বিপদে ফেলা মানে আল্লাহ্ আপনাকে ডাকছেন

- আপডেট : ৭ জুলাই ২০২৩, শুক্রবার
- / 24
নোমান আলী খান : জীবনে একটার পর একটা পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন আপনি। ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। আর পারছেন না। বারবার মনে প্রশ্ন জাগছে, ‘এত কঠিন বিপদে কেন আমাকেই পড়তে হয়?’ পরিস্থিতি যদি এমন হয়, তাহলে চলুন এবার একটু অন্যভাবে ভেবে দেখি।
একটা কথা আপনাকে বুঝতে হবে- এই যে বারবার আপনি পরীক্ষা দিচ্ছেন, এই পরীক্ষার একটু পরই কিন্তু সুন্দর সময় আসবে। ক’টা মাস পর, ক’টা দিন পর কিংবা হয়তো আজই! কারণ খারাপ সময় কখনই দীর্ঘস্থায়ী হয় না। আপনি আজীবন একটানা পরীক্ষার মধ্যে থাকবেন না। তাই সেই সুন্দর সময়ের কথা ভেবে সবর করুন।
আচ্ছা কখনও ভেবেছেন, আপনার রব আপনাকে পরীক্ষায় কেন ফেললেন? বিপদ কেন দিলেন? এত কেন ভুগতে হচ্ছে আপনাকে? এর জবাবও আছে। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা আপনাকে বিপদে ফেলছেন মানে, উনি আপনাকে ডাকছেন। উনার দিকে ফেরার জন্য ডাকছেন। উনাকে স্মরণ করার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন। এটা শুধু পরীক্ষা নয়, এটা রিমাইন্ডার। একটা সতর্কবার্তা।
আর এই রিমাইন্ডারটা কার পক্ষ থেকে ভাবুন তো? কে আপনাকে সতর্ক করছে? যে এই মহাবিশ্বের একমাত্র সৃষ্টিকর্তা। যিনি সর্বশক্তিমান। সকল ক্ষমতা যাঁর হাতে, সেই রব আপনাকে ডাকছেন। কেন ডাকছেন? তাঁর কী লাভ? লাভ তো আপনার! আপনার ভালোর জন্যেই ডাকছেন। যাতে আপনি সঠিক পথে ফিরতে পারেন। আপনি যেন জায়নামাযে আল্লাহ্-র সামনে গিয়ে দাঁড়াতে পারেন। আপনি যেন মোনাজাতে চোখের পানি ফেলতে পারেন, তার জন্য খোদ আল্লাহ্ আপনাকে ডাকছেন।
আপনি ভুল পথে থাকলে ক্ষতি তো আপনারই। জাহান্নামে আপনি পুড়বেন। জান্নাতের অপরিসীম সৌন্দর্য থেকে আপনি বঞ্চিত হবেন। দুনিয়ার শান্তি থেকে আপনি বঞ্চিত হবেন। তাহলে কেন তিনি আপনাকে ডাকছেন? কেন তিনি আপনাকেই পরীক্ষায় ফেললেন?
কারণ আপনার রব আপনাকে ভালোবাসেন। আপনার ভালো চান। আপনাকে সঠিক পথ দেখাতে চান। আপনাকে ফিরে আসার সুযোগ দিতে চান। আপনার গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়ার সুযোগ দিতে চান। আপনাকে অনন্তকাল জান্নাতের বাসিন্দা করে দিতে চান। এর চেয়ে বড় সুযোগ এই দুনিয়াতে আর কী হতে পারে?
তাই বিপদে ধৈর্য হারাবেন না। পরীক্ষাটাকে কঠিন শাস্তি মনে করবেন না। এটা একটা উপহার, আপনার পালনকর্তার কাছ থেকে পাওয়া উপহার। এটা রবের পথে পা ফেলার জন্য আহ্বান। সৃষ্টিকর্তার কাছে নিজের সকল সমস্যা নির্দ্বিধায় প্রকাশ করার সুযোগ বলতে পারেন। কেন আপনি নিজেকে সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবেন?
বিপদ দূর করে দিয়ে, সাহায্য পাঠাতে আপনার রবের কতক্ষণ লাগবে? উনি শুধু চান আপনার সাড়া। আপনি কতটুকু ধৈর্য ধরতে পেরেছেন; কতটুকু আল্লাহ্ -কে স্মরণ করছেন; আপনি কতটুকু খারাপ কাজ ছাড়তে পেরেছেন; আপনি কতটা আল্লাহ্-র দিকে ফিরে আসতে পেরেছেন সেটাই জানতে চান আপনার রব।
ধৈর্য হারাবেন না। বিপদ কেটে যাবে। সাহায্য চান আল্লাহ্-র কাছে। সাহায্য চান তাঁর কাছেই। একমাত্র তিনিই পারেন আপনার বিপদ দূর করে সুখের সময় এনে দিতে। কারণ আপনার রব ওয়াদা করেছেন ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্-র সাহায্য অতি নিকটবর্তী’ এবং আপনার রব তাঁর ওয়াদা রক্ষা করেন।
যখন আপনি কঠিন সময় পার করছেন এবং চিন্তা করছেন আল্লাহ্ কেন আপনাকে সাহায্য করছেন না। মনে রাখবেন, পরীক্ষার সময় শিক্ষক নীরব থাকেন।