খ্রিস্টানদের নিশানা করে জানুয়ারি থেকে ভাঙা হয়েছে ৪০০-র বেশি গির্জা: রিপোর্ট

- আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৩, বৃহস্পতিবার
- / 11
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ইউনাইটেড খ্রিস্টান ফোরাম (ইউসিএফ) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ এর প্রথমার্ধে, ভারতের ২৩ টি রাজ্যে খ্রিস্টানদের লক্ষ্য করে ৪০০ টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। যা গতবছরের সহিংসতাকে চাপিয়ে গিয়েছে। গত বছর এই একই সময়ের মধ্যে ২৭৪ টি সহিংসতার রিপোর্ট সামনে এসেছিল।
খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে নিশানা করে তাদের ওপর যেভাবে হামলা চালানো হয়েছে ইউসিএফ-এর ফলাফলগুলি থেকে তা স্পষ্ট। এই সহিংসতার ঘটনায় সবথেকে মারাত্মক ফল সামনে এসেছে উত্তরপ্রদেশ থেকে। এরপর রয়েছে ছত্তিশগড় এবং ঝাড়খন্ড।
কেবল উত্তরপ্রদেশেই ১৫৫ টি সহিংসতার ঘটনা সামনে এসেছে। ইউপির ৬ জেলায় খ্রিস্টানদের ওপর সবথেকে বেশি হামলার খবর সামনে এসেছে, যার মধ্যে জৌনপুর, রায়বেরেলি এবং সীতাপুরের অবস্থা মারাত্মক। জৌনপুরে ১৩, রায়বেরেলিতে ১১ এবং সীতাপুরে ১১ টি সহিংসতার খবর রিপোর্টে উঠে এসেছে।
ছত্তিশগড়ের বস্তারে ৩১ সহিংসতার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট যে কী মারাত্মক সহিংসতা সেখানে হয়েছে। এই সহিংসতার ঘটনাগুলি দেশের বিশেষ কোনও অঞ্চলে নয় বরং গোটা দেশকে প্রভাবিত করেছে।
২০২৩ এর কেবল জুনেই ৮৮ টি সহিংসতার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। যা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। খ্রিস্টান গির্জাগুলিতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় তিনটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। মার্চ, ফেব্রুয়ারী এবং জানুয়ারীতে যথাক্রমে ৬৬, ৬৩ এবং ৬২ টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ২০২৩ এর জানুয়ারিতে যে সংখ্যায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে তার ঠিক আগের বছর জানুয়ারিতে এই সহিংসতার সংখ্যা ছিল ১২১।
দেশজুড়ে খ্রিস্টানদের ওপর সহিংসতার যে ৪০০ টি ঘটনা ঘটেছে তার সঙ্গে কোনও বিশেয রাজনৈতিক দল জড়িত নয়। ইউনাইটেড খ্রিস্টান ফোরাম তার রিপোর্টে এমনটাই জানিয়েছে। তাতে আরও বলা হয়েছে বহুক্ষেত্রেই অত্যাচারিত খ্রিস্টানরা থানায় অভিযোগ জানাতে গেলেও তা গ্রহণ করা হয় না। পুলিশ এই হামলার তদন্ত করতে টালবাহানা করে। সাজা দেওয়া তো দূরের কথা, সময়মত দোষীদের পাকড়াও পর্যন্ত করা হয় না। খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্মান্তরণের অভিযোগ আনা হয় প্রায়। ধর্মান্তরণের অভিযোগে খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে এমন ৬৩ টি মামলা দায়ের হয়েছে।
মিথ্যা অভিযোগে ৩৫ জন যাজককে কারাগারে ঢোকানো হয়েছে। বারবার জামিনের আবেদন জানানো সত্ত্বেও তা প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে। এমনকি যখন জামিন মঞ্জুর হওয়ার পরও আমলাতান্ত্রিক টালবাহানার কারণে তাদের জেলে খাটতে হচ্ছে। এমন ঘটনার কারণে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতারা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অসংখ্য আবেদন করেছেন, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে ইউনাইটেড খ্রিস্টান ফোরাম জানিয়েছে।