শিশুদের মসজিদে ও গাছের নিচে ফেলে যাচ্ছে সিরীয়রা!

- আপডেট : ২৬ মে ২০২৩, শুক্রবার
- / 9
বিশেষ প্রতিবেদন: শীতের এক রাতের ঘটনা। সিরিয়ার ইব্রাহিম ওসমান নামায পড়তে বেরিয়েছিলেন। এরপর তিনি একটি পরিত্যক্ত মেয়ে শিশুকে কোলে নিয়ে বাড়িতে ফেরেন। জন্মের কয়েক ঘন্টা পরে গ্রামের মসজিদের দরজায় শিশুটিকে কেউ ফেলে রেখে গিয়েছিল। সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিম এলাকার হাজানোতে বাস করেন ইব্রাহিম ওসমান।
ওসমান জানান, পরিত্যক্ত শিশুটিকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে স্ত্রীর হাতে উপহার স্বরূপ তুলে দেন। পরে তারা শিশুটির নাম রাখেন হাইবাতুল্লাহ। এটার অর্থ ‘আল্লাহর উপহার’। শিশুটিকে নিজেদের সন্তানের মতো করে বড় করার সিদ্ধান্ত নেন ওই সিরীয় দম্পতি। সিরিয়ায় শিশু দত্তক নেওয়া নিষিদ্ধ। এ কারণে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হাইবাতুল্লাহকে বড় করার অনুমতি চেয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে সিরিয়ান কর্মকর্তারা বলেন, ‘দীর্ঘ ১২ বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। যুদ্ধকবলিত এ দেশটিতে দারিদ্র্য জেঁকে বসেছে। এ কারণে জলপাই গাছের নিচে, মসজিদ ও হাসপাতালের সামনে নবজাতকদের গোপনে ফেলে যাচ্ছেন সিরীয়রা। ‘মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান ফর ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস-এর মতে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়াতে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।
এভাবে শিশু ফেলে যাওয়ার ঘটনা ২০১১ সালে একবার আনুষ্ঠানিকভাবে নথিভুক্ত করা হয়। তবে গত দু-তিন বছরে দেশটিতে পরিত্যক্ত শিশু পাওয়ার ঘটনা আবার বেড়েছে। এক প্রতিবেদনে ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস বলেছে, ২০২১ সালের শুরু থেকে ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত সিরিয়ায় ১০০ জনেরও বেশি শিশু পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৬২ জন ছিল মেয়ে শিশু। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হবে। সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন স্থানে শিশু ফেলে যাওয়ার ঘটনা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছে এ মানবাধিকার সংস্থাটি। উল্লেখ্য, সিরিয়ার যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। অসংখ্য মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে হাজার হাজার অবকাঠামো।