পুবের কলম প্রতিবেদক: কর্মীর অভাবে দমকলের কেন্দ্রীয় কারখানা-সহ একাধিক ওয়ার্কশপ বন্ধের ফলে সমস্যায় সংশ্লিষ্ট দফতর। রাজ্য জুড়ে দমকলের গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দফতরের নিজস্ব কারখানা ছিল পাঁচটি। শিলিগুড়ি, দুর্গাপুর, হাওড়া ও ব্যারাকপুরের কারখানাগুলি আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ বার ধর্মতলার ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে দমকলের সদর দফতরে থাকা কেন্দ্রীয় কারখানাটিও কর্মীর অভাবে বন্ধ হয়ে গেল।
আগুন নেভাতে সরু রাস্তা দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে কেনা হয়েছে একাধিক মোটরবাইক, বেড়েছে দমকল কেন্দ্র। বর্তমানে রাজ্যে দমকল কেন্দ্র রয়েছে ১৭০টি। কিন্তু গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দমকলের সদর দফতরের একমাত্র কারখানাটি বন্ধ। কোনও মতে কাজ চালাতে বিভিন্ন দমকল কেন্দ্র থেকে চার জনকে এনে সেখানে রাখা হয়েছে। কারখানা দেখাশোনার জন্য এক পদস্থ আধিকারিকও রয়েছেন। তবে পরিস্থিতি এমনই যে, কোনও গাড়ি মেরামতির জন্য অনুমতি নিতে হলে তিনি কোনও বেসরকারি সংস্থা থেকে গাড়ি সারাই করে আনতে বলছেন। উল্লেখ্য, ব্রিটিশ আমলে চালু হওয়া এই কারখানায় লোকবল একদা ভাল ছিল। মেকানিক, অটো ইলেকট্রিশিয়ান, মেট (হেল্পার) ইত্যাদি পদ মিলিয়ে প্রায় ১৩০ জন কর্মী ছিলেন। ২০১০ সালের পরে কর্মীরা অবসর নিলেও নিয়োগ না হওয়ায় প্রাচীন প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের মুখে। ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে কয়েক হাজার দমকলের গাড়ি কেনা হয়।
দমকল আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আগুন নেভাতে গিয়ে গাড়ির ইঞ্জিন বিকল হওয়া নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ নিয়মিত না হওয়ায় সমস্যা বেড়েছে। এক দমকল আধিকারিকের পর্যবেক্ষণ, ‘‘সেন্ট্রাল ওয়ার্কশপ চালু থাকলে গাড়িগুলি পরীক্ষা করাতে সুবিধা হত। কিন্তু কর্মীর অভাবে দমকলের কোনও গাড়ির পরীক্ষা হয় না। ফলে গাড়ি খারাপ হলে তবেই টনক নড়ে।’’ দমকল সূত্রের খবর, বর্তমানে বিকল গাড়ি সারাতে বাইরের ঠিকাদার সংস্থা নিয়োগ করা হয়েছে। দমকলের আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এখন গাড়ির সংখ্যা বাড়লেও নিয়মিত পরীক্ষার বালাই নেই। দমকল সূত্রের খবর, বছর কয়েক আগে গঙ্গাসাগর মেলায় আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলায় কলকাতা থেকে প্রায় ১৫টি গাড়ি পাঠানো হয়েছিল।
এই প্রসঙ্গে দমকলের ডিজি সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের দাবি, এখন বেশির ভাগ দমকলের গাড়ি আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন। ইঞ্জিন মেরামতি ও রক্ষণাবেক্ষণের চুক্তি হয় সেই সংস্থার সঙ্গেই। ফলে নতুন গাড়ির জন্য কেন্দ্রীয় কারখানার প্রয়োজন পড়ে না। তিনি জানান, ‘ওয়ার্কশপটির ঐতিহ্য অবশ্যই রয়েছে। এখনও দমকলের কিছু গাড়ি রয়েছে, যেগুলি সাধারণ মানের। কর্মী নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দমকল দফতর।