কালবৈশাখীর তাণ্ডবে লন্ডভন্ড ডুয়ার্স, বিপর্যস্ত জনজীবন

- আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২২, সোমবার
- / 5
শুভজিৎ দেবনাথ, জলপাইগুড়িঃ কালবৈশাখী ঝড়ের দাপটে লন্ডভন্ড ডুয়ার্স বিপর্যস্ত জনজীবন। রবিবার বিকেল থেকে চলা ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পরে ডুয়ার্সের জনজীবন। জলপাইগুড়ির বানারহাট ও নাগরাকাটা ব্লকে ঝড় এবং শিলাবৃষ্টিতে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়। টানা ঝড় ও শিলা বৃষ্টির কারণে শতাধিক সুপারি গাছ ভেঙে পড়ে এমনকি শিলা বৃষ্টির জেরে বহু বাড়ির টিনের চাল ফুটো হয়ে যায়। বানারহাটে ইন্দো-ভুটান সড়কের ওপর গাছ উপড়ে পরে যার ফলে রাত থেকেই ওই সড়কে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। পাশাপাশি ডুয়ার্সের চা বাগান ব্যাপক ক্ষতি হয় শিলা বৃষ্টির কারণে। একদিকে চা গাছের পাতা রীতিমতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেমনি বাগানের শেড ট্রি ঝড়ের দমকা হাওয়ায় দুমরে মুচরে যায়। এছাড়াও ডুয়ার্সের গয়েরকাটা সাকোয়া ঝরা এলাকায় ধরে বহু সুপারি গাছ ভেঙে পড়ে বাড়ির চালের টিন ফুটো হয়ে যায় অনেক মানুষকেই খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হয়।
চসকালবেলা ঝড়ে বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান বানারহাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সীমা চৌধুরী। সকাল হতেই তিনি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো ঘুরে দেখেন, কথা বলেন সেই সমস্ত পরিবারগুলি সঙ্গে। ঝড়ের কারণে যে সমস্ত মানুষের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাজ করে তাদের হাতে ত্রাণের পলিথিন তুলে দেন তিনি।
এদিকে বানারহাট হাসপাতালের সামনে ইন্দো-ভুটান সড়কের উপরে গাছ ভেঙে পড়ে থাকায় সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষ থেকে রোগী ও তার আত্মীয়রা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সদ্যোজাত শিশুদের কোলে নিয়ে পরে থাকা গাছের উপর দিয়ে পারাপার করতে হয় রোগী ও তার আত্মীয়দের।
পরবর্তীতে প্রশাসনের তরফ থেকে বানারহাট এর হাসপাতালের সামনে ইন্দো-ভুটান সড়কের উপরে পড়ে থাকা গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করা হয়। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চা বাগান চাষের ক্ষেত। সেই সঙ্গে ধূপগুড়ি ব্লকের সোনাখালি জঙ্গলে প্রচুর গাছ ঝড়ে ভেঙে পরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অন্যদিকে একই পরিস্থিতি নাগরাকাটা ব্লকে। সেখানেও ঝড়-বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি। শিলাবৃষ্টিতে টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। একাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত বলে খবর। রাস্তার ওপর দিয়ে বইছে বৃষ্টির জল। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের শুরু করে প্রশাসনের আধিকারিকরা।
অন্যদিকে রবিবার সন্ধ্যার ঝড়ে অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলো গয়েরকাটার সাকোয়াঝোরা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ সাকোয়াঝোরা এলাকার সঞ্জয় রায়ের পরিবার। দমকা হাওয়া শুরু হওয়ায় ঘরের ভেতর আশ্রয় নেয় সঞ্জয় রায়ের পরিবার। সেই সময় আচমকাই ঘরের উপর ভেঙে পড়ে দুটো গাছ। ভেঙে যায় ঘরের চাল। আরেকটি গাছ ভেঙে পড়ে গোয়াল ঘরে।গাছের নিচে চাপা পড়ে বাড়ির গবাদি পশু।
কোনও ক্রমে গবাদি পশু গুলোকে সেখান থেকে বার করে নিয়ে আসা হয়। সারারাত ভাঙ্গা ঘরে আতংকের মধ্যে রাত কাটায় গোটা পরিবার। সকালে এলাকা পরিদর্শনে আসেন বানারহাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সীমা চৌধুরী। তিনি সমস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সাথে কথা বলেন।তাদের হাতে পলেথিন তুলে দেওয়া হয়। সেই পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।