পুবের কলম প্রতিবেদক: এপিক নম্বর একই, অথচ ভোটার কার্ডে নাম রয়েছে একাধিক ব্যক্তির। এটা কীভাবে সম্ভব? বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, গোপনে ভিন রাজ্যের ভোটারদের বাংলার ভোটার লিস্টে জায়গা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা বিজেপির কৌশল। দিল্লি, হরিয়ানার ভোটে এই কৌশলে ভুয়ো ভোটারদের দিয়ে বাজিমাত করেছে বিজেপি। কিন্তু, বাংলায় বিজেপিকে এটা করতে দেওয়া হবে না। যদিও বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশন সাফাই দিয়েছিল, একই এপিক নম্বরে একাধিক ব্যক্তির নাম থাকা মানেই ভুয়ো ভোটার নয়। আর শুক্রবার নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, এবার থেকে দেশের প্রত্যেক ভোটারের জন্য এপিক নম্বর আলাদা আলাদা হবে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই কাজ শুরু হবে। আর কমিশনের এই সিদ্ধান্তে মমতার ‘জয়’ দেখছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: রমযানে কলকাতায় বাজার মাতাচ্ছে আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের খেজুর
দেশে ভোটার কার্ড চালু করে নির্বাচন করানোর জন্য প্রথম দাবি এই রাজ্যে তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঁচিশ বছর পরে সেই ভোটার কার্ডে এপিক নম্বরে ‘ভুল’ ধরার কাজটিও প্রথম তিনিই করলেন। ভুয়ো ভোটার কার্ড এবং ডুপ্লিকেট এপিক ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করলেন নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
সংসদে এই ইস্যুতে প্রতিবাদ সংগঠিত করবেন এমনকী নির্বাচন কমিশনের অফিসের সামনে ধরনায় বসবেন বলেও হুঁশিয়ারি জারি করেছিলেন। একই এপিক নম্বরে ডুপ্লিকেট ভোটার কার্ড এর বিষয়টি প্রকাশ্যে এনে এর নেপথ্যে বিজেপির ভোট জেতার চক্রান্ত করার অভিযোগ আনেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এদিন কমিশন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে নেত্রীর দাবিই মান্যতা পেল বলে মনে করছে ঘাসফুল শিবির। শুক্রবার নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানাল তিন মাসের মধ্যে ডুপ্লিকেট এপিক কার্ড সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করবে কমিশন। যদিও কমিশনের এই উত্তরে সন্তুষ্ট না থেকে বুথস্তরে তৃণমূলের ভোটার তালিকা যাচাই অভিযান চালিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
আরও পড়ুন: চলতি মাসেই কলকাতা সফরে শাহ
২০০০ সালে এপিক সিরিজ এসেছিল। সেই সময় নিযুক্ত আদিকারিকদের ডুপ্লিকেট এপিক কার্ডের বিষয়টি জানা থাকলেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে নিজেদের বিজ্ঞপ্তিতেই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। তৃণমূল সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে কমিশনের গাফিলতি ফাস করার পরে প্রথমে ভুল স্বীকার এবং পরে। তিন মাসের এপিক কার্ড সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দিল কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন।
কমিশন অবশ্য এই এপিক কার্ড ডুপ্লিকেট হওয়ার সমস্ত দায় ২৫ বছর আগে আধিকারিকদের উপর চাপানোর চেষ্টা করেছে। এ কথাও জানিয়েছে এপিক কার্ডের নম্বর যা-ই হোক না কেন, ভোটার তালিকায় নাম থাকা একজন বৈধ ভোটার তার নিজের নির্দিষ্ট বুথেই ভোট দিতে পারবেন। অন্য কারোর সেইখানে ভোট দানের অধিকার নেই।
কমিশনের দাবি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে কাজ নিজস্ব নির্বাচন কমিশন দ্বারা পরিচালিত হয়। এবার ডুপ্লিকেট এপিক নম্বরধারীদের ইউনিক এপিক নম্বর তিন মাসের মধ্যে দেওয়ার কাজটির ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অবলম্বন করতে বলা হচ্ছে। সেখানেই তৃণমূলের আশংকা এই বিজ্ঞপ্তি ও প্রক্রিয়াকরণ যাতে শুধু আই-ওয়াশ না হয়ে দাঁড়ায়।
সেই কারণেই নেত্রীর নির্দেশ নির্বাচন কমিশন যাই বলুন তৃণমূলের সদস্যদের যেমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন সেই অভিযান জারি রাখে।