‘ইচ্ছে হলেই পরিবর্তন করা যায় না, প্রত্যাখ্যান করছি’, অরুণাচলের নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে চিনকে কড়া জবাব ভারতের

- আপডেট : ৪ এপ্রিল ২০২৩, মঙ্গলবার
- / 13
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: চিনের নাম পরিবর্তনের প্রচেষ্টাকে কড়া ভাষায় জবাব দিল ভারত। অরুণাচল প্রদেশের ১১টি জায়গায় নাম পালটে দেয় চিন, সেই নাম খারিজ করে দিয়ে ভারত কড়া ভাষায় জানিয়ে দিল, চিন নিজের ইচ্ছে মতো অরুণাচলের নাম পালটে দিলেই সত্যিটা কোনওদিন পালটে যাবে না। মঙ্গলবার দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ভারতের কড়া প্রতিক্রিয়া, অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, এখনও আছে, আর ভবিষ্যতেও থাকবে। চিনের এই নাম পরিবর্তন প্রত্যাখ্যান করছি।
মঙ্গলবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, আমরা খবর দেখেছি। তবে চিন এই কাজ প্রথম করল না। আমরা প্রত্যাখ্যান করে দিচ্ছি। অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল আর থাকবে। নিজের খেয়াল খুশি মতো নাম দিলেই সেটা সত্যি হয়ে যায় না।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে ৬টি স্থানের নাম পরিবর্তন করে চিন।
তারপর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে চিন আরও ১৫টি স্থানের নাম পরিবর্তন করে। এরপর ২০২৩ সালের এপ্রিলে তৃতীয়বারের মতো চিন অরুণাচলপ্রদেশে একতরফাভাবে জায়গার নাম পরিবর্তন করল।
সোমবার চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, রবিবার ‘দক্ষিণ তিব্বতের’ যে ১১টি জায়গার ‘সরকারি’ নামকরণের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে নির্দিষ্ট করে কিছু তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সেই তালিকা অনুসারে দুটি সমতল এলাকা, দুটি আবাসিক এলাকা, পাঁচটি পর্বতশৃঙ্গ এবং দুটি নদীর নামকরণ করেছে চিন। ওই জায়গাগুলির নামের শ্রেণিবিভাগ এবং সেগুলির অন্তর্গত প্রশাসনিক জেলারও তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রবিবার চিনের নগর বিষয়ক মন্ত্রকের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, মন্ত্রিসভার নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে অরুণাচল প্রদেশের (চিন বিজ্ঞপ্তিতে দক্ষিণ তিব্বত বলে উল্লেখ করেছে) কয়েকটি ভৌগোলিক এলাকার নামকরণ করা হয়েছে। অর্থাৎ এবার থেকে চিনা মানচিত্রে অরুণাচলের ওই জায়গাগুলির নাম মান্দারিন হরফে লেখা থাকবে।
চিন একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছে, যেখানে অরুণাচল প্রদেশের কিছু অংশকে চিনের ভূখণ্ড বলে দাবি করে ওই এলাকাকে জাংনান বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর আগে ২০১৭ এবং ২০২১ সালেও ‘জাংনান’ চিনের বলে দাবি করেছিল সে দেশের সরকার। এ-ও দাবি করা হয়েছিল যে, ওই এলাকা চিনের বলে দাবি করার যথেষ্ট ‘ঐতিহাসিক এবং প্রশাসনিক ভিত্তি’ রয়েছে। তখনও চিনের সেই চেষ্টা ব্যর্থ করেছিল ভারত।
চিনা, তিব্বতি সহ একাধিক ভাষায় বিবৃতিটি প্রকাশ করেছে চিন সরকার। চিনের কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্রে দাবি করা হয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দারা যাতে এলাকার নাম সহজে মনে রাখতে পারেন, সেই কারণেই এই উদ্যোগ। শুধু তাই নয় চিনের তরফে বলা হয়েছিল, ওই সব এলাকা চিনের বলে দাবি করার যথেষ্ট ঐতিহাসিক এবং প্রশাসনিক ভিত্তি রয়েছে।
প্রসঙ্গত, লাদাখে ভারত-চিন সংঘাতের তিক্ত আবহেই নতুন করে চিনের এই নাম বদলের পরিকল্পনা, দুই দেশের সম্পর্কের সমীকরণে আরও জটিলতা তৈরি করবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।