২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুজোয় বেলাগাম ডেঙ্গু সংক্রমণ, ১০ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার পার

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৮ অক্টোবর ২০২২, শনিবার
  • / 21

পুবের কলম প্রতিবেদক: আশঙ্কাই সত্যি হল। পুজোর কটাদিন রাজ্যে লাফিয়ে বাড়ল ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ছুঁয়েছে।

আক্রান্তের শীর্ষে রয়েছে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা। এই অবস্থায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে চিকিৎসকমহল। রাজ্যের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন নবান্নও।

ইতিমধ্যেই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর জেলাগুলিকে পৃথক নির্দেশিকা পাঠিয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। ডেঙ্গু নিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরও। তবে তারপরেও উৎসবেও মরশুমে রাশ টানা যায়নি ডেঙ্গু সংক্রমণে।

পুজোর ক’টা দিন রাজ্যে তথা কলকাতায় যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে, এই আশঙ্কা আগেই করেছিলেন পুরকর্তারা। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ২৯ সেপ্টেম্বর রাজ্যে নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ৬৩৫ জন। ৩০ সেপ্টেম্বর আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯২৪।

১ অক্টোবর আক্রান্ত হন ৭২৫। এরপর ৬ অক্টোবর নতুন করে রাজ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ৬০৭ জন। মাঝের পুজোর চারদিন বুলেটিন না দেওয়ায়, ওই ক’টা দিন আক্রান্তের সংখ্যা না মিললেও স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৬৭৮।

বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করেছিলেন যে, পুজোর পরও ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত থাকবে। ঠান্ডা না পড়া পর্যন্ত ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে মেনে চলতে হবে পুরসভার গাইড লাইন। রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম ডেঙ্গু সচেতনতার প্রচারে জোর দেন।

মানুষ সচেতন না হলে যে ডেঙ্গু কমবে না, তা বারেবারে প্রচার করা হচ্ছে পুরসভার তরফে। শুধু তাই নয়, পুজোর মধ্যে ডেঙ্গু সচেতনতা সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডে সচেতনতা কিয়স্ক তৈরি করা হয়। তবে তারপরেও নাগরিকদের মধ্যে কোথাও সচেতনতার অভাব রয়ে গিয়েছে বলেই আক্ষেপ পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকদের।

 

অন্যদিকে, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফেও ডেঙ্গু রোধে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রথম রাউন্ডে ১ অক্টোবরের মধ্যেই রাজ্যের সব পুরসভার অধীনস্থ এলাকার ফাঁকা জমি ড্রেন জলজমা এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়ে গিয়েছে। এবার দ্বিতীয় রাউন্ডে ১১ অক্টোবর থেকে ১৬ অক্টোবরের মধ্যে অনুরূপভাবেই এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে।

প্রতিটি পুরসভার অধীনস্থ এক্সিকিউটিভ পদমর্যাদার অফিসাররা নজরদারি করবেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজে। পুজোর পরে এই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। ভিক্টর কন্ট্রোল মনিটরিং অফিসারদের তাঁদের নির্দিষ্ট করে দেওয়া ওয়ার্ডগুলি পরিদর্শন করতে হবে।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হচ্ছে, নাকি তা সরজমিনে দেখতে হবে এবং রিপোর্ট দিতে হবে এক্সিকিউটিভ পদমর্যাদার অফিসারদের। যে ওয়ার্ডগুলিতে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেশি সেই ওয়ার্ডগুলিতে মাইক্রো প্ল্যান করে এগোনোর নির্দেশ জারি করা হয়েছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

পুজোয় বেলাগাম ডেঙ্গু সংক্রমণ, ১০ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার পার

আপডেট : ৮ অক্টোবর ২০২২, শনিবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: আশঙ্কাই সত্যি হল। পুজোর কটাদিন রাজ্যে লাফিয়ে বাড়ল ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ছুঁয়েছে।

আক্রান্তের শীর্ষে রয়েছে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা। এই অবস্থায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে চিকিৎসকমহল। রাজ্যের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন নবান্নও।

ইতিমধ্যেই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর জেলাগুলিকে পৃথক নির্দেশিকা পাঠিয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। ডেঙ্গু নিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরও। তবে তারপরেও উৎসবেও মরশুমে রাশ টানা যায়নি ডেঙ্গু সংক্রমণে।

পুজোর ক’টা দিন রাজ্যে তথা কলকাতায় যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে, এই আশঙ্কা আগেই করেছিলেন পুরকর্তারা। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ২৯ সেপ্টেম্বর রাজ্যে নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ৬৩৫ জন। ৩০ সেপ্টেম্বর আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯২৪।

১ অক্টোবর আক্রান্ত হন ৭২৫। এরপর ৬ অক্টোবর নতুন করে রাজ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ৬০৭ জন। মাঝের পুজোর চারদিন বুলেটিন না দেওয়ায়, ওই ক’টা দিন আক্রান্তের সংখ্যা না মিললেও স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৬৭৮।

বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করেছিলেন যে, পুজোর পরও ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত থাকবে। ঠান্ডা না পড়া পর্যন্ত ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে মেনে চলতে হবে পুরসভার গাইড লাইন। রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম ডেঙ্গু সচেতনতার প্রচারে জোর দেন।

মানুষ সচেতন না হলে যে ডেঙ্গু কমবে না, তা বারেবারে প্রচার করা হচ্ছে পুরসভার তরফে। শুধু তাই নয়, পুজোর মধ্যে ডেঙ্গু সচেতনতা সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডে সচেতনতা কিয়স্ক তৈরি করা হয়। তবে তারপরেও নাগরিকদের মধ্যে কোথাও সচেতনতার অভাব রয়ে গিয়েছে বলেই আক্ষেপ পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকদের।

 

অন্যদিকে, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফেও ডেঙ্গু রোধে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রথম রাউন্ডে ১ অক্টোবরের মধ্যেই রাজ্যের সব পুরসভার অধীনস্থ এলাকার ফাঁকা জমি ড্রেন জলজমা এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়ে গিয়েছে। এবার দ্বিতীয় রাউন্ডে ১১ অক্টোবর থেকে ১৬ অক্টোবরের মধ্যে অনুরূপভাবেই এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে।

প্রতিটি পুরসভার অধীনস্থ এক্সিকিউটিভ পদমর্যাদার অফিসাররা নজরদারি করবেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজে। পুজোর পরে এই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। ভিক্টর কন্ট্রোল মনিটরিং অফিসারদের তাঁদের নির্দিষ্ট করে দেওয়া ওয়ার্ডগুলি পরিদর্শন করতে হবে।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হচ্ছে, নাকি তা সরজমিনে দেখতে হবে এবং রিপোর্ট দিতে হবে এক্সিকিউটিভ পদমর্যাদার অফিসারদের। যে ওয়ার্ডগুলিতে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেশি সেই ওয়ার্ডগুলিতে মাইক্রো প্ল্যান করে এগোনোর নির্দেশ জারি করা হয়েছে।