পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি এবার ভারতেও চোখ রাঙাচ্ছে এইচ৫এন১ এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানার পাশাপাশি এবার মহারাষ্ট্রেও এই রোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও মধ্যপ্রদেশের ছিন্দোড়ায় দুটি দোকান এবং একটি বাড়িতে সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, মুরগির মাংসের দোকান এবং পোল্ট্রি ফার্মগুলি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্রের ৬টি জেলার পৃথক পৃথক জায়গায় পোলট্রিতে বার্ড ফ্লু সংক্রমণের খবর মিলেছে।
বহুল প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুসার, “চলতি বছরের শুরু থেকে মহারাষ্ট্রে বার্ড ফ্লু আক্রান্ত ৭টি এলাকায় ৭ হাজারেরও বেশি হাঁস-মুরগি মেরে ফেলা হয়েছে। ২,২৩০টি ডিম নষ্ট করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অসংগঠিত খামারগুলিতেই বার্ড ফ্লু হানা দিয়েছে বেশি। বাড়ির উঠোনের হাঁস-মুরগির পোষার চল আছে মহারাষ্ট্রে। সেই খামারগুলিতে বেশি সংক্রমণ দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি, হাঁস-মুরগি ছাড়াও, বাঘ, চিতাবাঘ, শকুন এবং কাকের মধ্যেও বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
অন্ধ্রপ্রদেশে আরও জাঁকিয়ে বসছে বার্ড ফ্লু । পূর্ব গোদাবরী জেলায় লক্ষাধিক মুরগির মৃত্যু হয়েছে বার্ড ফ্লুতেই।
নিশ্চিত করেছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হাই সিকিওরিটি অ্যানিম্যাল ডিজিসেস্। যে এলাকা থেকে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ ছড়িয়েছে, সেখান থেকে প্রথম এক কিলোমিটার ব্যাসার্ধের এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। রেড জোনে ডিম ও মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করেছে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার। সেখানে ৬৫টি মেডিক্যাল টিম তৈরি করা হয়েছে। সংক্রমণের উৎসস্থল থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে সব পোলট্রি ফার্ম ভেঙে ফেলা হচ্ছে। চলছে কালিং ও মাটিতে পুঁতে ফেলার কাজ। সংক্রমণের উৎসস্থল থেকে প্রথম এক কিলোমিটারের পর ১০ কিলোমিটার এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সেখানে গতিবিধিতে রাশ টানা না হলেও, ডিম ও চিকেন খাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিযায়ী পাখিদের থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে আশঙ্কা অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের। ৩ জেলার ৪টি এলাকাকে বায়ো সিকিওরিটি জোনের মধ্যে ফেলা হয়েছে।
বাংলায় অন্যান্য রাজ্য থেকে ডিম আমদানি হয়। মাংসও আসে। তাহলে কি এরাজ্যের মানুষরা সঙ্কটে ? তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অযথা আতঙ্ক করে লাভ নেই। প্রথমত একজন মানুষের থেকে আরেকজনের মধ্যে বার়্ ফ্লু সংক্রমণ ছড়ায় না। আর মাংস বা ডিম, ভাল করে রান্না করে খেলে চিন্তা নেই। তবে যাঁরা মাংসের দোকানে কাজ করেন, কাঁচা মাংস নাড়াচাড়া করেন, তাঁদের বিপদ। সংক্রমিত এলাকা থেকে ডিম বা মুরগি যাঁরা আনছেন, যাঁরা কাটছেন, যাঁরা বিক্রি করছেন , তাঁরা কিন্তু সংক্রমিত হতে পারেন। বলেই মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।