২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সত্যতা মিথ্যা খবরের শিকার হয়েছে বলে মনে করেন ভারতের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৫ মার্চ ২০২৩, রবিবার
  • / 7

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ভ্রমণ এবং তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে মানুষ বিশ্বের প্রায় সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি, ব্যক্তিগতভাবে আমরা যা বিশ্বাস করি তাকে স্বীকার করা থেকে পিছিয়ে এসেছে মানুষ। আজকের যুগ হল ভুয়ো খবরের যুগ। যার সবচেয়ে বড় শিকার আজ সভ্যতা। শুক্রবার আমেরিকান  বার অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উক্ত মন্তব্যগুলি করেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।

তিনি বলেন, আধুনিক কালে বিশ্বের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল সহনশীলতার অভাবের মোকাবিলা করা। মানুষের মধ্যে ধৈর্য্য এবং সহনশীলতার অভাবই আজকের যুগের সবচাইতে বড় সমস্যা। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় মনে করেন এই সমস্যার উদ্ভবের মূল কারণ হল প্রযুক্তির আবিষ্কার। প্রধান বিচারপতি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় যদি কোনও খবর সম্প্রচার করা হয় তখন সেটি সঙ্গে সঙ্গে পল্লবিত হয়ে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।

দু’দিনের এই অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী ভাষণে প্রধান বিচারপতি আক্ষেপ করে বলেন, বিচারপতিদেরও এখন ট্রোল করা হচ্ছে, তাদেরও নিষ্কৃতি নেই।  ছোট ছোট জিনিষ যা আমরা করে থাকি, ছোট ছোট জিনিষে আমরা যা বিশ্বাস করি সেগুলি সাধারণ মানুষ যা করে যা করে ঠিক সেরকমই। আমরা কোনও ব্যতিক্রমী জীব নই।

তবে সবসময় বিচারপতিদেরও আশঙ্কা থাকে যে তাদেরও কেউ না কেউ ট্রোল করবে যারা বিচাপতির সঙ্গে সহমত পোষণ করে না। আমরা এখন এমন এক সময়ে বাস করছি যখন মানুষের ধৈর্য্য             অনেক কমে গিয়েছে। তাদের সহনশীলতা কমে গেছে কারণ তারা সেইসব কথা বিশ্বাস করতে ভুলে গেছে যা তাদের দৃষ্টিকোণে সঠিক নয়।

নিজেরা তারা যা বিশ্বাস করে তার বাইরেও যে সত্যতা বিরাজ করছে সেটা তারা মানতে চায় না। প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রযুক্তির আবিষ্কারে মানবজাতির কল্যাণ হয়েছে বটে কিন্তু প্রযুক্তির প্রসারের ফলে বিপদও দেখা দিয়েছে। সে বিপদ এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বিশ্বায়ণের সুযোগসুবিধার উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, তবে বিশ্বায়ণের অনেক সমস্যাও রয়েছে যেমন ঋতু পরিবর্তন, কোভিড-১৯, সন্ত্রাসবাদ এবং অসাম্যের বিস্তার।

২০০১ সালে আমেহিকার ওয়ার্লড ট্রেড সেন্টারে ৯/১১’র সন্ত্রাসী হামলার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসবের ফলে বিশ্বায়ণ বিরোধী চেতনার উন্মেষ হয়েছে। এই হামলার পর ভারতও কেঁপে উঠেছিল। ৯/১১ ছিল বিশ্বের এক বাস্তব ঘটনা। এই ঘটনার কয়েক বছর আগে ভারতও মুখোমুখি হয়েছিল এই ভয়ঙ্কর বাস্তবের।

ঋতু পরিবর্তন নিয়ে বিচারপতি বলেন, এটা আর এখন অভিজাত শ্রেণির আলোচনার বিষয় নয়। এরফলে প্রভাবিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিশ্বায়ণ সম্পর্কে তিনি বলেন, অর্থনীতির বিশ্বায়ণের সুফল ভোগ করছেন বেশি মাত্রায় স্বচ্ছল মানুষ। বাকিরা পাচ্ছেন ছিটেফোটা। তবে বিশ্বায়ণের ফলে ১৮৬১ সালে প্রণীত ভারতের দণ্ডবিধিতে পরিবর্তন এসেছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সত্যতা মিথ্যা খবরের শিকার হয়েছে বলে মনে করেন ভারতের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়

