মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ বাড়ছে, বেশি আক্রান্ত সমকামীরা
- আপডেট : ২১ মে ২০২২, শনিবার
- / 6
পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে বিরল মাঙ্কিপক্স। এ নিয়ে ইউরোপ ও আমেরিকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত আমেরিকা– ব্রিটেন– কানাডা– অস্ট্রেলিয়া– স্পেন– পর্তুগাল-সহ বেশকয়েকটি দেশে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। মনে করা হচ্ছে– সবমিলিয়ে এই পক্সে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা শতাধিক। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন– এই রোগ সমকামী পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি ছড়াচ্ছে। এর প্রমাণও মিলেছে। স্পেন ও পর্তুগালে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তদের বেশিরভাগই সমকামী বলে জানা গিয়েছে। তাই বলা হচ্ছে– যৌন মিলনের মাধ্যমেও এই মাঙ্কিপক্স দ্রুত সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
জ্বর– গায়ে ব্যথা– আকারে বড় বসন্তের মতো গায়ে গুটি গজিয়ে ওঠাকে আপাতত মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মাঙ্কিপক্সের একটি রূপ এতটাই ভয়ানক যে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ১০ শতাংশ তাতে মারাও যেতে পারেন। তবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সুস্থ হয়ে যান। এ রোগে প্রাণহানির সংখ্যা খুবই কম। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার কিছু দেশে হাজার হাজার মানুষ এ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। তবে ইউরোপ ও উত্তর আফ্রিকায় সংক্রমণের ঘটনা এটি প্রথম। নতুন এই প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় ব্রিটেন ও ইউরোপের দেশগুলোর স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কাজ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সম্প্রতি ইতালি ও অস্ট্রেলিয়াতে এই রোগ শনাক্ত হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহকারী মহাপরিচালক সোসে ফল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন– ‘পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনকারী পুরুষের মধ্যে আমরা এই রোগের সংক্রমণ দেখছি। এই নতুন তথ্যের বিষয়টি আমাদের আরও ভালোভাবে তদন্ত করতে হবে।’ ব্রিটিশ গবেষকেরা বলেন– মাঙ্কিপক্সকে আগে যৌনবাহিত রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। কিন্তু আমেরিকার রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা (সিডিসি) বলছে– ‘যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে’ বেশিরভাগ মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।
মাঙ্কিপক্স কী?
মাঙ্কিপক্স এক ধরনের ভাইরাস। বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে এটি অনেকটা জল বসন্তের ভাইরাসের মতো। তবে এর ক্ষতিকারক প্রভাব কম– এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন– এর সংক্রমণের হারও কম। পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার নিরক্ষীয় বনাঞ্চলে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। মাঙ্কিপক্স দু’ধরনের হয়ে থাকে— মধ্য আফ্রিকান এবং পশ্চিম আফ্রিকান।
উপসর্গ কী?
এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ হল জ্বর– মাথাব্যথা– হাড়ের জয়েন্ট– মাংসপেশিতে ব্যথা এবং অবসাদ। জ্বর শুরু হওয়ার পর দেহে গুটি দেখা দেয়। এসব গুটি শুরুতে দেখা দেয় মুখে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে হাত এবং পায়ের পাতা-সহ দেহের সব জায়গায়। এই গুটির জন্য রোগীর দেহে চুলকানি হয়। পরে গুটি থেকে ক্ষত হয়। গুটিবসন্তের মতোই রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলেও দেহে এসব ক্ষত চিহ্ন রয়ে যায়।
কীভাবে ছড়ায় মাঙ্কিপক্স?
সংক্রমিত রোগীর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ থেকে এই ভাইরাস ছড়ায়। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে– ত্বকের ক্ষত থেকে এবং নাক– মুখ ও চোখের ভেতর দিয়ে এই ভাইরাস মানুষের দেহে প্রবেশ করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন– বানর– ইঁদুর– কাঠবিড়ালি– এমনকী মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগীর ব্যবহৃত বিছানাপত্র থেকেও এই ভাইরাস অন্যকে সংক্রমিত করতে পারে।