পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নয়া শুল্কযুদ্ধ ঘোষণার পালটা ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করল শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট চিন। যদি আমেরিকা যেভাবেই হোক যুদ্ধ চায়, তা সে শুল্কযুদ্ধ হোক বা বাণিজ্যযুদ্ধ কিংবা যে কোনও ময়দানে যেকোনও ধরনের যুদ্ধ চায়, আমরা শেষপর্যন্ত লড়াই চালাতে প্রস্তুত আছি। চিনা বিদেশ মন্ত্রক একটি এক্স বার্তায় সাফ হুঁশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকাকে।
ফেন্টানিল ইস্যুতে কানাডার পাশাপাশি চিনের ওপরও শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর সেই শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত চিনা দূতাবাস বলল, যুক্তরাষ্ট্র চাইলে চিন যুদ্ধ করতে প্রস্তুত। চিনা দূতাবাসের তরফ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিই ফেন্টানিল সমস্যার সমাধান করতে চায়, তাহলে তাদের উচিত একে অপরকে সমান চোখে দেখে চিনের সঙ্গে এই নিয়ে পরামর্শ করা। যুক্তরাষ্ট্র যদি যুদ্ধ চায়, শুল্ক যুদ্ধ হোক, বাণিজ্য যুদ্ধ বা অন্য যেকোনও ধরনের যুদ্ধ হোক, আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে প্রস্তুত।’ উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসন চিনা পণ্যের ওপর বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। আর এই নিয়েই আমেরিকার ওপরে খাপ্পা চিন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুখপাত্র লেখেন, ফেন্টানিল সমস্যা হল চিনা আমদানির উপর মার্কিন শুল্ক বাড়ানোর জন্য একটি তুচ্ছ অজুহাত।
ট্রাম্প এর আগে অভিযোগ তুলেছিলেন চিন ফেনটানিল সংকট মেটাতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করছে না। তিনি বলেছিলেন, ফেনটানিল তৈরিতে ব্যবহৃত একটি রাসায়নিক রফতানি কিছুতেই বন্ধ করছে না চিন। ফেনটানিল মেডিক্যাল কাজে ছাড়াও মাদক হিসাবে ব্যবহার হয়ে থাকে আমেরিকায়। আফিমের আড়ক হিসাবে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় অনেকের মৃত্যুও ঘটে বলে চিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ট্রাম্পের। যদিও চিনা মুখপাত্রের দাবি, আমেরিকা নিজেই ওপিওড সমস্যার জন্য দায়ী।
চিনা বিদেশ মুখপাত্র লিন আমেরিকাকে কাঠগড়ায় তুলে আরও বলেন, ফেনটানিল সমস্যা নিয়ে বেজিং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে বলেছিল। তা সত্ত্বেও একটি সামান্য অজুহাত খাড়া করে তারা চিনের উপর শুল্কের খাঁড়া চাপাচ্ছে। আমাদের প্রয়াসকে স্বীকৃতি না দিয়েই চিনকে অপরাধী সাব্যস্ত করে ব্ল্যাকমেল করতে চাইছে আমেরিকা।
কানাডা ও মেক্সিকোর উপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক বলবৎ করেছেন ট্রাম্প। চিনের পণ্যে ওই ২৫ শতাংশের পাশাপাশি ধার্য হয়েছে আরও ২০ শতাংশ অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক। এরপরই এ দিন প্রত্যাঘাত করেছে বেজিং। আগামী ১০ মার্চ থেকে আমেরিকার পণ্য চিনে প্রবেশ করলে অতিরিক্ত ১০-১৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। কানাডা ঘোষণা করেছে, ট্রাম্প যদি শুল্ক প্রত্যাহার না করেন, তাহলে পালটা ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে মার্কিন পণ্যে। বস্তুত চিনই এবার আমেরিকা বিরোধী বাণিজ্য যুদ্ধের নেতৃত্বে। নিজেদের স্বার্থেই এই সংঘাতে যোগ দিতে চলেছে ইউরোপ। ফলে বিশ্বের অর্থনীতি অনিশ্চিত হতে চলেছে।