কলকাতায় পালিয়ে আসা আওয়ামী লীগ নেতারা কী করছেন, জানেন কি?

রিপোর্টার:
  • শেষ আপডেট: শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০২৫

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন ও পলায়নের পর ভারতে আস্তানা গেড়েছেন আওয়ামী লীগের বহু নেতা-মন্ত্রী৷ হাসিনা নয়াদিল্লিতে বসে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন কলকাতার নিউটাউন, নিউ মার্কেট, পার্ক সার্কাস, বেক বাগান, পিকনিক গার্ডেন, এলগিন রোডের আওয়ামী রাঘববোয়ালদের সঙ্গে৷ তারা প্রচুর টাকার মালিক৷ দেশে বড় বড় দুর্নীতি করেছেন৷ তারা পালিয়ে এসেছে এখন কলকাতায় ঘাঁটি গেড়ে বসেছেন৷ অপেক্ষা করছেন সুবর্ণ সুযোগের৷ তবে ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে আওয়ামী লীগের নেতারা এ দেশে গোপনে আসলেও সাধারণ মানুষের আসা কমে গেছে৷ ফলে নিউ মার্কেট সহ বিভিন্ন জায়গার ব্যবসা মার খাচ্ছে৷ বাইপাসের হাসপাতালগুলি ধুঁকছে একপ্রকার৷ কিন্তু অনুসন্ধানী তদন্তে জানা গেল, ‘অন্য একটি ব্যবসা’ বেড়েছে আওয়ামী নেতারা আসার ফলে৷ সেটা হল কল গার্ল ও এসকর্ট সার্ভিসের ব্যবসা৷ স্পার আড়ালে চলছে যৌন চক্রের রমরমা৷ বিশেষ করে নিউটাউন, এলগিন রোড, সলটলেক স্টেডিয়ামের আশেপাশের এলাকায় এই চক্র এখন ব্যাপক সক্রিয়৷ কল গার্লের সঙ্গে এক ঘণ্টা সময় কাটাতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ করতে দ্বিধা করছেন না নেতারা৷ এমনটাই জানা গেল নিউ টাউনের এক কল গার্ল এজেন্টের কাছ থেকে৷ রোহিত নামের ওই এজেন্ট জানালেন, প্রথমে তাদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ আসে৷ আমরা সেই মতো গার্লস প্রোফাইল পাঠাই রেটসহ৷ কোনো কোনো বাংলাদেশি নেতা সারা রাতের জন্য সার্ভিস নেয়৷ সেক্ষেত্রে খরচ প্রায় ৫০ হাজার টাকা৷ নিউ টাউনের অ্যাক্সিস মল, চিনার পার্ক, গৌরাঙ্গ নগর এলাকায় প্রচুর ‘ওয়ো’ হোটেল রয়েছে৷ সেখানে কোনও বৈধ পরিচয়পত্র ছাড়াই রাত কাটানোর সুবিধা আছে৷ তারই সদ্ব্যবহার করছেন নেতারা৷ সন্ধ্যাবেলায় ঘুরতে বেরিয়ে তারা এই এসকর্ট সার্ভিস নিচ্ছেন৷

এলগিন রোড, সদর স্ট্রিটের বড় বড় হোটেলগুলিতে কল গার্ল ব্যবসার একাধিক এজেন্ট রয়েছে৷ তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আওয়ামী বাংলাদেশি নেতারা বেশিরভাগ সময়ই রাশিয়ান বা কোনো বিদেশি মেয়ে চায়৷ তাদের নাকি ‘পারফরম্যান্স’ ও সার্ভিস ভালো! কলকাতার স্থানীয় কল গার্লের চেয়ে রাশিয়ান, ইউক্রেন, উজবেক বা বিদেশি প্রাক্তন মডেল, দেহ পসারিণীদের রেট অত্যন্ত হাই৷ এক ঘণ্টায় তারা ২০ হাজার টাকা করে নেয়৷ তবে ভালো সময় কাটাতে খরচে কার্পণ্য করছে না নেতারা৷ ২ থেকে ৩ ঘণ্টার জন্য রাশিয়ান কল গার্ল বুক করেন তারা৷ বাংলাদেশে ভিন্ন ধারার রাজনীতি শুরু হয়েছে৷ সেখানে কীভাবে প্রবেশ করবে আওয়ামী লিগ, জানেন না নেতারা৷ কূলকিনারা পাচ্ছেন না হাসিনাও৷ তাই নেতারা মজেছেন রঙিন জগতে৷ নিউটাউনের বহু হোটেলে এখন এই ব্যবসাই চলছে৷ আর তার মূল খরিদ্দার আওয়ামী নেতারা৷ রাশিয়ান মেয়েদের সাহচর্যে সময় কাটছে তাদের৷

 

প্রসঙ্গত, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ হিসেবে পরিচিত ইসমাইল হোসেন সম্রাট, নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, ক্যাসিনো সাঈদ হিসেবে পরিচিত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কমিশনার একেএম মমিনুল হক সাঈদ, আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলসহ দলটির অনুগত চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা কলকাতায় অবস্থানের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আওয়ামী লীগের ছোট-বড় শতাধিক নেতা ঘাঁটি গেড়েছেন কলকাতার পার্ক সার্কাস, গুলশান কলোনি, নিউটাউন, ভাঙড়, চিনার পার্ক, যাত্রাগাছি এলাকায়। নিউটাউনের গৌরাঙ্গনগর এখন বাংলাদেশিতে ভর্তি। আওয়ামী লীগের লোকেরাও এখানে আছেন। এলাকার রিপন মজুমদার নামে এক দালাল এখানে আওয়ামী নেতাদের ফ্ল্যাটের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। তবে ফ্ল্যাটে মেয়ে নিয়ে আসলে ধরা পড়ে যাবার ভয় থাকে৷ আপত্তি ওঠে আবাসনের অন্যান্যদের তরফ থেকে৷ তাই নেতারা বার, হোটেলকেই বেছে নিচ্ছেন প্রমোদের জন্য৷

এই সংক্রান্ত আরও খবর
Copyright © 2025 Puber Kalom All rights reserved.
Developed By eTech Builder