আবদুল ওদুদ: নদীভাঙনে হাজার হাজার মানুষ সর্বস্বান্ত হয়েছেন, জমি হারিয়ে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন বহু মানুষ। কয়েকটি স্কুল ভেসে গেছে নদীগর্ভে। এই সংকট মোকাবিলার জন্য একাধিকবার কেন্দ্রের কাছে অর্থ বরাদ্দের আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা মেলেনি। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার নিজস্ব তহবিল থেকেই নদীভাঙন রোধের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং এর জন্য একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরির কাজ শুরু হয়েছে, বুধবার বিধানসভায় এই কথা জানান রাজ্যের সেচ ও জলপথ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া (Manas Bhunia)।মুখ্যমন্ত্রী এবছরের বাজেটে ‘নদী বন্ধন’ নামে একটি প্রকল্প তৈরি করেছেন। তার জন্য ২০০ কোটি টাকা ২০২৫-২৬ আর্থিক বজেটে বরাদ্দ করেছেন।
আরও পড়ুন: ফ্লুর প্রাদুর্ভাব: উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে রোগী, সরকারকে সতর্ক করল বিশেষজ্ঞরা
মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া (Manas Bhunia) জানান, ফারাক্কা ব্যারাজ প্রকল্প কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্র আগের ১২০ কিলোমিটার (৪০ কিমি আপস্ট্রিম ও ৮০ কিমি ডাউনস্ট্রিম) থেকে কমিয়ে মাত্র ১৯.৪ কিলোমিটারে (১২.৫ কিমি আপস্ট্রিম ও ৬.৯ কিমি ডাউনস্ট্রিম) নামিয়ে আনা হয়েছে। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ধুলিয়ান ও সমসেরগঞ্জ এই প্রকল্পের আওতার বাইরে চলে গেছে।
মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া (Manas Bhunia) বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার গোটা দেশের বন্যা ব্যবস্থাপনা প্রকল্প ও সীমান্ত এলাকার প্রকল্পের জন্য মাত্র ৪১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এই তথ্যই প্রমাণ করে যে কেন্দ্রের হাতে নদীভাঙন মোকাবিলার জন্য অর্থ বরাদ্দ করার মতো ক্ষমতা নেই, বিশেষত বাংলার ক্ষেত্রে তো নয়।’
মানস ভুঁইয়া (Manas Bhunia) আরও বলেন, রাজ্য সরকার নদীভাঙন রোধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং গত তিন অর্থবর্ষে (২০২১-২২, ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪) রাজ্য সরকার ৭টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এর মাধ্যমে মহানন্দা নদীর তীরবর্তী ২২.৪৩৫ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন রোধের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং এর জন্য রাজ্য সরকার ২৭.১৬ কোটি টাকা খরচ করেছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ পরিষেবায় ৪১১৬ কোটি টাকার বরাদ্দ, অনুমোদন West Bengal Legislative Assembly
সেচ দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদের সমসেরগঞ্জকে নদীভাঙনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এবং সেই কাজ জোরকদমে চলছে। এবছরের রাজ্য বাজেটে নদীভাঙন রোধের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
বিজেপি বিধায়কদের প্রতি আবেদন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘মানবিকতার খাতিরে আপনারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখুন এবং আপনাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের বলুন, যাতে তারা এই বিপর্যয়ের শিকার হওয়া সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দূর করতে অর্থ বরাদ্দ করেন।’