২১ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফয়জানের রহস্য মৃত্যুর কিনারা করতে আবাসিকদের ‘পলিগ্রাফ’ করাতে চায় সিট

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ২২ জানুয়ারী ২০২৪, সোমবার
  • / 8

মোল্লা জসিমউদ্দিন: এবার কি ফয়জান আহমেদের রহস্য মৃত্যুর কিনারা হতে চলেছে? আসামের নিহত ফয়জান আহমেদের পরিবার কবে সুবিচার পাবেন? এইসব প্রশ্নের মধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট নিযুক্ত রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের সক্রিয়তা সামনে আসছে। ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি পর্বে আইআইটি খড়গপুরের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফয়জান আহমেদের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে খুনের ইঙ্গিত মিলেছে। এবার ফয়জানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করতে পলিগ্রাফ টেস্ট করাতে চাইছে সিট বলে জানা গেছে। ওই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কয়েকজন আবাসিকের পলিগ্রাফ টেস্ট করানো হবে বলে জানা যাচ্ছে। কেউ পলিগ্রাফে রাজি না হলে সেবিষয়টিও কলকাতা হাইকোর্টে দৃষ্টি আকর্ষণ করানো হবে। যদিও কতজনের পরীক্ষা করা হবে সেবিষয়ে এখনই নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে সন্দেহভাজন কয়েকজনের পলিগ্রাফ পরিক্ষা হচ্ছে।

 

ফয়জানের অস্বাভাবিক মৃত্যু যেখানে হয়েছিল সেই ঘটনাস্থলে দ্বিতীয় কেউ উপস্থিত ছিল বলে আশঙ্কা করছে সিট। ঘটনাস্থল থেকে যে রক্ত পাওয়া গিয়েছে সেই রক্ত আদৌও ফয়জানের কিনা? তা জানার জন্য ফয়জানের বাবা মায়ের রক্তের নমুনা আগেই সংগ্রহ করা হয়েছে। তার সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া রক্তের ডিএনএ মিলিয়ে দেখা হবে। সিটের তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ‘ঘটনার দিন দরজা ভিতর থেকে লাগানো ছিল না। ঘটনার কয়েকদিন আগে ফয়জান অন্য এক আবাসিকের কাছ থেকে রান্না করা সরঞ্জাম নিয়েছিল। যার জিনিসটি সে ফয়জানের দরজায় ধাক্কাধাক্কি করলে দরজা খুলে যায়। তখন তার হাতে ওই সরঞ্জাম তুলে দেওয়া হয়। পরে সে অন্য দুই আবাসিকের হাতে সেটি তুলে দেয়’। আবার ওই অন্য দুই আবাসিকের দাবি, ‘তারা ফয়জানর দরজায় ধাক্কাধাক্কি করলেও দরজা খোলেনি’। এরফলে কে সত্যি বলছে? তা জানার জন্য পলিগ্রাফ টেস্ট করা হবে বলে সিট সুত্রে প্রকাশ। এছাড়া ফয়জানের পরিবারের তরফে বেশ
কয়েকজন আবাসিকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে ঘটনার পর দিন থেকেই। এমনকি কর্তৃপক্ষ এর কয়েক জন বিষয়টি প্রথম থেকেই ধামাচাপা দিতে অতি সক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ। এরই মধ্যে কয়েকজন আবাসিকের পলিগ্রাফ টেস্ট করানো হতে পারে। এছাড়াও অনেকের বয়ান নথিভুক্ত করেছে সিট। সেই মতো খতিয়ে দেখেই কার কার পলিগ্রাফ টেস্ট করা প্রয়োজন তার তালিকা তৈরি করা হবে বলে জানা গেছে।

 

প্রসঙ্গত, গত ২০২২ সালের ১৪ অক্টোবর আইআইটি খড়্গপুরের লালা লাজপত রায় হলের একটি ঘর থেকে আইআইটি পড়ুয়া ফয়জান আহমেদের পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। এরপরেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠানো হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তারপরেই ছেলেকে খুনের অভিযোগ করেছিলেন নিহত পড়ুয়ার পরিবার। এই মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে। তাতে রাজ্য পুলিশের সিট গঠন করে কলকাতা হাইকোর্ট। দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করা হয়। সেই ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিক্তিতে খুনের সম্ভাবনার বিষয়টি উঠে আসে। প্রথম থেকেই এই মামলার তদন্তে জেলা পুলিশের ভুমিকা নিয়ে বিস্তর প্রশ্নচিহ্ন দেখা যায় কলকাতা হাইকোর্টের শুনানি পর্বে। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে সিটের পলিগ্রাফ পরিক্ষার প্রস্তুতি ফয়জান আহমেদের রহস্য মৃত্যুর কিনারা করতে কতটা সূত্র দেবে, তার উত্তর সময়ই দেবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ফয়জানের রহস্য মৃত্যুর কিনারা করতে আবাসিকদের ‘পলিগ্রাফ’ করাতে চায় সিট

