করে ফেলা হচ্ছে। গায়ের জোরে উৎখাত করা হচ্ছে সান অব দ্য সয়েলদের এই মৌলিক বিষয়টির সমাধান দরকার।