১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ছাড়া পেলেন ৯৯ বন্দি

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৭ অগাস্ট ২০২২, বুধবার
  • / 5

পুবের কলম প্রতিবেদকঃ  স্বাধীনতা দিবসের মিলল স্বাধীনতা সংশোধনাগার থেকে ছুটি পেলেন ৯৯ বন্দি। আর এই ৯৯ জন সাজা প্রাপ্ত কয়েদির জন্য সকাল থেকেই তাদের পরিবারের লোকেরা জেলের গেটের বাইরে হাজির হয়ে ছিলেন। যারা ছাড়া পেলেন তাদের বেশিরভাগ যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী। যারা জেল থেকে বেরোলেন, তারা বেশিরভাগই খুনের আসামী। এই ক’বছরে, এদের কারও সংসার ভেঙেছে। কেউ বা মা-বাবাকে হারিয়েছেন। কারও আত্মীয় জেল খাটা আসামী বলে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। কারও আত্মীয়রা কোনও দিন খোঁজ-খবর নেয়নি। তারা স্বাধীনতা দিবসের দিন জেল থেকে মুক্ত হল।

জেলের গেটের বাইরে এসে কেউ এদিক-ওদিক তাকিয়ে দেখলেন আত্মীয়রা এসেছে কিনা! অনেকেই আত্মীয়দের সঙ্গে হাসি মুখে বাড়ি ফিরলেন। প্রেসিডেন্সি জেল থেকে এবার ১১ জন কয়েদিকে ছাড়া হয়েছে।

নীলকান্ত পাল,বাড়ি হরিপাল থানার মোড়া গোপীনাথপুর গ্রামে। জেলে ঢোকার পর স্ত্রী আর কোনও দিন খোঁজ নেয়নি। বছর পাঁচেকের একটি ছেলে ছিল। ছেলেকে নিয়ে স্ত্রীর বাপের বাড়িতে উঠেছিল। তারপর থেকে নীলকান্ত মৃত বলে তিনি সব জায়গায় ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। নীলকান্তের বক্তব্য, বৃদ্ধা মা আছে। তাকেই তিনি সেবা করবেন। স্ত্রী বোধহয় অন্যের হয়ে গেছে।

 

আরও এক বন্দি দীপক সানি ছত্তিশগড়ের রায়পুরে বাড়ি। কলকাতায় বটতলা থানা এলাকায় স্কুল থেকে একটি ছোট্ট শিশুকে অপহরণ করতে গিয়ে ধরা পড়ে যায়। তারপর থেকে ৬ বছর জেল কাটিয়ে বাড়ি ফিরছে। এদিন মুক্তি পাওয়া এদের প্রত্যেকেরই কারও ছয় মাস থেকে এক বছর পরে জেল থেকে বেরোনোর কথা ছিল। জেলে ভাল কাজ,  ভাল ব্যবহারের জন্য কারা দফতর তাদের মুক্তি দেয় ।

 

জেলে ছিলেন, ওড়িশার এক ব্যক্তি, তিনি খুনের মামলায় দশ বছরের বেশি জেল খেটেছেন। জেলের বাইরে যখন এলেন, তখন ব্যাগে মিষ্টি ফুলের তোড়া একটি শংসাপত্র ছিল।

 

আরও পড়ুন: শীঘ্রই খুলছে আলিপুর জেলের  ‘ইন্ডিপেনডেন্স মিউজিয়াম’, দেখা যাবে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ব্যবহৃত জেলকুঠুরি থেকে ফাঁসিকাঠ

 

ব্যাগটা হাতে নিয়ে হনহন করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয় ‘কোথায় যাবেন’  তিনি বললেন বাড়ির সবাই ত্যাগ করেছে। তিনি ওড়িশায়  ফিরে যাবেন। কোথায় উঠবেন? কি করবেন? সেটা জানেন না। বললেন, বাইরে যদি ভাল না লাগে, পুলিশকে বলব আবার জেলে ফিরিয়ে দিতে।’ বন্দিদশা কাটিয়েও তিনি যে হতাশতার ছাপ স্পষ্ট।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ছাড়া পেলেন ৯৯ বন্দি

