নয়া দিল্লি, ১৪ জানুয়ারি: বিধি ভেঙে ‘বন্ধু’ আদানিকে পাক সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় জমি দানের অভিযোগ! আরও একবার আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় সমালোচনার শিকার বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। জানা গেছে, সংবেদনশীল এলাকা থাকা সত্ত্বেও একটি নির্দিষ্ট ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর সুবিধার্থে গুজরাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি পার্ক তৈরির জন্য সীমান্ত সুরক্ষা সংক্রান্ত নিয়ম শিথিল করেছে কেন্দ্র সরকার। আর এই পদক্ষেপ জাতীয় নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারে বলে দাবি তাদের। গুজরাতের কচ্ছে পাকিস্তান সীমান্ত থেকে এক থেকে দুই কিলোমিটারের মধ্যে এলাকাটি। বলা বাহুল্য, পাকিস্তান সীমান্তের কাছে আদানি গোষ্ঠী সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ তৈরির প্রকল্পে হাত দিচ্ছে।
অভিযোগ, সীমান্তের কাছে সংবেদনশীল এলাকা হওয়া সত্ত্বেও এই প্রকল্পের জন্য নিরাপত্তা বিধি শিথিল করা হয়েছে। আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বুধবার সাংসদে তীব্র আপত্তি জানায় কংগ্রেস। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তীব্র আক্রমণ করেন কং সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। সশস্ত্র বাহিনীর উদ্বেগ উপেক্ষা করে কীভাবে সংবেদনশীল জমি আদানিগোষ্ঠীকে দেওয়া হল? তাই নিয়ে তিনি প্রশ্ন উত্থাপণ করেন তিনি। পাশাপাশি ‘প্রিয় বন্ধু’ আদানিকে পাকিস্তানের সীমান্তে কৌশলগতভাবে মূল্যবান জমি কি উপহার দিয়েছেন মোদি? তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন খারগে। এছাড়া নিজের এক্স হ্যান্ডেলে কংগ্রেস সভাপতি লেখেন, বিজেপির ছদ্মবেশী জাতীয়তাবাদীদের মুখোশ সর্বসমুক্ষে আবারও উন্মোচিত হল। কোটিপতি বন্ধুদের ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ওঁরা দেশের নিরাপত্তা নিয়ে খেলা করছেন। এই প্রেক্ষাপটে বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একযোগে আক্রমণ শানিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধিও।
তিনি মন্তব্য করেন, এক এক করে দেশের সবকিছু প্রিয় বন্ধুর হাতে তুলে দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী মোদি। তবে এই বারের ঘটনাটি সব সীমা অতিক্রম করে দিয়েছে। দেশের সমস্ত সম্পদ প্রধানমন্ত্রীর বন্ধুর হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া এত চরমে পৌঁছেছে যে সীমান্তের নিরাপত্তা বিধিও বদলে দেওয়া হচ্ছে! আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়েনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কচ্ছে পাকিস্তান সীমান্ত দুই কিলোমিটারের দূরত্বে অবস্থিত সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য আদানি গোষ্ঠী ৪৪৫ বর্গ কিলোমিটার জমি পেয়েছে।
তবে এর আগে সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সোলার এনার্জি কর্পোরেশনকে জমি বরাদ্দ করা হয়েছিল। খোদ রাজ্য সরকার সেটি বরাদ্দ করেছিল । যেহেতু এলাকাটি সংবেদনশীল তাই ওই বরাদ্দের জন্য কিছু নিয়মও পরিবর্তন করা হয়েছিল। কিন্তু, পরে সোলার এনার্জি কর্পোরেশন রাজ্য সরকারকে জমি ফিরিয়ে দেয়। তাতে অভিযোগ ওঠে যে কেন্দ্রের নির্দেশেই সেই জমি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, পরে সেই আদানি গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।