পুবের কলম প্রতিবেদক, জলপাইগুড়ি: চার বছর পর আবারও গণ্ডারের সংখ্যা জানতে শুরু হচ্ছে গণনা। গণ্ডার শুমারির কারণে আগামী ৫ ও ৬ মার্চ গরুমারায় পর্যটকদের প্রবেশে জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। গণ্ডার শুমারির জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের কাজও সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার এবং সোমবার এ বিষয়ে বনদফতরের তরফে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র গরুমারা অভয়ারণ্য নয়, জলপাইগুড়ি বনবিভাগের বেশ কিছু রেঞ্জের বনাঞ্চলেও এই শুমারি হবে। দুদিনের এই গণ্ডার শুমারির জন্য বনকর্মীদের পাশাপাশি গরুমারার ২৮টি কুনকি হাতিকেও কাজে লাগানো হবে। থাকবে বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও।
রবিবার ধূপঝোরা এলিফ্যান্ট ক্যাম্পে শুমারির জন্য বনকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবির হয়। সোমবার সেখানে শুমারিতে অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবীদের প্রশিক্ষণ হয়। বন দফতর সূত্রে খবর, শুমারির পাশাপাশি গন্ডারদের নামকরণ করা হবে। গণ্ডার শুমারিতে বন দফতর ট্র্যাপ ক্যামেরার সাহায্য নিচ্ছে।
গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও দ্বিজপ্রতিম সেন বলেন, ‘শুমারির কাজে গরুমারার জঙ্গলে বসানো প্রায় ৮০টি ট্র্যাপ ক্যামেরার সাহায্য নেওয়া হবে। হাঁটার পাশাপাশি কুনকি হাতির পিঠে চড়ে শুমারির কাজ চালানো হবে। এজন্য দু’দিন গরুমারা জঙ্গলে পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ থাকবে।’ তিনি আরও জানান, ‘প্রথমে শুমারির কাজে ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহারের কথা ভাবা হয়। কিন্তু সেটি ব্যবহার করলে গন্ডাররা আরও ছড়িয়ে যেতে পারে। সেজন্য ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে গরুমারায় শেষ গন্ডার শুমারি হয়। প্রায় চার বছর পর ৫ ও ৬ মার্চ গরুমারায় গন্ডার শুমারি হচ্ছে। এজন্য তিন-চার বর্গকিমি জুড়ে জঙ্গলের প্রতিটি জায়গাকে এক-একটি কম্পার্টমেন্টে ভাগ করা হয়েছে। তাছাড়া জঙ্গলে থাকা প্রতিটি নজরমিনারে টিম রেখে গন্ডার শুমারি চলবে। কমপক্ষে ৩০-৩৫টি কম্পার্টমেন্টে গোটা শুমারির এলাকা ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি কম্পার্টমেন্টে একটি করে টিম থাকবে। প্রতি টিমে বনকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা থাকবেন। এছাড়া জলপাইগুড়ি বন বিভাগের লাটাগুড়ির জঙ্গল, রামশাই সংলগ্ন জলঢাকা নদীর চর ও নাগরাকাটা ব্লকের বেশ কয়েকটি জঙ্গলে গন্ডার শুমারির কাজ চালানো হবে।
এর আগে গরুমারার বেশ কয়েকটি গন্ডারের নামকরণ করেছিল বন দফতর। তবে গত কয়েক বছরে আরও কয়েকটি গন্ডারের জন্ম হয়েছে। সেগুলি এখন বড় হয়েছে। এই শুমারিতে তাদের শারীরিক গঠন চিহ্নিত করে নামকরণ করা হবে বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। ২০২২ সালে গরুমারায় আয়োজিত শুমারিতে ৫৫টি গন্ডারের দেখা মিলেছিল। এবার সেই সংখ্যা ৬০-এর কাছাকাছি হবে বলে আশা বন দফতরের।