আপডেট : ৫ মার্চ ২০২৩, রবিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ভ্রমণ এবং তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে মানুষ বিশ্বের প্রায় সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি, ব্যক্তিগতভাবে আমরা যা বিশ্বাস করি তাকে স্বীকার করা থেকে পিছিয়ে এসেছে মানুষ। আজকের যুগ হল ভুয়ো খবরের যুগ। যার সবচেয়ে বড় শিকার আজ সভ্যতা। শুক্রবার আমেরিকান  বার অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উক্ত মন্তব্যগুলি করেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।

তিনি বলেন, আধুনিক কালে বিশ্বের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল সহনশীলতার অভাবের মোকাবিলা করা। মানুষের মধ্যে ধৈর্য্য এবং সহনশীলতার অভাবই আজকের যুগের সবচাইতে বড় সমস্যা। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় মনে করেন এই সমস্যার উদ্ভবের মূল কারণ হল প্রযুক্তির আবিষ্কার। প্রধান বিচারপতি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় যদি কোনও খবর সম্প্রচার করা হয় তখন সেটি সঙ্গে সঙ্গে পল্লবিত হয়ে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।

দু’দিনের এই অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী ভাষণে প্রধান বিচারপতি আক্ষেপ করে বলেন, বিচারপতিদেরও এখন ট্রোল করা হচ্ছে, তাদেরও নিষ্কৃতি নেই।  ছোট ছোট জিনিষ যা আমরা করে থাকি, ছোট ছোট জিনিষে আমরা যা বিশ্বাস করি সেগুলি সাধারণ মানুষ যা করে যা করে ঠিক সেরকমই। আমরা কোনও ব্যতিক্রমী জীব নই।

তবে সবসময় বিচারপতিদেরও আশঙ্কা থাকে যে তাদেরও কেউ না কেউ ট্রোল করবে যারা বিচাপতির সঙ্গে সহমত পোষণ করে না। আমরা এখন এমন এক সময়ে বাস করছি যখন মানুষের ধৈর্য্য             অনেক কমে গিয়েছে। তাদের সহনশীলতা কমে গেছে কারণ তারা সেইসব কথা বিশ্বাস করতে ভুলে গেছে যা তাদের দৃষ্টিকোণে সঠিক নয়।

নিজেরা তারা যা বিশ্বাস করে তার বাইরেও যে সত্যতা বিরাজ করছে সেটা তারা মানতে চায় না। প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রযুক্তির আবিষ্কারে মানবজাতির কল্যাণ হয়েছে বটে কিন্তু প্রযুক্তির প্রসারের ফলে বিপদও দেখা দিয়েছে। সে বিপদ এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বিশ্বায়ণের সুযোগসুবিধার উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, তবে বিশ্বায়ণের অনেক সমস্যাও রয়েছে যেমন ঋতু পরিবর্তন, কোভিড-১৯, সন্ত্রাসবাদ এবং অসাম্যের বিস্তার।

২০০১ সালে আমেহিকার ওয়ার্লড ট্রেড সেন্টারে ৯/১১’র সন্ত্রাসী হামলার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসবের ফলে বিশ্বায়ণ বিরোধী চেতনার উন্মেষ হয়েছে। এই হামলার পর ভারতও কেঁপে উঠেছিল। ৯/১১ ছিল বিশ্বের এক বাস্তব ঘটনা। এই ঘটনার কয়েক বছর আগে ভারতও মুখোমুখি হয়েছিল এই ভয়ঙ্কর বাস্তবের।

ঋতু পরিবর্তন নিয়ে বিচারপতি বলেন, এটা আর এখন অভিজাত শ্রেণির আলোচনার বিষয় নয়। এরফলে প্রভাবিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিশ্বায়ণ সম্পর্কে তিনি বলেন, অর্থনীতির বিশ্বায়ণের সুফল ভোগ করছেন বেশি মাত্রায় স্বচ্ছল মানুষ। বাকিরা পাচ্ছেন ছিটেফোটা। তবে বিশ্বায়ণের ফলে ১৮৬১ সালে প্রণীত ভারতের দণ্ডবিধিতে পরিবর্তন এসেছে।