১৩ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৩০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে উত্তাপের মাঝে শান্তির বার্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

চামেলি দাস
  • আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার
  • / 15

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ওয়াকফ সংশোধনী বিল সংসদে পাস হওয়ার পর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে উত্তেজনা। কোথাও কোথাও বিক্ষোভ, আবার কোথাও বিচ্ছিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর মিলেছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসীকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান। একই পথে হাঁটলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

শনিবার খড়দহ বিধানসভা এলাকায় একটি বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রের উদ্বোধনে এসে অভিষেক বলেন, ‘বাংলা আজ উন্নয়নের পথে এগোচ্ছে। কিন্তু কেউ কেউ সেই অগ্রগতি সহ্য করতে না পেরে ধর্মের নামে বিভেদ তৈরি করে বাংলায় অশান্তি ছড়াতে চাইছে। কেউ চায় এই বাংলায় আগুন জ্বলুক, কেউ চায় বাংলার অর্থ আটকে দিয়ে আমাদের ভাতে মারুক।’ তিনি রাজ্যবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমি সকলকে অনুরোধ করব; বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সহনশীলতা ও সম্প্রীতির ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রাখুন। শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখুন। মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে সকল ধর্মের মানুষকে সংযত থাকতে বলেছেন, আমি তাঁর সেই আহ্বানকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সরকার যতদিন থাকবে, কেউ বাংলার মানুষকে ভাতে মারার সাহস দেখাতে পারবে না। যারা প্ররোচনা দিচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না।’ রাজনৈতিক মহলের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর পর অভিষেকের এই অবস্থান স্পষ্ট করে দেয়, রাজ্য সরকার এই ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখাই এখন প্রশাসনের মূল লক্ষ্য। আর এই পথে দলও সরকারের পাশে রয়েছে।

চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা বিচার ব্যবস্থাকে শ্রদ্ধা করি এবং বিশ্বাস করি, তা পক্ষপাতহীন। তবে কোনও রায় যদি কারও পছন্দ না হয়, তা নিয়ে মত প্রকাশ করার অধিকার সংবিধান দেয়। আমি মনে করি, এই রায় বিজেপির বাংলা-বিরোধী মানসিকতার প্রতিফলন। কয়েকজনের ভুলের দায়ে ৫৯ লক্ষ কাজের কার্ডধারীর টাকা আটকে দেওয়া অথবা অভিযোগ পেলে পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও আবাস যোজনার মতো প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া; এ সব একতরফা বঞ্চনা ছাড়া কিছু নয়।’ তিনি বলেন, ‘যদি ধরেও নেওয়া যায় যে কয়েক হাজার চাকরি প্রার্থীর মধ্যে কিছু অনিয়ম হয়েছে, তাহলে তার জন্য সতেরো হাজার প্রকৃত প্রাপকের চাকরি কেড়ে নেওয়া ন্যায়সঙ্গত নয়। যাঁরা প্রকৃত দোষী, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হোক। কিন্তু সমস্ত প্রার্থীকে একজোট করে শাস্তি দেওয়া কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যে পরিষ্কার; আদালতের রায়কে সম্মান জানিয়ে হলেও বৃহৎ সংখ্যক নির্দোষের উপর তার প্রভাব নিয়েই শাসক দলের গভীর আপত্তি রয়েছে। আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল ভঙ্গিতেই উঠে এল শীর্ষনেতার বার্তা; তৃণমূল তাঁদের পাশে রয়েছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে উত্তাপের মাঝে শান্তির বার্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ওয়াকফ সংশোধনী বিল সংসদে পাস হওয়ার পর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে উত্তেজনা। কোথাও কোথাও বিক্ষোভ, আবার কোথাও বিচ্ছিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর মিলেছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসীকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান। একই পথে হাঁটলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

শনিবার খড়দহ বিধানসভা এলাকায় একটি বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রের উদ্বোধনে এসে অভিষেক বলেন, ‘বাংলা আজ উন্নয়নের পথে এগোচ্ছে। কিন্তু কেউ কেউ সেই অগ্রগতি সহ্য করতে না পেরে ধর্মের নামে বিভেদ তৈরি করে বাংলায় অশান্তি ছড়াতে চাইছে। কেউ চায় এই বাংলায় আগুন জ্বলুক, কেউ চায় বাংলার অর্থ আটকে দিয়ে আমাদের ভাতে মারুক।’ তিনি রাজ্যবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমি সকলকে অনুরোধ করব; বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সহনশীলতা ও সম্প্রীতির ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রাখুন। শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখুন। মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে সকল ধর্মের মানুষকে সংযত থাকতে বলেছেন, আমি তাঁর সেই আহ্বানকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সরকার যতদিন থাকবে, কেউ বাংলার মানুষকে ভাতে মারার সাহস দেখাতে পারবে না। যারা প্ররোচনা দিচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না।’ রাজনৈতিক মহলের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর পর অভিষেকের এই অবস্থান স্পষ্ট করে দেয়, রাজ্য সরকার এই ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখাই এখন প্রশাসনের মূল লক্ষ্য। আর এই পথে দলও সরকারের পাশে রয়েছে।

চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা বিচার ব্যবস্থাকে শ্রদ্ধা করি এবং বিশ্বাস করি, তা পক্ষপাতহীন। তবে কোনও রায় যদি কারও পছন্দ না হয়, তা নিয়ে মত প্রকাশ করার অধিকার সংবিধান দেয়। আমি মনে করি, এই রায় বিজেপির বাংলা-বিরোধী মানসিকতার প্রতিফলন। কয়েকজনের ভুলের দায়ে ৫৯ লক্ষ কাজের কার্ডধারীর টাকা আটকে দেওয়া অথবা অভিযোগ পেলে পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও আবাস যোজনার মতো প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া; এ সব একতরফা বঞ্চনা ছাড়া কিছু নয়।’ তিনি বলেন, ‘যদি ধরেও নেওয়া যায় যে কয়েক হাজার চাকরি প্রার্থীর মধ্যে কিছু অনিয়ম হয়েছে, তাহলে তার জন্য সতেরো হাজার প্রকৃত প্রাপকের চাকরি কেড়ে নেওয়া ন্যায়সঙ্গত নয়। যাঁরা প্রকৃত দোষী, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হোক। কিন্তু সমস্ত প্রার্থীকে একজোট করে শাস্তি দেওয়া কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যে পরিষ্কার; আদালতের রায়কে সম্মান জানিয়ে হলেও বৃহৎ সংখ্যক নির্দোষের উপর তার প্রভাব নিয়েই শাসক দলের গভীর আপত্তি রয়েছে। আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল ভঙ্গিতেই উঠে এল শীর্ষনেতার বার্তা; তৃণমূল তাঁদের পাশে রয়েছে।