বঞ্চনার শিকার আদিবাসী শিশুরা, স্কুল ছেড়ে নাম লেখাচ্ছে মাদ্রাসায়

- আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২২, সোমবার
- / 7
পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ভোপালের বিদিশায় সরকারি স্কুলে বঞ্চনার শিকার ৩৫ আদিবাসী হিন্দু পঠন-পাঠনের জন্য মাদ্রাসামুখী। এরমধ্যে ৭ জনের নাম মাদ্রাসার রেজিস্টারে নথিভুক্তও হয়ে গেছে এবং মাদ্রাসার ভর্তি রেজিস্টারে ২০ হিন্দু শিশুর নাম নথিভুক্ত রয়েছে। প্রশাসন অবশ্য অস্বীকার করছে, কিন্তু বাস্তবটা সরকারি দাবির বিপরীতই।
ভারতের একটি জনপ্রিয় হিন্দু দৈনিকের পক্ষ থেকে সত্যতা জানতে শনিবার তোপপুরের মরিয়ম মাদ্রাসায় পৌঁছলে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয় মোট ৪৫ জন পড়ুয়ার মধ্যে অর্ধেকই হিন্দু গোণ্ড আদিবাসী। এই মাদ্রাসা সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত হলেও ২০০২ সালে একটি সংকীর্ণ গলির ছোট একটি কামরায় চলছে।
এই মাদ্রাসার উপরেও একটি কামরায় বসবাস করেন ৩ মুসলিম ও একজন হিন্দু শিক্ষক। হিন্দু শিক্ষক সুরেশ কুমার আর্যকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, প্রথম থেকেই এই মাদ্রাসায় ৪৫ জন পড়ুয়া রয়েছে। এরমধ্যে অর্ধেকই হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত।
তোপপুরা এবং জাতরাপুর সরকারি স্কুলের ৩৫ জন পড়ুয়া মাদ্রাসায় অ্যাডমিশনের সময় অভিযোগ ছিল, এরমধ্যে ৭ জন পড়ুয়ার নামই রেজিস্ট্রারে নথিভুক্ত হয়, কিন্তু ফিজ জমা করার সময় আইডি জেনারেট না হওয়ায় স্থায়ী অ্যাডমিশন মেলেনি। এই ৭ শিশুর মধ্যে ৪ জনই নিয়মিত আসেন বাকিরা কখনও কখনও মাদ্রাসায় আসে।
তোপপুরা সরকারি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা রেখা চিড়ার মাদ্রাসায় শিশুদের ভর্তির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। শিশুদের স্কুল থেকে বিতারনের বিষয়টিও মানতে চাননি তিনি। তবে ৯ বছরের এক পড়ুয়াকে প্রশ্ন করা হলে সে জানায়, ‘সরকারি স্কুলের ম্যাডাম বলতেন তোমরা স্নান না করলে স্কুলে এসো না।’
অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্রার বক্তব্য, বিদিশায় সরকারি স্কুল ছেড়ে ৩৫ শিশুর মাদ্রাসায় ভর্তির খবরটি ভুল। এ বিষয়ে আমি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি।
তদন্তে জানা গিয়েছে, বিদিশার কোনও পড়ুয়াই মাদ্রাসায় যায়নি। জাতীয় শিশু কমিশনের চেয়ারম্যাান কানুনগোজীকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।জাতীয় শিশু অধিকার সংরক্ষণ আয়োগের চেয়ারম্যান প্রিয়াঙ্কা কানুনগো অবশ্য জানিয়েছেন, প্রশাসনের কাছ থেকে কোনও তদন্ত রিপোর্ট তাঁর কাছে আসেনি। তবে মাদ্রাসা কোন শিশুর পঠনপাঠনের জন্য উপযুক্ত স্থান নয়।
হিন্দু শিশুদের জন্য একেবারেই নয়। যে কোনও শিশুকে স্কুলে যাওয়া থেকে বঞ্চিত করা সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী। বিদিশার কালেক্টর উমাশঙ্কর ভার্গভ জানান, আমরা শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের কাছ থেকে ৩৩ জন শিশুর তালিকা পেয়েছি, যার মধ্যে ২২ জন তোপপুরা স্কুলের রেজিস্টারে নাম রয়েছে।
কোনও পড়ুয়াই মাদ্রাসায় ভর্তি হয়নি। তবে বেশ কিছু শিশু মাদ্রাসার কাছে বসবাস করে বলে মাদ্রাসায় কখনও কখনও চলে যায়। শিশুদের স্কুল যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে এমন কোনও তথ্য তদন্তে উঠে আসেনি।