যেখানে কং শক্তিশালী, সেখানে ওদের সমর্থন, শর্তসাপেক্ষে বার্তা মমতার

- আপডেট : ১৫ মে ২০২৩, সোমবার
- / 11
,পুবের কলম প্রতিবেদক: বেশ কয়েকদিন ধরে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব¨্যােপাধ্যায় বলে আসছিলেন ২৪-এর লোকসভা ভোটে বিজেপি আর ক্ষমতায় আসবে না। আর কর্নাটক ভোটের পর বলেছিলেন, ২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে। আর তারপর সোমবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে আরও একবার জোটবার্তা দিলেন তিনি। যে যেখানে শক্তিশালী সেই দল সেখানে প্রার্থী দেবে এই ফর্মূলার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এদিন তিনি বলেন, ‘যেখানে কংগ্রেস শক্তিশালী সেখানে ওদের সমর্থন করব।’ একইসঙ্গে তিনি এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কংগ্রেসেরও উচিত অন্য দল যেখানে শক্তিশালী সেখানে তাদের সমর্থন করা। অর্থাৎ, তৃণমূল নেত্রী স্পষ্ট করে দিলেন, আসন্ন লোকসভা ভোটে মোদি সরকারকে ক্ষমতাচ্যূত করতে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলাতে রাজি তৃণমূল।
কংগ্রেসের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে ঠিক কি বলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো? মমতা এদিন বলেন, ‘যেখানে কংগ্রেস শক্তিশালী সেখানে ওদের সমর্থন করব। এই নিয়ে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। তবে ওদের (কংগ্রেস)-ও উচিত অন্যদলকে সমর্থন করা। আমরা কর্নাটককে সমর্থন করব, আর আপনারা রোজ এখানে (পশ্চিমবঙ্গে) আমাদের সঙ্গে লড়াই করবেন এটা তো ঠিক নয়।’ ২৪-এর নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী রণকৌশল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে কি হবে বলতে পারি না। আমি জাদুকর নই। জ্যোতিষীও নই। শুধু এটুকু বলতে পারি, যেসব জায়গায় আঞ্চলিক দলগুলি শক্তিশালী সেখানে বিজেপি লড়াই করতে পারবে না। কর্নাটকে বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষ রায় দিয়েছে। সবাইকে একসঙ্গে লড়াই করতে হবে। বাংলায় যেমন আমরা লড়াই করব, দিল্লিতে আপ, বিহারে জেডিইউ-আরজেডি-কংগ্রেস, তামিলনাড়ুতে ডিএমকে। ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা সহ অন্যান্য রাজ্যেও এইভাবে হবে। উত্তরপ্রদেশে অখিলেশরা প্রাধান্য পাবে। বলছি না কংগ্রেস সেখানে লড়াই করতে পারবে না। আলোচনা করে ঠিক করা হোক।’
সম্প্রতি বিজেপি বিরোধী জোট নিয়ে একাধিকবার ‘ওয়ান টু ওয়ান ফাইট’-এর ফর্মূলার কথা বলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কিছুদিন আগেই মমতার সঙ্গে নবান্নে এসে দেখা করে গিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব, কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিএস নেতা কুমারাস্বামী, সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব প্রমুখ। এছাড়াও মমতা ওড়িশায় গিয়ে দেখা করে এসেছিলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেডি নেতা নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে। এই সেদিনও মমতা বিজেপি বিরোধী জোট প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘সব বিরোধী দল এক হয়ে যান। ওয়ান টু ওয়াই ফাইট হোক। চেষ্টা করব একসঙ্গে কাজ করার।
নীতি আয়োগের বৈঠক নিয়েও এদিন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বলেন, বৈঠকে যোগ দিলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাঁকে কিছু বলতে দেওয়া হয় না। শুধু বসিয়ে রাখা হয়। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এদিন জানিয়েছেন, ২৭ মে তিনি নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি যাবেন। মূলত রাজ্যের দাবি-দাওয়া আদাযের জন্যই তাঁর এই দিল্লি সফর বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘বৈঠকে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়। সবার শেষে বলতে দেওয়া হয়। সবার শেষে সূর্যাস্তের পর আমায় বলতে দেবে। ওদের কাছে সূর্যাস্তের আগে আমার মুখ দেখা যায় না।’ আদ্যক্ষর অনুসারে পশ্চিমবঙ্গের নাম সব রাজ্যের শেষে থাকে, সে কথা উল্লেখ করেও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে হয়তো বলতে দেবে সবার শেষে। রাত্রিবেলা। তা আর কী করা যাবে! আমায় বলতে দিতেও চায় না।’