রাশিয়ার আক্রমণ থেকে বেঁচে যাওয়া ইউক্রেনের শরণার্থীদের ওপর পতিতাবৃত্তির আতঙ্ক বাড়ছে

- আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২২, মঙ্গলবার
- / 3
পুবের কলম প্রতিবেদক : ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর পাঁচ সপ্তাহ কেটে গেছে। এই দেশে এখন বেঁচে থাকাটাও ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে। বোমা,উত্তেজনা, শিশুদের জন্য স্কুল নেই, বয়স্কদের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবা নেই। দেশের অনেক জায়গায় মানুষের থাকার জন্য নিরাপদ ছাদ পর্যন্ত নেই। এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত এক কোটি ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়েছে। আর যারা এখনও রয়েছে তাদের বেশিরভাগ মানুষ ইউক্রেনের এমন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে যা তারা নিরাপদ বলে মনে করে। কিন্তু যারা দেশ ছেড়েছে তাদের অধিকাংশই মহিলা ও শিশু, কারণ ইউক্রেন সরকার ৬০ বছরের কম বয়সী পুরুষদের যুদ্ধে যোগ দিতে বলেছে।
বেশিরভাগ উদ্বাস্তু, যারা তাদের বাড়িঘর সহ সবকিছু হারিয়েছে, তাদের পরবর্তীতে কী হবে সে সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। এই ধরনের পরিস্থিতিতে, তারা প্রায়ই অপরিচিত ব্যক্তিদের বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়। যুদ্ধের আওয়াজ তারা পেছনে ফেলে এসেছে ঠিকই কিন্তু আদতে এই মানুষগুলো ইউক্রেনের বাইরেও সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস টুইটারে সতর্ক করেছেন ইউক্রেনের যুদ্ধ অসৎ এবং মানব পাচারকারীদের জন্য একটি ট্র্যাজেডি নয়। বরং এটা তাদের কাছে সুযোগ। মহিলা ও শিশুরা তাদের লক্ষ্যবস্তু। ইউক্রেন ও তার প্রতিবেশী দেশগুলোতে চোরাচালান চক্র ক্রমশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। যুদ্ধের আড়ালে তারা তাদের ব্যবসা বাড়াচ্ছে।
লুবলিনের মানবাধিকার সংস্থা হোমো ফাবারের সমন্বয়কারী ক্যারোলিনা উইয়েরজবিনস্কা জানায় যে, শিশুরা সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, অনেক কিশোর একাই ইউক্রেনের বাইরে যাচ্ছে। পোল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশে যাওয়া এসব কিশোরের নিবন্ধন সঠিকভাবে হয়নি বা সম্পন্ন হয়নি। এ কারণে তাদের আর হদিসও মিলছে না। তাদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি। তিনি আরও বলেন, আমি এবং আমার সহকর্মীরা পোল্যান্ড ও ইউক্রেনের সীমান্তে গিয়ে পরিস্থিতি নিজে দেখেছি। আমরা একটি ট্রেন স্টেশনে পৌঁছাই যেখানে বেশিরভাগ উদ্বাস্তু ছিল।
এখানে আমরা সর্বত্র ভীত মহিলা এবং শিশু দেখতে পাই। সেখানে উপস্থিত স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের অনেককে গরম খাবার পরিবেশন করছিলেন। বাইরে থেকে সবকিছু নিখুঁত দেখাচ্ছে। কিন্তু সত্যিই কি তাই? সেখানেই মার্গেরিটি লুবমানভ নামে এক যুবতী, যার বয়স ২০ থেকে ২৫ এর মধ্যে। তিনি দুই সপ্তাহ আগে কিয়েভ থেকে সীমান্তে এসেছিলেন যাতে তিনি এখান থেকে অন্য দেশে যেতে পারেন, কিন্তু তিনি এখানে থাকার সিদ্ধান্ত নেন কারণ তিনি বাকি শরণার্থীদের ভুল হাতে দিতে চান না। মহিলা এবং যেসব শিশুরা এখানে আসছে তারা পোলিশ বা ইংরেজি জানে না। তারা জানে না এখানে কি হচ্ছে। আর এই শরনার্থী শিবিরগুলিতেই নারী পাচারকারীরা সুন্দরী মহিলাদের পতিতাপল্লীতে বিক্রির জন্য খুঁজছে। এমনকি স্বেচ্ছাসেবকের বেশে অনেকে খারাপ উদ্দেশ্যে প্রবেশ করছেন শরনার্থী শিবিরে।