তাওয়াংয়ের চিনা আগ্রাসনের আঁচ পড়ল লোকসভায়, কংগ্রেসকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ অমিত শাহের

- আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার
- / 9
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : অরুণাচলের তাওয়াংয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এলাকায় ভারত ও চিনের ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’ (পিএলএ)-র মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার আঁচ পড়ল লোকসভার অধিবেশনে। সরকারি বিবৃতির দাবি করে অধিবেশনে সোচ্চার হল কংগ্রেস সহ বিরোধীরা। তাদের দাবি কেন্দ্র সরকার শুধুমাত্র বিবৃতি দিয়ে দায় সারলেই চলবে না, তাদের আলোচনায় বসতে হবে।
এই প্রসঙ্গে তারা সংসদে অন্য কাজ থামিয়ে আলোচনার দাবি করেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বিবৃতির পরই সোচ্চার হয় বিরোধীরা। এর পরেই তারা লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করেন।
এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসকে নিশানা করে কড়া আক্রমণ শানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, সরকারি জবাব চাওয়াটাই আসল উদ্দেশ্য নয়, কংগ্রেসের এই বিক্ষোভের পিছনে আলাদা কারণ আছে।
এদিন অরুণাচলের তাওয়াংয়ে সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে সংসদে বিবৃতি দেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বিবৃতির আগেই অমিত শাহ কংগ্রেসকে নিশানা করে বলেন, ‘প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিবৃতি দেবেন এটা জানার পরেই কংগ্রেস ইচ্ছাকৃতভাবে প্রশ্নোত্তর পর্ব বানচাল করে দিল। প্রশ্নোত্তর পর্বের তালিকা দেখেছি। সেখানে ৫ নম্বর প্রশ্নটি দেখেই বুঝতে পেরেছি কংগ্রেস কেন এই ধরনের কাজ করছে। কংগ্রেসের উদ্বেগ আমরাও বুঝতে পারছি। একজন কংগ্রেস সাংসদ প্রশ্নও করেছিলেন, কিন্তু আমাদের কাছেও তার জবাব তৈরি ছিল। তবে কংগ্রেস অধিবেশন ভণ্ডুল করে দিল’।
প্রসঙ্গত, অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি মন্ত্রিগোষ্ঠীর সিদ্ধান্ত মেনেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধির নামে ফাউন্ডেশনের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান তাঁর স্ত্রী তথা কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধি।
এই ঘটনার জের টেনে অমিত শাহ বলেন, যদি অধিবেশন চলত, তাহলে সংসদে দাঁড়িয়ে এর উপযুক্ত জবাব দিতাম। বলতাম, ২০০৫-০৬ এবং ২০০৬-০৭ অর্থবর্ষে রাজীব গান্ধি, ফাউন্ডেশন ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা অনুদান হিসাবে চিন দূতাবাস থেকে পেয়েছে। যা ‘ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্যাক্ট’ (এফসিআরএ)-এ নীতির পরিপন্থী। তাই আইন মেনেই ওই সংস্থার রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে।’ এ বিষয়ে এখনও কংগ্রেসের কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে পূর্ব লাদাখে গালওয়ান সেনা সংঘর্ষের পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে চিনা আগ্রাসনে উত্তপ্ত হল অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং জেলার ইয়াংস্টে এলাকা। ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং চিনা পিএলএ-র মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৯ ডিসেম্বর চিনা পিএলএ-র একটি অবৈধ নির্মাণকাজে বাধা দিয়েছিল ভারতীয় সেনা। তার পরেই এই সংঘর্ষের সূত্রপাত। এর পর ১১ ডিসেম্বরও দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে দুই দেশের সেনাবাহিনীরই কয়েকজন সদস্য সামান্য আহত হন। এই ঘটনার পর পরই নড়েচড়ে বসে ভারত। চিন যাতে ভারতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘন করতে না পারে তার জন্য আকাশপথেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।