আপডেট : ২২ জানুয়ারী ২০২৪, সোমবার

মোল্লা জসিমউদ্দিন: এবার কি ফয়জান আহমেদের রহস্য মৃত্যুর কিনারা হতে চলেছে? আসামের নিহত ফয়জান আহমেদের পরিবার কবে সুবিচার পাবেন? এইসব প্রশ্নের মধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট নিযুক্ত রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের সক্রিয়তা সামনে আসছে। ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি পর্বে আইআইটি খড়গপুরের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফয়জান আহমেদের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে খুনের ইঙ্গিত মিলেছে। এবার ফয়জানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করতে পলিগ্রাফ টেস্ট করাতে চাইছে সিট বলে জানা গেছে। ওই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কয়েকজন আবাসিকের পলিগ্রাফ টেস্ট করানো হবে বলে জানা যাচ্ছে। কেউ পলিগ্রাফে রাজি না হলে সেবিষয়টিও কলকাতা হাইকোর্টে দৃষ্টি আকর্ষণ করানো হবে। যদিও কতজনের পরীক্ষা করা হবে সেবিষয়ে এখনই নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে সন্দেহভাজন কয়েকজনের পলিগ্রাফ পরিক্ষা হচ্ছে।

 

ফয়জানের অস্বাভাবিক মৃত্যু যেখানে হয়েছিল সেই ঘটনাস্থলে দ্বিতীয় কেউ উপস্থিত ছিল বলে আশঙ্কা করছে সিট। ঘটনাস্থল থেকে যে রক্ত পাওয়া গিয়েছে সেই রক্ত আদৌও ফয়জানের কিনা? তা জানার জন্য ফয়জানের বাবা মায়ের রক্তের নমুনা আগেই সংগ্রহ করা হয়েছে। তার সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া রক্তের ডিএনএ মিলিয়ে দেখা হবে। সিটের তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ‘ঘটনার দিন দরজা ভিতর থেকে লাগানো ছিল না। ঘটনার কয়েকদিন আগে ফয়জান অন্য এক আবাসিকের কাছ থেকে রান্না করা সরঞ্জাম নিয়েছিল। যার জিনিসটি সে ফয়জানের দরজায় ধাক্কাধাক্কি করলে দরজা খুলে যায়। তখন তার হাতে ওই সরঞ্জাম তুলে দেওয়া হয়। পরে সে অন্য দুই আবাসিকের হাতে সেটি তুলে দেয়’। আবার ওই অন্য দুই আবাসিকের দাবি, ‘তারা ফয়জানর দরজায় ধাক্কাধাক্কি করলেও দরজা খোলেনি’। এরফলে কে সত্যি বলছে? তা জানার জন্য পলিগ্রাফ টেস্ট করা হবে বলে সিট সুত্রে প্রকাশ। এছাড়া ফয়জানের পরিবারের তরফে বেশ
কয়েকজন আবাসিকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে ঘটনার পর দিন থেকেই। এমনকি কর্তৃপক্ষ এর কয়েক জন বিষয়টি প্রথম থেকেই ধামাচাপা দিতে অতি সক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ। এরই মধ্যে কয়েকজন আবাসিকের পলিগ্রাফ টেস্ট করানো হতে পারে। এছাড়াও অনেকের বয়ান নথিভুক্ত করেছে সিট। সেই মতো খতিয়ে দেখেই কার কার পলিগ্রাফ টেস্ট করা প্রয়োজন তার তালিকা তৈরি করা হবে বলে জানা গেছে।

 

প্রসঙ্গত, গত ২০২২ সালের ১৪ অক্টোবর আইআইটি খড়্গপুরের লালা লাজপত রায় হলের একটি ঘর থেকে আইআইটি পড়ুয়া ফয়জান আহমেদের পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। এরপরেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠানো হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তারপরেই ছেলেকে খুনের অভিযোগ করেছিলেন নিহত পড়ুয়ার পরিবার। এই মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে। তাতে রাজ্য পুলিশের সিট গঠন করে কলকাতা হাইকোর্ট। দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করা হয়। সেই ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিক্তিতে খুনের সম্ভাবনার বিষয়টি উঠে আসে। প্রথম থেকেই এই মামলার তদন্তে জেলা পুলিশের ভুমিকা নিয়ে বিস্তর প্রশ্নচিহ্ন দেখা যায় কলকাতা হাইকোর্টের শুনানি পর্বে। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে সিটের পলিগ্রাফ পরিক্ষার প্রস্তুতি ফয়জান আহমেদের রহস্য মৃত্যুর কিনারা করতে কতটা সূত্র দেবে, তার উত্তর সময়ই দেবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।