BREAKING:
রাজ্যসভায় পেশ ওয়াকফ বিল সংক্রান্ত জেপিসি রিপোর্ট বিরাট মরুদ্যানে ভারত উদয় গাজায় আর কতজন জিম্মি আছেন? সাংসদ রকিবুল হোসেনের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাল অসম রাজ্যিক জমিয়ত উলামা মহারাষ্ট্রে রমযান মাসে সরকারি কর্মীদের ১ ঘন্টা আগে ছুটি দেওয়ার দাবি মুম্বইয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের হিজাব খুলতে বাধ্য করার অভিযোগ হিন্দি ভাষা চাপানো নিয়ে তপ্ত হচ্ছে তামিলনাড়ু সউদিতে মৃত্যু মুর্শিদাবাদের কান্দির বাসিন্দা খলিমুদ্দিন শেখের, দেড় মাস পর বাড়িতে ফিরল লাশ ইএম বাইপাসকে নির্বিঘ্নে সচল রাখতে নয়া উদ্যোগ কলকাতা পুরসভার BREAKING: শচীনকে ছাপিয়ে একদিনের ক্রিকেটে বিশ্বের দ্রুততম ১৪ হাজার রানের মালিক বিরাট বাংলাদেশে আসছেন ইলন মাস্ক!

ক্যানসারের কারণ যখন বিশেষ ধরনের ভাইরাস

রিপোর্টার:
  • শেষ আপডেট: সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস বা এইচএমপিভি নিয়ে অযথা আতঙ্কিত বা চিন্তিত না হয়ে বরং বা হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচ পি ভি নিয়ে মাথা ঘামান। জেনে রাখুন, প্রথম ভাইরাসের তুলনায় অনেক বেশি মারাত্মক হল দ্বিতীয় ভাইরাস। কারণ এই ভাইরাস সংক্রমণেই হয় সারভাইক্যাল বা জরায়ু মুখের ক্যানসার। মহিলাদের ক্যানসারের মধ্যে চার নম্বর জায়গায় আছে এই ক্যানসার । আর ক্যানসার জনিত কারণে যত মৃত্যু হয় তার মধ্যে ১১ শতাংশের মৃত্যু ঘটে এই ক্যানসারে। এই কারণেই প্রতি বছর জানুয়ারি মাস ঘোষিত সারভাইকাল ক্যান্সার এওয়ারনেস মাস হিসেবে। এই ক্যানসার সম্পর্কে সচেতনতামূলক প্রচার কেন দরকার, লিখছেন শ্যামলী চক্রবর্তী।