আপডেট : ১৭ অগাস্ট ২০২২, বুধবার

পুবের কলম প্রতিবেদকঃ  স্বাধীনতা দিবসের মিলল স্বাধীনতা সংশোধনাগার থেকে ছুটি পেলেন ৯৯ বন্দি। আর এই ৯৯ জন সাজা প্রাপ্ত কয়েদির জন্য সকাল থেকেই তাদের পরিবারের লোকেরা জেলের গেটের বাইরে হাজির হয়ে ছিলেন। যারা ছাড়া পেলেন তাদের বেশিরভাগ যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী। যারা জেল থেকে বেরোলেন, তারা বেশিরভাগই খুনের আসামী। এই ক’বছরে, এদের কারও সংসার ভেঙেছে। কেউ বা মা-বাবাকে হারিয়েছেন। কারও আত্মীয় জেল খাটা আসামী বলে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। কারও আত্মীয়রা কোনও দিন খোঁজ-খবর নেয়নি। তারা স্বাধীনতা দিবসের দিন জেল থেকে মুক্ত হল।

জেলের গেটের বাইরে এসে কেউ এদিক-ওদিক তাকিয়ে দেখলেন আত্মীয়রা এসেছে কিনা! অনেকেই আত্মীয়দের সঙ্গে হাসি মুখে বাড়ি ফিরলেন। প্রেসিডেন্সি জেল থেকে এবার ১১ জন কয়েদিকে ছাড়া হয়েছে।

নীলকান্ত পাল,বাড়ি হরিপাল থানার মোড়া গোপীনাথপুর গ্রামে। জেলে ঢোকার পর স্ত্রী আর কোনও দিন খোঁজ নেয়নি। বছর পাঁচেকের একটি ছেলে ছিল। ছেলেকে নিয়ে স্ত্রীর বাপের বাড়িতে উঠেছিল। তারপর থেকে নীলকান্ত মৃত বলে তিনি সব জায়গায় ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। নীলকান্তের বক্তব্য, বৃদ্ধা মা আছে। তাকেই তিনি সেবা করবেন। স্ত্রী বোধহয় অন্যের হয়ে গেছে।

 

আরও এক বন্দি দীপক সানি ছত্তিশগড়ের রায়পুরে বাড়ি। কলকাতায় বটতলা থানা এলাকায় স্কুল থেকে একটি ছোট্ট শিশুকে অপহরণ করতে গিয়ে ধরা পড়ে যায়। তারপর থেকে ৬ বছর জেল কাটিয়ে বাড়ি ফিরছে। এদিন মুক্তি পাওয়া এদের প্রত্যেকেরই কারও ছয় মাস থেকে এক বছর পরে জেল থেকে বেরোনোর কথা ছিল। জেলে ভাল কাজ,  ভাল ব্যবহারের জন্য কারা দফতর তাদের মুক্তি দেয় ।

 

জেলে ছিলেন, ওড়িশার এক ব্যক্তি, তিনি খুনের মামলায় দশ বছরের বেশি জেল খেটেছেন। জেলের বাইরে যখন এলেন, তখন ব্যাগে মিষ্টি ফুলের তোড়া একটি শংসাপত্র ছিল।

 

আরও পড়ুন: শীঘ্রই খুলছে আলিপুর জেলের  ‘ইন্ডিপেনডেন্স মিউজিয়াম’, দেখা যাবে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ব্যবহৃত জেলকুঠুরি থেকে ফাঁসিকাঠ

 

ব্যাগটা হাতে নিয়ে হনহন করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয় ‘কোথায় যাবেন’  তিনি বললেন বাড়ির সবাই ত্যাগ করেছে। তিনি ওড়িশায়  ফিরে যাবেন। কোথায় উঠবেন? কি করবেন? সেটা জানেন না। বললেন, বাইরে যদি ভাল না লাগে, পুলিশকে বলব আবার জেলে ফিরিয়ে দিতে।’ বন্দিদশা কাটিয়েও তিনি যে হতাশতার ছাপ স্পষ্ট।