ছাগল চরানোর অর্থে , উমরাহ পালন বৃদ্ধের
ইমামা খাতুন
- আপডেট :
২৮ এপ্রিল ২০২৩, শুক্রবার
- / 9
পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: বয়সের ভারে কুঁজো আবদুল কাদির বখশ (৮২)। জীবনের পড়ন্ত বেলায় পিছু ছাড়েনি অভাব। তাই পেটের তাগিদে ছাগল চরানোর কাজ করেন পাকিস্তানের বালুচিস্তানের এই বাসিন্দা। তবে শত দুঃখ-কষ্টের মধ্যেও তাঁর অন্তর আল্লাহর ভালোবাসায় পরিপূর্ণ। অসহায় হলেও বৃদ্ধ কাদির মনে পুষেছিলেন পবিত্র কাবাঘর ও রওজা শরিফ দেখার স্বপ্ন। স্বপ্ন পূরণে যতটুকু সম্ভব সঞ্চয় শুরু করেন। সম্প্রতি দীর্ঘ ১৫ বছরের জমানো অর্থ দিয়ে তিনি পবিত্র উমরাহ পালন করেছেন। মক্কায় তাঁর সঙ্গে কোনও গাইড ছিল না।
রমযান মাসে একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। তাতে একজন বৃদ্ধকে পবিত্র মসজিদে নববীতে লাঠি হাতে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। সাদা জুব্বা পরিহিত বৃদ্ধের দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ। হাঁটার ধরন থেকে মনে হয় কাউকে হারিয়েছেন বা কিছু খুঁজছেন। ভাইরাল ভিডিয়োয় কয়েক মিলিয়ন ভিউ হয়। তাঁর সাদাসিধে চলাফেরা ও সরল ব্যবহার মন জয় করে সবার। এমনকি সউদি যুবরাজ সালমানের উপদেষ্টা তুর্কি আল-শেখ তাঁর খোঁজ চেয়ে ট্যুইট করেন। উমরাহ শেষ করে গত শনিবার নিজ গ্রাম গোথ হাজি রহিমে ফিরে যান। গাছের পাতা ও ঘাস দিয়ে তৈরি ঝুপড়িতে তাঁকে অভিনন্দন জানান পরিচিতজনরা। পরদিন এক সংবাদকর্মীর আলাপে প্রথমবার এ বিষয়ে জানতে পারেন তিনি।
কাদির বখশ বলেন, ‘আমার পাঁচ সন্তান রয়েছে। ডিম ও লকড়ি বিক্রি করেই জীবন চালাতে হয়। আমাদের বসবাসের ঘর নেই; আমরা থাকি ঝুপড়িতে। অভাব-অনটনে দিন পার হয়। ১৫ বছর ধরে আমার মদিনায় যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। তবে অর্থ ছিল না। আমি আল্লাহর কাছে সাহায্যের জন্য দোয়া করেছি। এরপর ছাগল পালন করে অর্থ সঞ্চয় করি এবং পাসপোর্ট করে উমরাহ ভিসার আবেদন করি।’ বৃদ্ধ বলেন, ‘প্রথমবার মক্কা দেখে আমার খুশির সীমা ছিল না। আমি মনে করি আমার সব উদ্বেগ চলে গেছে। আমার অন্তর সন্তুষ্ট। আমার কোনও অভাব নেই। কারণ মক্কা ও নবী সা.র রওজা শরিফ জিয়ারতের বাসনা পূরণ হয়েছে।’