‘ পড়ুয়াদের কাছে শিক্ষা বিক্রয়যোগ্য পণ্য হতে পারেনা’ জানালেন বিচারপতি বসু

- আপডেট : ৬ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার
- / 10
পারিজাত মোল্লাঃ মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে উঠে বেসরকারি স্কুল ফি সংক্রান্ত মামলা।এদিন এই মামলায় বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসু পর্যবেক্ষণ, -‘ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শিক্ষা বিক্রয়যোগ্য পণ্য হতে পারে না। ইচ্ছে মতো টাকায় শিক্ষা বিক্রি হতে পারে না’। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি পর্বে বিচারপতি জানান , -‘ বেসরকারি স্কুল গুলির ওপর রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি।
এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বেসরকারি স্কুলে ফি স্ট্রাকচার কী হবে তা রাজ্য সরাসরি ঠিক করে দিতে পারে না। কোথাও এটাও বলা নেই যে রাজ্যের কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না বেসরকারি স্কুলের ওপর’।এর আগে এই সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী দাবি করেছিলেন, -‘অনেক বেসরকারি স্কুল ফি বাড়ানোর আগে সরকারি অনুমতি নেয় না’।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসু আগের শুনানিতে জানিয়েছিলেন , -‘স্কুল মিষ্টির দোকান নয় যে ইচ্ছা মত দাম নির্ধারণ করা হবে’। বলাই বাহুল্য, এখনও বিচারপতি এই বিষয়ে কড়া অবস্থান বজায় রেখে বেসরকারি স্কুলগুলিকে ‘ধমক’ দিচ্ছেন। তিনি জানান , -‘ রাজ্যের ২০১২ সালের আইন বলছে বেসরকারি স্কুলে রাজ্যের ‘কনসেন্ট’ থাকতে হবে’।
আগামী ২১ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। কলকাতার দু’তিনটি নাম করা স্কুলের অস্বভাবিক ফি বৃদ্ধি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা। কলকাতা হাইকোর্ট আগেই জানিয়েছিল, -‘ কি নিয়মে ফি বাড়াতে পারে বেসরকারি স্কুল? তা আগামী শুনানিতে জানাতে হবে সব পক্ষকে’। আর রাজ্যের দাবি ছিল, -‘বেসরকারি স্কুলের ফির বৃদ্ধির জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হয়, কিন্তু তারা নেয় না, তাই রাজ্যও ফি বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে পারে না’।
এদিন বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ‘ছাত্রছাত্রীদের জন্য শিক্ষা কখনও পণ্য হতে পারে না। এটা বিক্রির বিষয়বস্তু নয়। যে যেমন ইচ্ছে দাম নেবে—এটা চলতে পারে না’। এখানেই থামেননি বিচারপতি বসু। তাঁর আরও পর্যবেক্ষণ, বেসরকারি স্কুলগুলির ফি কাঠামোতে কোনও সামঞ্জস্য নেই। যে যেমন পারছে টাকা নিচ্ছে। এটা হতে পারে না। কলকাতায় একাধিক স্কুলে প্রাথমিক ছাত্রছাত্রীদের জন্য মাসিক বেতন ৮ থেকে ২১ হাজার টাকা!
এ হেন পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার একটা অভিন্ন ফি কাঠামো করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু স্কুলগুলি তাতে আপত্তি জানায়। তা নিয়েই মামলা হয় হাইকোর্টে।এদিন বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসু স্পষ্টই বলেন, -‘ বেসরকারি স্কুলের ফি কাঠামোর বিষয়ে অবশ্যই রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি’। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সুনির্দিষ্ট বক্তব্য জানতে চেয়েছে আদালত। বিচারপতি বসু এদিন বলেছেন, -‘আদালত এ নিয়ে কোনও সংঘাত চায় না। বরং সুষ্ঠু সমাধান চায়’। আগামী ২১ জুন ফের এই মামলার শুনানি হবে।