২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে এ তুলকালাম, প্রসূতিকে খুনের অভিযোগ! মৃতার দেহে অসংখ্য ক্ষতের দাগ

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২২, সোমবার
  • / 7

পুবের কলম প্রতিবেদক:  বেড থেকে উধাও রোগী। আর এই নিয়ে রবিবার দুপুর থেকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে শুরু হয় তোলপাড়। অবশেষে সোমবার সকালে সেই রোগীকে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের পিছন থেকে পাওয়া যায়।

রোগী পরিজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, পরিজনেরা বাইরে  আমাদের সঙ্গেই রাত্রিযাপন করছিলেন। সবরকম কথা হচ্ছিল। বলছিলেন মা ও সন্তান সুস্থ আছে।  হঠাৎ কী যে হল বোঝাই যাচ্ছে না। ঘটনার পর উলটে পুলিশরা এসে পরিজনদের বকাবকি করতে থাকে। এই ঘটনার রহস্য কী পরিজনরাই বুঝে উঠতে পারছেন না।

রবিবার রাত পর্যন্ত ‘ খোঁজাখুঁজির পর কোনও কিনারা পাওয়া যায়নি তাঁর। অবশেষে সোমবার সকালে যান ওই রোগীকে উদ্ধার করা হয়, সেই সময় দেখা যায়, রোগীর কান ইঁদুরে বা কুকুরে খেয়ে নিয়েছে। পিছনের হাত দু’টিও বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতালের আধিকারিকরা।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে হাসপাতালের সুপার ডা. অর্ঘ্য মিত্র বলেন, স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে বিষয়টি নিয়ে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে তদন্তও শুরু হয়েছে। ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ঘটনাস্থলে তদন্তে লালবাজারের হোমিসাইড শাখার ওসি। এই ঘটনার খবর দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য ভবনে।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃত প্রসূতির নাম আছিয়া বিবি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সন্দেশখালির বাসিন্দা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ (চিত্তরঞ্জন) হাসপাতালে গত বুধবার ভর্তি হন। তার পরের দিনই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। কিন্তু রবিবার হঠাৎ তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। সোমবার সকালে তাঁকে পাওয়া যায়। এই ঘটনায় খুনের অভিযোগ তুলেছে পরিবার।

এ দিকে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতালে যে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে, তাঁদের কর্তব্যের ফাঁক দিয়ে কীভাবে রোগী যেতে পারে। অথবা ওই রোগীকে কীভাবে নিয়ে যাওয়া হল।

চারতলার উপরে তো কাচ ও রেলিং দিয়ে ঘেরা, তাহলে কীভাবে ওই রোগী নীচে ঝাঁপ দিতে পারে? আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, ওই রোগীর পিছনের হাতই বাঁধা ছিল না কেন। এ দিন হাসপাতাল চত্বরের দায়িত্বে থাকা পুলিশ আধিকারিকরা জানান, এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনও কিছু বলা সম্ভব নয়।

পরিজনদের প্রশ্ন, রবিবারই শৌচাগারে কেন খোঁজ করা হল না? শৌচাগারের পিছনের জায়গায় দেহ এল কীভাবে? সকাল সাড়ে দশটার সময় দেহ উদ্ধার হল।

সংবাদমাধ্যম পৌঁছনোর পর দুপুর ১২টা নাগাদ দেহ উদ্ধারের স্থল পুলিশের তরফে ঘিরে ফেলা হয়। গোটা বিষয়টি আপাতত খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে রয়েছেন উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।

ওই মহিলার বড় বোনের কথায়, ‘আমার আব্বা-মা কাল রাতেও দেখতে চেয়েছিল। কিন্তু ওরা দেখতে দেয়নি। সোমবার সকালেও আমরা ঢুকে বারবার বাথরুমে গিয়ে দেখার চেষ্টা করি। বাধা দেয় ওরা। এরই মধ্যে কীভাবে ওরা বাথরুমের ওপাশ থেকে ফেলে দেওয়া হল। বাথরুমের পিছনে শরীরটা মুখ থুবড়ে পড়েছিল।

কানটাও ছিল না। হাত দু’টো পিছনে বাঁধা। আরেক আত্মীয় জানান, তাঁরা বারবার দেখা করতে চেয়েছিলেন। যে জায়গা থেকে সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ দেহ উদ্ধার হয়, তার আগেও সেই জায়গা তাঁরা ঘুরে গিয়েছেন, কিন্তু দেহ দেখেননি। তার মধ্যেই কি কিছু হয়েছে? প্রশ্ন রোগীর পরিজনদের। খুন করেই দেহ ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে এ তুলকালাম, প্রসূতিকে খুনের অভিযোগ! মৃতার দেহে অসংখ্য ক্ষতের দাগ

আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২২, সোমবার

পুবের কলম প্রতিবেদক:  বেড থেকে উধাও রোগী। আর এই নিয়ে রবিবার দুপুর থেকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে শুরু হয় তোলপাড়। অবশেষে সোমবার সকালে সেই রোগীকে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের পিছন থেকে পাওয়া যায়।

রোগী পরিজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, পরিজনেরা বাইরে  আমাদের সঙ্গেই রাত্রিযাপন করছিলেন। সবরকম কথা হচ্ছিল। বলছিলেন মা ও সন্তান সুস্থ আছে।  হঠাৎ কী যে হল বোঝাই যাচ্ছে না। ঘটনার পর উলটে পুলিশরা এসে পরিজনদের বকাবকি করতে থাকে। এই ঘটনার রহস্য কী পরিজনরাই বুঝে উঠতে পারছেন না।

রবিবার রাত পর্যন্ত ‘ খোঁজাখুঁজির পর কোনও কিনারা পাওয়া যায়নি তাঁর। অবশেষে সোমবার সকালে যান ওই রোগীকে উদ্ধার করা হয়, সেই সময় দেখা যায়, রোগীর কান ইঁদুরে বা কুকুরে খেয়ে নিয়েছে। পিছনের হাত দু’টিও বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতালের আধিকারিকরা।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে হাসপাতালের সুপার ডা. অর্ঘ্য মিত্র বলেন, স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে বিষয়টি নিয়ে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে তদন্তও শুরু হয়েছে। ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ঘটনাস্থলে তদন্তে লালবাজারের হোমিসাইড শাখার ওসি। এই ঘটনার খবর দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য ভবনে।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃত প্রসূতির নাম আছিয়া বিবি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সন্দেশখালির বাসিন্দা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ (চিত্তরঞ্জন) হাসপাতালে গত বুধবার ভর্তি হন। তার পরের দিনই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। কিন্তু রবিবার হঠাৎ তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। সোমবার সকালে তাঁকে পাওয়া যায়। এই ঘটনায় খুনের অভিযোগ তুলেছে পরিবার।

এ দিকে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতালে যে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে, তাঁদের কর্তব্যের ফাঁক দিয়ে কীভাবে রোগী যেতে পারে। অথবা ওই রোগীকে কীভাবে নিয়ে যাওয়া হল।

চারতলার উপরে তো কাচ ও রেলিং দিয়ে ঘেরা, তাহলে কীভাবে ওই রোগী নীচে ঝাঁপ দিতে পারে? আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, ওই রোগীর পিছনের হাতই বাঁধা ছিল না কেন। এ দিন হাসপাতাল চত্বরের দায়িত্বে থাকা পুলিশ আধিকারিকরা জানান, এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনও কিছু বলা সম্ভব নয়।

পরিজনদের প্রশ্ন, রবিবারই শৌচাগারে কেন খোঁজ করা হল না? শৌচাগারের পিছনের জায়গায় দেহ এল কীভাবে? সকাল সাড়ে দশটার সময় দেহ উদ্ধার হল।

সংবাদমাধ্যম পৌঁছনোর পর দুপুর ১২টা নাগাদ দেহ উদ্ধারের স্থল পুলিশের তরফে ঘিরে ফেলা হয়। গোটা বিষয়টি আপাতত খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে রয়েছেন উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।

ওই মহিলার বড় বোনের কথায়, ‘আমার আব্বা-মা কাল রাতেও দেখতে চেয়েছিল। কিন্তু ওরা দেখতে দেয়নি। সোমবার সকালেও আমরা ঢুকে বারবার বাথরুমে গিয়ে দেখার চেষ্টা করি। বাধা দেয় ওরা। এরই মধ্যে কীভাবে ওরা বাথরুমের ওপাশ থেকে ফেলে দেওয়া হল। বাথরুমের পিছনে শরীরটা মুখ থুবড়ে পড়েছিল।

কানটাও ছিল না। হাত দু’টো পিছনে বাঁধা। আরেক আত্মীয় জানান, তাঁরা বারবার দেখা করতে চেয়েছিলেন। যে জায়গা থেকে সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ দেহ উদ্ধার হয়, তার আগেও সেই জায়গা তাঁরা ঘুরে গিয়েছেন, কিন্তু দেহ দেখেননি। তার মধ্যেই কি কিছু হয়েছে? প্রশ্ন রোগীর পরিজনদের। খুন করেই দেহ ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।