নয়াদিল্লি, ১২ মার্চ: দেশজুড়ে উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখ রাঙাচ্ছে ফ্লু রোগ। রাজধানী দিল্লিতে ইতিমধ্যে ফ্লু রোগের লক্ষণ বাড়তে শুরু করেছে। মুলত, এইচ১এন১ (সোয়াইন ফ্লু) এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা বি এর কারণে আক্রান্তের সংখ্যা তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফ্লু রোগের প্রাদুর্ভাব চিন্তা বাড়িয়েছে দিল্লি সরকারের। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য নির্দেশিকা জারি করতে বৈঠকে বসতে প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রশাসন।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দিল্লি-এনসিআরে বাড়ছে ফ্লু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালগুলিতে জ্বর, কাশি, ক্লান্তি এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছেন এমন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এক চিকিৎসক বলেছেন, “এবারের ফ্লুর প্রাদুর্ভাব একেবারেই আলাদা। প্রাদুর্ভাবটি সমস্ত বয়সের লোককে প্রভাবিত করেছে। লক্ষণগুলি অনেক ক্ষেত্রে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে শরীরে টিকে থাকছে।” চিকিৎসকদের মতে, বেশিরভাগ রোগীই শ্বাসকষ্টের গুরুতর উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন (অনেকটা কোভিড-১৯ সংক্রমণের মতো)। যদিও মৌসুমী ফ্লুর ঘটনাগুলি ক্রান্তিকালীন মাসগুলিতে সাধারণ হয়ে থাকে, কিন্তু এবছর প্রাদুর্ভাব বিশেষত মারাত্মক আঁকার নিয়েছে।
আরও পড়ুন: Rabindra Sarobar-এ দোল উৎসবের অনুমতি
এদিকে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগীদের সুস্থ হতে স্বাভাবিকের থেকে বেশি সময় লাগছে। বেশকিছু রোগীর মধ্যে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদির মতো গুরুতর লক্ষণও দেখা যাচ্ছে। দিল্লি সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্ক করে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অবিলম্বে ফ্লু নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা না নিলে আগামী সপ্তাহগুলিতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
এক সমীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়েছে, জ্বর, গলা ব্যথা, কাশি, মাথাব্যথা, পেটের সমস্যা, জয়েন্টে ব্যথা এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা সোয়াইন ফ্লুয়ের (এইচ৫এন১) লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে। যা দিল্লির ৫৪ শতাংশ পরিবারে মধ্যে লক্ষণগুলি দেখা গিয়ছে। সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, এই ঘটনাগুলি জনসাধারণের মধ্যে ভয় বাড়িয়ে তুলছে। কারণ লক্ষণগুলি প্রায় কোভিড-১৯ সংক্রমণের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। শিশু এবং বৃদ্ধদের (৫০ বছরের বেশি বয়সী) মধ্যে এই সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি রয়েছে। তবে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন যে বিদ্যমান স্ট্রেন অত্যন্ত আক্রমণাত্মক, যা সমস্ত বয়সের মানুষদের প্রভাবিত করতে পারে।
ইতিমধ্যে পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেশকিছু জরুরি স্বাস্থ্য নির্দেশিকা জারি করেছে দিল্লি সরকার। নির্দেশিকাগুলি হল–
১. ফ্লুর অত্যন্ত সংক্রামক প্রকৃতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ফেস মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন।
২. ঘন ঘন হাত ধুয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
৩. প্রশাসন প্রাথমিক পর্যায়ে গুরুতর কেসগুলি সনাক্ত এবং বিচ্ছিন্ন করার জন্য হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলিতে ফ্লু পরীক্ষা কতে পারে।
৪. জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসপাতালগুলিকে ওসেলটামিভির (তামিফ্লু) এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ওষুধের মতো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের পর্যাপ্ত মজুদ নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৫. ভাইরাসের বিস্তারকে ধীর করতে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের ফ্লু টিকা নিতে বলা হচ্ছে।