পৃথিবী জুড়েই বাড়ছে সারভাইক্যাল ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা। সাম্প্রতিককালের এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, আমাদের দেশে প্রতি বছর প্রায় ১.২৫ লাখ মহিলা সারভাইক্যাল ক্যানসারে আক্রান্ত হন। এর প্রধান কারণ স্বাস্থ্য সম্পর্কে অসচেতনতা। যদিও এ বিষয়ে উন্নত বা উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে খুব একটা ফারাক নেই। কাজেই এই অসুখ সম্পর্কে সচেতন থাকা সবার জন্যই খুব জরুরি। সবচেয়ে বড় কথা হল, এই অসুখ প্রতিরোধ করার টিকা আছে। সময়মতো সেই টিকা নিলে জরায়ু মুখের ক্যানসার থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।
জরায়ু মুখের ক্যানসারের জন্য দায়ী হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিভি। এই ভাইরাস শরীরে ছড়ায় শারীরিক মিলনের জন্য। অনেক সময় এই সংক্রমণ নিজে থেকেই সেরে যায় আবার অনেক সময় তা দীর্ঘদিন থাকার কারণে ক্যানসারে পরিণত হয়। অসুখের উপসর্গ সম্পর্কে ডাঃ ইন্দ্রনীল সাহা জানান, সহবাসের পরে রক্তপাত হওয়া, তাতে দুর্গন্ধ থাকা, সহবাসের সময় ব্যথা লাগা, দুটো পিরিয়ডের মাঝে কিংবা পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত ব্লিডিং, কোমর ও তলপেটে ব্যথা, কিছু অস্বাভাবিক ডিসচার্জ হওয়া। এছাড়া ওজন এবং খিদে কমে যাওয়ার সমস্যা হয়। তিনি আরো জানান, এই সমস্যা মহিলাদের মধ্যে বেশি ধরা পড়ে ৩৮ থেকে ৪২ বছর বয়সে। যদিও এর চেয়ে বেশি বয়সেও অসুখ ধরা পড়তে পারে। তবে প্রাথমিক অবস্থায় অসুখ চিহ্নিত করা গেলে উপযুক্ত চিকিৎসায় পুরোপুরি সেরে ওঠা সম্ভব। অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা বেশি থাকে যদি কোনও মহিলা অনেক কম বয়স থেকে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়, একাধিক যৌন সঙ্গী থাকে, অন্য কোনও যৌন অসুখ যেমন, সিফিলিস, গনোরিয়া কিংবা এইচ আই ভি- এইডস হয়, সর্বোপরি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। অনেক সময় ধূমপায়ীদের মধ্যেও এই সমস্যার আশংকা বেশি থাকে বলে জানা গেছে। সভচেয়ে বড় সমস্যা এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশের পরে অনেক দিন চুপচাপ থাকে, কোনও লক্ষণ প্রকাশ পায় না। ডাঃ সাহা আরো জানান, এই ক্যানসার শনাক্ত করার জন্য সারভিক্স এর মুখ ও যোনীর ভিতরের কোষের নমুনা সংগ্রহ করে প্যাপস্মিয়ার (PAP smear) নামে বিশেষ ধরনের পরীক্ষা করা হয়। এতে ক্যানসার হয়েছে কিনা জানা যায়। এতে রেজাল্ট পজিটিভ হলে তখন অন্যান্য পরীক্ষা করার দরকার হয়। চিকিৎসক মনে করলে বায়োপসিও করতে পারেন। এমনিতেও ২৫ বছরের বেশি বয়সি মহিলাদের প্রতি ৩ বছর অন্তর এবং ৫০ বছরের ঊর্ধে হলে প্রতি ৫ বছর অন্তর এই পরীক্ষা করা উচিত। প্রাথমিক অবস্থায় রোগের চিকিৎসা শুরু না হলে, অসুখ বেড়ে গেলে চিকিৎসায় আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না।
সারভাইক্যাল ক্যানসার নিয়ে চিন্তিত সরকারও। তাই অসুখ প্রতিরোধের জন্য গত বছর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেট অধিবেশনে ৯-১৪ বছর বয়সী মেয়েদের টিকা নেওয়ার ব্যাপারে জোর দেন। ওই বয়সে অর্থাৎ শারীরিক সম্পর্কের আগে টিকা নিলে ভাল ফল পাওয়া যায়। বয়স ১৫ বছরের কম হলে দুটো আর তার বেশি হলে টিকার তিনটে ডোজ নিতে হয়। প্রথম টিকা নেওয়ার মাস দুয়েকের মধ্যে দ্বিতীয় আর ছয় মাসের মধ্যে তৃতীয় ডোজ নিতে হয়। তবে টিকা নেওয়ার আগে শিশুদের ক্ষেত্রে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এবং বেশি বয়সের মহিলাদের ক্ষেত্রে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া দরকার। কাজেই এই অসুখ সম্পর্কে সচেতন থেকে প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা নেওয়াই পারে সারভাইক্যাল ক্যানসার ও তার জটিলতা থেকে দূরে রাখতে। পরিবারে এবং স্কুল স্তরে এই নিয়ে সচেতনতার পাঠ দিলে সুফল পাওয়া সম্ভব।

 

 

 

এই সংক্রান্ত আরও খবর
Copyright © 2025 Puber Kalom All rights reserved.
Developed By eTech Builder