ঢাকা, ১৩ জানুয়ারি : বন্দী বিনিময় চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিল্লিকে পাঠিয়েছে ঢাকা। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে কথা জানানো হয়েছে।
বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, ‘বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনাতে প্রয়োজনীয় নথিপত্র ভারত সরকারকে পাঠানো হয়েছে। রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক উভয় সিদ্ধান্তেই এ কূটনৈতিক পত্র পাঠানো হয়েছে।’ তবে এ বিষয়ে ভারত এখনো কোনো উত্তর দেয়নি বলে জানান মুখপাত্র।
এ ছাড়া, দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনার নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান রফিকুল আলম। এই বিষয়ে কত সময় লাগতে পারে? সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,’ আড়াই-তিনমাস সময় লাগা স্বাভাবিক ব্যাপার। শেখ হাসিনা ইস্যুতে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে প্রতীক্ষা করবে বাংলাদেশ। এছাড়া ভারতে অবস্থানকারী অন্য নেতাদের ফেরাতে আন্তর্জাতিক নিয়ম প্রতিপালন করা হবে কি না সেটি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার বিষয়।’
জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় রাষ্ট্রসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের দেওয়া প্রতিবেদন ভারতের ওপর শেখ হাসিনাকে ফেরাতে চাপ বাড়াতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন রফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, বন্ধুরাষ্ট্রগুলোকে এ ইস্যুতে কাজে লাগানো হবে কি না, এর সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ সরকার। রাষ্ট্রসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টকে স্বাগত জানিয়ে রফিকুল আলম বলেন, প্রতিবেদনটি যে কোনো মানুষের বিবেকে নাড়া দেবে। ভারতও সেই বিষয়টি আমলে নিয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন রফিকুল আলম । ওই প্রতিবেদনের জন্য রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশনকে বিদেশমন্ত্রকের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
অন্যদিকে, এদিনই ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা চাই ভারত সরকার তাকে বাংলাদেশের সরকারের হাতে ফেরত দিয়ে এবং তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এছাড়া তার সহযোগী যারা ছিল তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাষ্ট্রসংঘের পর্যবেক্ষণ কমিটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে হাসিনা একজন ফ্যাসিস্ট এবং তিনি এদেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করেছেন, নির্যাতন করেছেন। গণহত্যা- মানবাধিকার লঙ্ঘন- যা কিছু হয়েছে সব তার নির্দেশে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেওয়া, ইন্সটিটিউশনগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়া নিয়ে যে অভিযোগ আমরা করেছি, রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্টে সেসব সত্যি বলে প্রমাণিত হয়েছে।