রোযা আল্লাহর পথে ব্যয় করতে অনুপ্রাণিত করে

- আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২২, রবিবার
- / 13
মাওলানা আবদুল মান্নান : ‘তোমরা যা ভালোবাস তা ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনও পুণ্য লাভ করতে পারবে না।’ (সূরা আলে ইমরান)। মানুষের মন যা কৃপণতা, লোভ-লালসা ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তির কারণে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে কৃপণতা করে। অথচ মানুষ যতক্ষণ পর্যন্ত না তার প্রিয় বস্তুকে (সম্পদ) আল্লাহর পথে ব্যয় করে ততক্ষণ পর্যন্ত সে পুণ্য অর্জন করতে সক্ষম হয় না। কৃপণতা, একটি ঘৃণ্য প্রবণতা, যা দেহ-মনকে কলুষিত করে। ‘রোযা’ মানুষকে এর থেকে পূত-পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রাখতে অনুপ্রাণিত করে। রোযার মাসে স্বভাবতই মানুষের মন আল্লাহ্-মুখী হয়ে থাকে। আল্লাহর পথে সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যয় করতে কুণ্ঠবোধ করে না। আল্লাহর পথে ব্যয় করা মুমিনের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। রোযা মানুষকে এই বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল করে তোলে। আত্মার মাঝে এ যোগ্যতা সৃষ্টি হয়, সে দ্বীনি গুণাবলীর মর্যাদাকে অনুধাবন করে এবং দ্বীনের জন্য সকল প্রকার কুরবানি ও ত্যাগ স্বীকার করতে এগিয়ে আসে। আল্লাহ্তায়ালা ঘোষণা করেছেন, ‘জাহান্নাম থেকে সে ব্যক্তিকেই দূরে রাখা হবে, যে আল্লাহ্কে সবচেয়ে বেশি ভয় করে, যে অপরকে এই জন্যই নিজের ধন-সম্পদ দান করে যেন সে পরিশুদ্ধ হতে পারে।’ (সূরা লাইল– আয়াত: ১৭-১৮)
সমাজে বিভিন্ন স্তরের মানুষ রয়েছে। ধনী, স্বচ্ছল ও গরিব। আল্লাহ্ ধনী ও সামর্থ্যবানদের নির্দেশ দিয়েছেন গরিবদের সহযোগিতায় দানের হাত সম্প্রসারিত করতে। পবিত্র কুরআন ঘোষণা করেছে : ‘হে মুমিনগণ! তোমরা যা উপার্জন করো এবং আমি যা ভূমি হতে তোমাদের জন্য উৎপাদন করে দিই তা থেকে যা উৎকৃষ্ট তা ব্যয় কর। (সূরা বাকারাহ্– আয়াত : ২৬৭)
নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে গরিব দিনমজুর, যারা দিন আনে, দিন খায়, তারা সব থেকে বেশি সংকটের মধ্যে পড়েছেন। ভুললে চলবে না যে তারাও আমাদের ভাই। তাই শুধুমাত্র যাকাতের নির্ধারিত অংশ ব্যয় করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। সম্পদ আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ বা দান, যখনই সুযোগ বা সামর্থ হবে, তখনই তা আল্লাহর পথে হৃদয় খুলে, দু’হাত প্রসারিত করে দান করা সকলের কর্তব্য।